অযোধ্যায় রাম মন্দিরের শিলান্যাস! যে দশ নেতা না থাকলে আজও ‘স্বপ্নপূরণ’ হত না
অযোধ্যায় রাম মন্দিরের শিলান্যাস! যে দশ নেতা না থাকলে আজও ‘স্বপ্নপূরণ’ হত না
রাম মন্দিরের ভূমিপুজো উপলক্ষে বুধবার সকাল সাড়ে এগারোটা নাগাদ অযোধ্যায় পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এদিনই ৪০ কেজি রূপোর ইট রাম মন্দিরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন তিনি। এদিকে গত বছরের নভেম্বরেই সুপ্রিম কোর্টের রায়ে দীর্ঘ প্রায় আড়াই দশকের বিতর্কিত অযোধ্যা মামলার নিষ্পত্তি হয়। বাবরি মসজিদ নয়, অযোধ্যার বিতর্কিত স্থানে মন্দির তৈরির পক্ষেই রায় দেন তৎকালীন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ। যার জেরে পাকাপাকি ভাবে সিলমোহর পড়ে ১৯৮০-র দশকে আরএসএস-বিজেপির অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক এজেন্ডায়।
কেমন ছিল রাম জন্মভূমি আন্দোলনের পুরোধা লাল-কৃষ্ণ আডবাণীর ভূমিকা ?
আশির দশকের শেষ ও নব্বইয়ের দশকের গোড়া থেকেই রাম জন্মভূমি আন্দোলনকে একটি শক্তিশালী রূপ দেওয়ার চেষ্টা করে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ (আরএসএস), বিশ্ব হিন্দু পরিষদ, বিজেপি, বজরঙ্গ দল এবং এদের সাথে যুক্ত একাধিক শাশা সংগঠন। এদিকে এই গোটা আন্দোলনের কথা বলতে গেলেই প্রথমেই যার নাম আসে তিনি হলেন লালকৃষ্ণ আডবাণী। রামজন্ম ভূমি আন্দোলেন সময় গোটা দেশে হিন্দুত্ববাদী জাগরণের পোস্টার বয় হয়ে ওঠেন তিনি। ১৯৯০ সালে গুজরাটের সোমনাথ মন্দির থেকে অযোধ্যার রাম জন্মভূমি স্থল পর্যন্ত দেশব্যাপী একটি রোডশো করতে দেখা যায় তাকে। এদিকে বাবরি মসজিদ ধ্বংস মামলায় এখনও শীর্ষ তালিকায় নাম রয়েছে আডবাণীর।
বিজেপির শ্রেষ্ঠ কৌশলবিদের মধ্যে বিশেষ খ্যাতি ছিল প্রমোদ মহাজনের
এর পরেই যাদের নাম করতে হয় তাদের মধ্যে অবশ্যই প্রমোদ মহাজন অন্যতম। বিজেপির প্রথমসারির কূটনীতিকদের মধ্যে অন্যতম হলেন এই প্রমোদ মহাজন। বাজপেয়ী-আডবাণীর আমলে বিজেপির শ্রেষ্ঠ রাজনৈতিক কৌশলবিদ বলা হত তাকে। তাঁর পরামর্শেই আডবাণী সোমনাথ থেকে অযোধ্যাতে রথযাত্রার আয়োজন করেন বলে জানা যায়। তারপরেই আসে অশোক সিংহলের নাম। দেশের প্রথমসারির বিশ্ব হিন্দু পরিষদের নেতা হিসাবে খ্যাতি ছিল তাঁর। রাম জন্মভূমি আন্দোলনে জনসমর্থন গড়ে তোলার ক্ষেত্রে প্রচারের জন্য নিজের সম্পত্তি উত্সর্গ করেছিলেন তিনি।
আদবাণীর অন্যতম দোসর মুরলি মনোহর যোশী, উমা ভারতী
এরপরেই যে মানুষটার নাম সর্বাগ্রে করতে হয় তিনি হলেন মুরলি মনোহর যোশী। ১৯৮০-৯০ এর দশকে যোশীকে বিজেপির ‘প্রফেসর' বলে সম্মোধন করা হত। বাবরি মসজিদধ্বংসের সময় আদবাণীর অন্যতম কাণ্ডারী ছিলেন তিনিই। এই মামলায় অভিযুক্তদের তালিকায় তার নামও প্রথমসারিতে রয়েছে। এরপরেই আসে উমা ভারতীর নাম। যিনি মোদী সরকারের প্রথম দফায় মন্ত্রীত্বও পেয়েছিলেন। বাবরি মসজিদ ধ্বংসের সময় তাকেও সক্রিয় ভূমিকা নিতে দেখা যায়। মসজিদ ধ্বংসর পর যোশীর সঙ্গে তার কোলাকুলির উছ্বসিত ছবি আজও অনেক জায়গাতেই পাওয়া যায়।
তালিকায় রয়েছেন আরও দুই প্রথমসারির হিন্দুত্ববাদী নেতা
রাম মন্দির আন্দোলনের ক্ষেত্র বড় ভূমিকা নিতে দেখা যায় সাধ্ধী রীতংবার ও কল্যান সিংহকেও। সেই সময়ে প্রথমসারির হিন্দুত্ববাদী নেতারদের তালিকায় প্রথমসারিতেই এই দুজনের নাম আসে। বাবরি মসজিদ ধ্বংসের সময় উমা বারতীর সঙ্গে যোগ্য সঙ্গত দিতে দেখা যায় তাকে। রাম মন্দিরের পক্ষে তার বক্তৃতার অডিও ক্যাসেটগুলিও সেই সময় ব্যাপকভাবে বিক্রি হয়েছিল। একইসাথে ওই আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা নিতে দেখা যায় তত্কালীন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী কল্যাণ সিংহকেও।
সক্রিয় ভূমিকা নেন বিনয় কাটিয়ার, প্রবীন তোগাডিয়া, বিষ্ণু হরি ডালমিয়ারাও
এছাড়াও এই আন্দোলনকালে গোটা দেশে হিন্দুবাদী আলোড়ন তুলতে সক্রিয় ভূমিকা নিতে দেখা যায় বিনয় কাটিয়ার, প্রবীন তোগাডিয়া, বিষ্ণু হরি ডালমিয়াকেও। বিনয় কাটিয়ার ছিলেন বজরং দলের নেতা। রাম মন্দির আন্দোলনের হাত ধরেই তার সংগঠন সেই সময় নতুন করে অক্সিজেন পায়। এি সময়েই হিন্দুবাদী নেতা হিসাবে জনমানসের নজর কাড়তে দেখা যায় প্রবীন তোগাডিয়াকেও বিজেপিতে আডবাণীর প্রভাব হ্রাস পাওয়া শুরু কপতে পরবর্তীতে তিনি সংঘ পরিবারের সঙ্গে ওঠাবসা শুরু করেন। অন্যদিকে বিষ্ণু হরি ডালমিয়া ছিলেন মূলত একজন শিল্পপতি। কিন্তু হিন্দুত্ববাদী রাজনীতির প্রতি তার গভীর আগ্রহ লক্ষ্য করা যায়। ভিএইচপিতেও বিভিন্ন পদে দায়িত্ব সামলেছেন তিনি।
ভূমিপুজোয় ভক্তি প্রদর্শনের প্রতিযোগিতা বিরোধীদের! জয় শ্রী রাম টুইট কেজরিওয়ালেরও