লাদাখ ইস্যুতে দিল্লি-বেজিং বৈঠক, সীমান্তে শান্তি ফেরাতে কোন সিদ্ধান্তে একমত হল দুই দেশ
বিগত পাঁচ মাসেরও বেশি সময় ধরে চলতে থাকা অস্থির পরিস্থিতি থেকে লাদাখকে রেহাই দিতে ভারত-চিন উভয় পক্ষই বারংবার বিভিন্ন পর্যায়ে বৈঠকে বসেছে। তবে সেই বৈঠক দিল্লি-বেজিংয়ের মধ্যে হোক বা চুশুলে, সুরাহা মেলেনি এখনও। এরই মাঝে শান্তির লক্ষ্যে দুই দেশের বিদেশমন্ত্রী দেখা করেছিলেন মস্কোতে। সেই বৈঠকের পর শান্তি ফেরার ইঙ্গিত মিললেও আদতে গ্রাউন্ড জিরোতে কিন্তু কোনও বদল দেখা যায়নি।
বুধবার বৈঠকে বসে বেজিং-দিল্লি
এই আবহে সীমান্তে শান্তি ফেরাতে বুধবার ফের একবার বৈঠকে বসলেন দুই দেশের উচ্চপদস্থ কূটনীতিবিদরা। এদিন ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমেই অনুষিঠত হয় এই বৈঠক। ১৯তম ওয়ার্কিং মেকানিজম ফর কনসাল্টেশন অ্যান্ড কো-অর্ডিনেশনের আওতায় বর্তমান সীমান্ত সমস্যা মেটানোর পথে এগোনোর রূপরেখা স্থির করার চেষ্টা করে দুই দেশ।
মস্কোতে জয়শঙ্কর-ওয়াং বৈঠকে প্রসঙ্গ উঠে আসে
এর আগে গত ১০ই সেপ্টেম্বর রাশিয়া সাংহাই কো-অপারেশন সামিটেও ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর ও চিনের বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ই-র মধ্যে লাদাখ সমস্যা সমাধানের বিষয়ে জোরদার আলোচনা হয় বলে জানা যায়। আর এদিনের বৈঠকে সেই পাঁচ দফা প্রস্তাবের কথা উঠে আসে বলে সূত্রের খবর। যার মধ্যে অন্যতম ইস্যুটি ছিল সীমান্ত থেকে উভয় পক্ষের সেনা প্রত্যাহারের মাধ্যমে শান্তি ফিরিয়ে আনা।
চুশুলের সেনা পর্যায়ের বৈঠক নিয়ে পর্যালোচনা
কয়েকদিন আগে চুশুলের সেনা পর্যায়ের বৈঠকে কোনও নির্দিষ্ট সুরাহা না মিললেও আগামীর শান্তির লক্ষ্যে তা ছিল বড় পদক্ষেপ। সেই পথে হেঁটেই এদিন গ্রাউন্ড জিরোতে উত্তেজনা কমানোর লক্ষ্যে ঐক্যমতে পৌঁছেছেন দুই দেশের কূটনীতিবিদরা। এই ক্ষেত্রে আগের অনডড মনোভাব থেকে সরে এসে খানিক সুর নরম করতে দেখা গেছে বেজিংকেও।
সেনা সরানোর বিষয়ে আলোচনা
লাদাখের উত্তপ্ত পরিস্থিতি ঠান্ডা করতে দীর্ঘদিন ধরেই লাদাখ থেকে সেনা সরানোর জন্য চিনকে চাপ দিয়ে আসছে ভারত। যদিও চিন পাল্টা চাপ সৃষ্টি করে ভারতকে প্রথম পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য বলে। যদিও চিনের এহেন ফাঁদে পা দেয়নি ভারত। তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে দুই দেশই মেনে নিয়েছে যে শান্তি ফিরিয়ে আনতে হলে সীমান্তে স্থিতিশীলতা বজায় রাখার বিকল্প নেই।
একমত হয়েছে দিল্লি-বেজিং
বৈঠকের পরেই এই একটি বিবৃতি প্রকাশ করতে দেখা যায় চিনা বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র ওয়াং ওয়েনবিনকে। একইসাথে সীমান্ত সমস্যা সমাধানের পাশাপাশি আগামীতে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করে বিশ্বের উন্নয়নের অংশীদার হওয়ার ক্ষেত্রেও দুই দেশের কূটনীতিকরা একমত হয়েছেন বলে জানান ওয়াং। পাশাপাশি দুই দেশের সেনাবাহিনী নিজেদের মধ্যে কথাবার্তা চালিয়ে যাবে বলেও একমত হয়েছে দিল্লি-বেজিং।
শান্তি পুনরুদ্ধারের চেষ্টা
শান্তির বার্তা দিতে চিন এদিন বৈঠকের বিষয়ে বলে, মস্কোতে অনুষ্ঠিত দুই দেশের বিদেশমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে যেই পাঁচ দফা সমাধান সূত্র নিয়ে আলোচনা হয়েছিল, সেই পথেই দিল্লি এবং বেজিংয়ের কূটনীতিবিদরা আলোচনা চালাচ্ছেন বর্তমানে। উভয় দেশই ভারত ও চিনের সীমান্ত নিয়ে হওয়া চুক্তি অনুসরণ করবে এবং শান্তি পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করবে।