দেশের অভিভাবক হওয়ার দৌড়ে দুই চিরকুমার, পিছনে কুমারীরাও!
দু'জনেই রয়েছেন প্রধানমন্ত্রী পদের দৌড়ে।
এ তো গেল রাজনীতিক জীবনের কথা। ব্যক্তিগত ক্ষেত্রেও হুবহু একটা মিল রয়েছে। সেটা কী?
দুই নায়কই অবিবাহিত। দু'জনকে নিয়ে অনেক গু্ঞ্জন শোনা গেলেও কারও নেই চিরাচরিত পারিবারিক জীবন!
২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচন বিভিন্ন দিক থেকেই অভিনব ভোটযুদ্ধে পর্যবসিত হয়েছে। যেমন এবারের ভোটে অবিবাহিত বা অবিবাহিতাদের জয়জয়কার। নরেন্দ্র মোদী বা রাহুল গান্ধী যেমন রয়েছেন, তেমনই জাতীয় রাজনীতিতে প্রভাব বিস্তার করতে চাওয়া মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, জয়ললিতা কিংবা মায়াবতীও রয়েছেন এই তালিকায়।
নরেন্দ্র মোদী আদৌ অবিবাহিত কি না, এ নিয়ে কানাঘুষো রয়েছে অবশ্য। শোনা যায়, তাঁর স্ত্রীয়ের নাম যশোদাবেন। এখন অবসরপ্রাপ্ত স্কুলশিক্ষিকা। নরেন্দ্র মোদী তাঁকে লুকিয়ে বিয়ে করেছিলেন। কিন্তু নরেন্দ্র মোদী নিজে বা তাঁর আত্মীয়রা এই সত্যতা স্বীকার করেন না। তাঁদের দাবি, বাল্য অবস্থায় নরেন্দ্র মোদীর বিয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। পাত্রী ছিলেন যশোদাবেন-ই। কিন্তু শেষ মুহূর্তে বিয়ের পিঁড়ি থেকে পালান নরেন্দ্র মোদী। ছোটোবেলায় আরএসএসের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তাই সন্ন্যাসীসুলভ হাবভাব ছিল তাঁর। ফলে যে বিয়ে হয়নি, তা নিয়ে কিছু বলতে বা শুনতে রাজি নন বিজেপি-র প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী। ফলত এই দাবি মোতাবেক, নরেন্দ্র মোদী চিরকুমার।
অন্যদিকে, নরেন্দ্র মোদীর প্রতিদ্বন্দ্বী রাহুল গান্ধীকে দেখুন। অবিবাহিত। শোনা যায়, তাঁর এক বিদেশি প্রেমিকা ছিল। নাম হল ভেরোনিকা। কিন্ত্ ব্যস! ওই পর্যন্তই। এর বেশি কেউ কিছু জানে না। বিয়ে নিয়ে কংগ্রেসের যুবরাজ কোনওদিনই লালায়িত নন। কিছুদিন আগে বলেছেন, মনের মতো মেয়ে পাওয়া গেলে তবেই বিয়ে করবেন। বোন প্রিয়াঙ্কা কম চেষ্টা করেননি। কিন্তু দাদাকে বিয়েতে রাজি করাতে পারেননি।
"পী কর বেহোশ সভী, হম নেহি পী কে হি দীওয়ানে হ্যাঁয়", বলেছিলেন অটলবিহারী বাজপেয়ী
এ তো গেল জাতীয় রাজনীতির দুই মহারথীর কথা। আঞ্চলিক ক্ষেত্রে দেখুন। তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিমো তথা পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও অবিবাহিতা। রাজনীতিতে সময় দিতে গিয়ে আর বিয়ের কথা ভাবতে পারেননি তিনি। অনুরূপভাবে প্রধানমন্ত্রিত্বের স্বপ্ন দেখা এআইএডিএমকে নেত্রী জয়ললিতাও অবিবাহিতা। নরেন্দ্র মোদী বা রাহুল গান্ধীর মতো তাঁরও ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে কানাঘুষো শোনা যায়। ব্যস! ওটুকুই।
এই দুই ভদ্রমহিলাকে বাদ দিলে আরও একজন রয়েছেন, যিনি অবিবাহিতা। তিনি হলেন মায়াবতী। বহুজন সমাজ পার্টির কর্ণধার এবং উত্তরপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। জোট রাজনীতির ঘোলা আবর্তে তালেগোলে প্রধানমন্ত্রী হয়ে যাওয়ার স্বপ্ন দেখছেন এখন।
বোঝাই যাচ্ছে, নরেন্দ্র মোদী প্রধানমন্ত্রী হোন বা রাহুল গান্ধী, ভারতের ক্ষমতা দখল করবেন একজন ব্যাচেলরই!
তবে প্রথম কোনও ব্যাচেলর দেশের ক্ষমতায় বসবেন, এমন নয়। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ীও ছিলেন ব্যাচেলর। ১৯৯৮ থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত দুই দফায় তিনি ক্ষমতায় ছিলেন। আর পাঁচজন ব্যাচেলরকে নিয়ে যা রটে, তা রটেছিল অটলবিহারী বাজপেয়ীকে নিয়েও। তিনি অবৈধ নারীসঙ্গ পছন্দ করেন, এমন প্রসঙ্গ তুলেছিলেন এক রসিক সাংবাদিক। ততোধিক রসিক বাজপেয়ী এতটুকুও না রেগে উত্তর দিয়েছিলেন, "পী কর বেহোশ সভী, হম নেহি পী কে হি দীওয়ানে হ্যাঁয়" (সবাই নারীসুধা পান করে বেহুঁশ, আমি পান না করেও প্রেমে আসক্ত)।
অটলবিহারী বাজপেয়ীর সেই রসিক মন্তব্য প্রশংসিত হয়েছিল সব মহলে।