গুজরাতের মোরবিতে মর্মান্তিক সেতু দুর্ঘটনায় গাফিলতির অভিযোগ, খাজির আট জনের জামিনের আবেদন
গুজরাতের মোরবিতে মর্মান্তিক সেতু দুর্ঘটনায় গাফিলতির অভিযোগ, খাজির আট জনের জামিনের আবেদন
গুজরাতের মোরবিতে সেতু দুর্ঘটনায় অভিযুক্ত নয় জনের মধ্যে আট জনের জামিনের আবেদন খারিজ করেছে একটি আদালত। গুজরাতের প্রধান জেলা ও দায়রা বিচারক পিসি যোশী বৃহস্পতিবার দেবাং পারমারকে জামিনের আবেদন মঞ্জুর করে। ব্রিটিশ আমলে তৈরি শতাব্দী প্রাচীন মোরবি সেতু ধসে পড়ে ৩০ অক্টোবর। ঘটনায় ১৩০ জনের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়।
আট জনের জামিনের আবেদন নাকচ
পাবলিক প্রসিকিউটর বিজয় জনি জানিয়েছেন, দীপক পারেখ, দীনেশ দাভে, প্রকাশ পারমার, মনসুখভাই টপিয়া, মাদেবভাই সোলাঙ্কি, আলপেশভাই গোহিল, দিলীপভাই গোহিল এবং মুকেশভাই চৌহানের জামিনের আবেদন খারিজ হয়ে যায়। গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে ওরেভা গ্রুপের তিন জন আধিকারিক ও কর্মী রয়েছেন। এই ওরেভা গোষ্ঠীকেই শতাব্দী প্রাচীন সেতুটির রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। ওরেভা গ্রুপের সংস্কারের জন্য শতাব্দী প্রাচীন এই সেতুটি প্রায় সাত মাস বন্ধ ছিল। পর্যটকদের জন্য এই সেতুটি খুলে দেওয়ার চারদিনের মাথাতেই ধসে পড়ে। ঘটনা শিশু ও মহিলা সহ ১৩০ জনের বেশি পর্যটকের মৃত্যু হয়।
সেতু রক্ষণাবেক্ষণে অবহেলার অভিযোগ
গুজরাতের মোরবি শহরে শতাব্দী প্রাচীন এই সেতুটি ধসে যাওয়ার পর থেকে একাধিক প্রশ্ন উঠতে থাকে। মোরবি শহরের পুরসভার তরফে জানানো হয়, সেতুটিকে ফিট সার্টিফিকেট দেওয়া হয়নি। পাশাপাশি তদন্তে জানা গিয়েছে, যখন সেতুটি ধসে যায়, সেখানে ২৫০ থেকে ৩০০ জন পর্যটক ছিলেন। প্রাথমিক তদন্তে অনুমান করা হচ্ছে, ব্যাপক সংখ্যক মানুষ একসঙ্গে এই ঝুলন্ত সেতুতে ওঠার কারণে, ভার সহ্য করতে পারেনি। সেতুটি ধসে যায়। জানা গিয়েছে, সেতুটি একসঙ্গে ২০০ জনের ওজন সহ্য করতে পারে।
চাপে গুজরাতের বিজেপি সরকার
গুজরাতে সামনেই বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে বিরোধীরা গুজরাতের বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে এসেছে। ওরেভা গোষ্ঠী মূলত ঘড়ি তৈরি করে বা ঘড়ি মেরামত করার সংস্থা। বহু প্রাচীন এই সংস্থার সেতু সংস্কারের কোনও অভিজ্ঞতা নেই। প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, তারপরেও কেন এত গুরুত্বপূর্ণ সেতুটির রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব অনভিজ্ঞ এক সংস্থাকে দেওয়া হয়েছে। আপের তরফে অভিযোগ করা হয়েছে, ওরেভা গোষ্ঠীর সঙ্গে বিজেপির ভালো সম্পর্ক। তাই রাজ্যের সাধারণ মানুষের নিরাপত্তার কথা চিন্তা না করেই মোরবি সেতু মেরামতের দায়িত্ব ওরেভা গোষ্ঠীকে দেওয়া হয়েছে।
ভিড় নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ
অভিযোগ উঠেছে, ভিড় নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়েছে সংস্থাটি। দীপাবলির পর প্রথম রবিবার অর্থাৎ ৩০ অক্টোবর এই দুর্ঘটনা ঘটে। অভিযোগে জানানো হয়, গুজরাতের মোরবি শহরে প্রধান আকর্ষণ এই শতাব্দী প্রাচীন ঝুলন্ত সেতু। দীপাবলির পরের রবিবার ভিড় হওয়ার প্রবল সম্ভবনা ছিল। কিন্তু তারপরেও কেন কর্তৃপক্ষের তরফে এই ভিড় নিয়ন্ত্রণের জন্য উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হল না, সেই বিষয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। দেখা গিয়েছে, রবিবার দিন মোরবি সেতুর জন্য প্রায় ৪,০০০ টিকিট বিক্রি হয়েছিল।
পঞ্চায়েত ভোটের আগে বড় ফান্ড রাজ্যের হাতে, ৮ মাস পর প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার টাকা পেল সরকার