ত্রিপুরার ইন্দো–বাংলাদেশ সীমান্তে মাদক পাচারে সক্রিয় ভূমিকা বাংলাদেশী–রোহিঙ্গাদের
২০১৯ সালে ভারতের উত্তর–পূর্ব রাজ্য ত্রিপুরার ইন্দো–বাংলাদেশ সীমান্তে মাদক পাচারে বড় ভূমিকা পালন করেছে বাংলাদেশী ও রোহিঙ্গারা। বিএসএফ গোয়েন্দাদের রিপোর্ট থেকে জানা গিয়েছে।

মাদক পাচারের বড় ক্ষেত্র ত্রিপুরার বাংলাদেশ সীমান্ত
ত্রিপুরায় দুই দেশের আন্তর্জাতিক সীমান্তে পাচারকারীদের গ্রেফতার করে গোয়েন্দারা তাদের জেরার পর এই রিপোর্ট তৈরি করছে। এখানে উল্লেখ্য, উত্তর–পূর্ব ভারতের পাহাড়ে ঘেরা এই ত্রিপুরার তিনপাশেই রয়েছে বাংলাদেশ সীমান্ত, যার জন্য উপজাতি সংস্কৃতি ও ধর্মীয় গোষ্ঠীর বিচিত্র মিশ্রণ রয়েছে। তথ্য অনুযায়ী জানা গিয়েছে, ৯২ জন বাংলাদেশী, ৪১ জন রোহিঙ্গা এবং একজন নাইজেরিয়ান সহ মোট ১৩৪ জন বিদেশি ত্রিপুরার ইন্দো–বাংলাদেশ সীমান্ত থেকে গত বছর গ্রেফতার হয়েছে। তথ্য থেকে জানা গিয়েছে, '২০১৯ সালে ত্রিপুরার ইন্দো–বাংলাদেশ সীমান্তে মোট ২৬৬ জন পাচারকারীকে ধরা হয়েছে। তাদের মধ্যে ১৩২ জন ভারতীয় নাগরিক এবং বাকি ১৩৪ জন বিদেশি নাগরিক, যাদের মধ্যে আবার ৯২ জন বাংলাদেশী, ৪১ জন রোহিঙ্গা এবং একজন নাইজেরিয়ান রয়েছে।’
বিএসএফ বাঝেয়ীআপ্ত করেছে যেগুলি
সীমান্ত সুরক্ষা বাহিনী (বিএসএফ), যারা ভারত–বাংলাদেশের ৪,০৯৬ কিমি সীমান্ত পাহারা দিচ্ছে, জানিয়েছে, ২৬৬ জন পাচারকারি ৩৪.২৭ কোটির ইয়াবা ট্যাবলেট, গাঁজা, ফেনসিডাইল, মদ ও পশু পাচারের সঙ্গে জড়িত রয়েছে। তথ্যে জানা গিয়েছে, বিএসএফ ২০১৯ সালে ত্রিপুরার আন্তর্জাতিক সীমান্ত থেকে বাজেয়াপ্ত করেছে ৩,৫৯,০৫৯টি ইয়াবা ট্যাবলেট (১৭.৪৫ কোটি টাকা), ১০,৯০৭.০৮ কেজি গাঁজা (৫.৪৫ কোটি টাকা), ৩৪,৩৩৬ বোতল ফেনসিডাইল (৪৬.৮১ লক্ষ টাকা), ৫,৭৯২ বোতল মদ (৮.৭২ লক্ষ টাকা) এবং ২,৩৩৩ টি পশু (১.৭৮ কোটি টাকা)। বিএসএফের ২.৫ লক্ষ জোরদার বাহিনী নজরদারি চালাচ্ছে ভারত–পাকিস্তানের ৩,৩২৩ কিমি সীমান্তের, তারা এর পাশাপাশি ৬০টি বাইক যার মূল্য ৪৮.০৮ লক্ষ এবং ৮.৫৪ কোটি টাকার অন্যান্য জিনিস বাজেয়াপ্ত করে। মাদক পাচার চক্র ফাঁসের জন্য বিএসএফ এবং ডিরেক্টরেট অফ রেভিনিউ ইন্টালিজেন্স (ডিআরআই)–এর যৌথ উদ্যোগে ১,৬৮,৫০০টি ইয়াবা ট্যাবলেট, যার মূল্য ৮.৫২ কোটি টাকা, বাজেয়াপ্ত করে।
২০২০ সালের দ্বিতীয় দিনে বড় সাফল্য পেল বিএসএফ
নতুন বছরের দ্বিতীয় দিনেই বিএসএফের এটা বড় সাফল্য। জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাত ন’টার সময় বিএসএফ পশ্চিম ত্রিপুরার মাটিনগর গ্রামের টিনু মিহার বাড়িতে হানা দিয়ে বেশ কিছু মাদক দ্রব্য বাজেয়াপ্ত করে। বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়া মাদক মিহার বাড়িতে লুকিয়ে রাখা ছিল। সেখান থেকে দুই বস্তা ও একটি পলিথিন ব্যাগে ভর্তি ইয়াবা ট্যাবলেট বাজেয়াপ্ত করা হয়। সেগুলিতে ১,৬৮,৫০০টি ইয়াবা ট্যাবলেট ছিল, যার বাজার মূল্য ৮.৫২ কোটি টাকা। এর পাশাপাশি দু’টি মারুতি গাড়ি, যেগুলি মাদক পাচারের জন্য ব্যবহৃত হত তাও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। বাজেয়াপ্ত করা মাদক ডিআরআই–এর হাতে তুলে দেওয়া হয়। এই অভিযানের পাশাপাশি, বৃহস্পতিবার ত্রিপুরার বাংলাদেশ সীমান্ত থেকে ১,১৪৫ বোতল ফেনেসিডাইল, ৩১ কেজি গাঁজা, তিনটে গরু ও অন্য জিনিস বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। যার বাজার মূল্য ১৪.৬৯ লক্ষ। এছাড়াও এক লক্ষ বাংলাদেশি টাকাও উদ্ধার হয়েছে।