মমতা অপরাধী! করেছেন শান্তি বিঘ্নিত, এফআইআর-এ আর কী অভিযোগ অসম পুলিসের
এনআরসি নিয়ে অসম সরকার এবং বিজেপি-কে তুলোধনা করেছেন এরাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এনআরসি নিয়ে অসম সরকার এবং বিজেপি-কে তুলোধনা করেছেন এরাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রীতিমতো রণংদেহী মূর্তি ধারণ করেছেন তিনি। হুঙ্কার দিয়েছেন বিজেপি-কে এনআরসি বিতর্কে কড়া টক্কর দেওয়ার।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই হুঙ্কার অবশ্যভালোভাবে নেয়নি বিজেপি যুব মোর্চা। ইতিমধ্যে তারা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেছিল। আর এবার পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ৩টি এফআইআর দায়ের করল অসম পুলিশ। ১২০বি, ১৫৩এ, ২৯৪ ও ৫০৬ নম্বর ধারায় পশ্চিবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। তিনটি পৃথক থানায় এই এফআইআর দায়ের করা হয়েছে।
প্রথম এফআইআরটি দায়ের হয়েছে গুয়াহাটির নর্থ লাখিমপুর থানায়। এখানে মূলত চারটি ধারায় এফআইআর হয়েছে। ১২০বি ধারায় মানে অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র, ১৫৩এ মানে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে উস্কানিমূলক মন্তব্য করে শত্রুতা বৃদ্ধি করা, ২৯৪এ অর্থাৎ উস্কানিমূলক মন্তব্য ছাপিয়ে প্রচার করা এবং ৫০৬ অর্থাৎ অপরাধমূলক হিংসায় মদত দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে।
অসম পুলিশ সূত্রে খবর গুয়াহাটির পানবাজার থানায় একটি ভিডিও ক্লিপ-এর সঙ্গে লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়েছিল। সেই ভিডিও ক্লিপটি ছিল এনআরসি নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্য। ভিডিওটি দেখে পরে এফআইআর দায়েরের সিদ্ধান্ত নেয় অসম পুলিশ। এছাড়াও বৃহস্পতিবার সকালে গুয়াহাটির বশিষ্ঠনগর থানায় আরও একটি অভিযোগ জমা পড়ে। সেখানেও চারটি ধারায় এফআইআর দায়ের করা হয়। আইনজীবীদের মতে, যে সব ধারায় এফআইআর দায়ের হয়েছে তাতে সর্বোচ্চ ২ বছরের সাজা হতে পারে। তবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একজন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি সাংবিধানিক পদাধিকারি। সেক্ষেত্রে তাঁদের বিরুদ্ধে শুধু অভিযোগ দায়ের হলেই হবে না পুলিশকে তদন্ত এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য অনুমতিও নিতে হবে। আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে যে সব অভিযোগ দায়ের হয়েছে তা সবই জামিনযোগ্য।
এনআরসি-র চূড়ান্ত খসড়া তালিকা প্রকাশ হওয়ার পরই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তোপ দেগেছেন। বিজেপি ও অসম সরকারের বিরুদ্ধে কার্যত বিদ্রোহ ঘোষণা করেছেন। এমনকী প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও বিজেপি-র সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ-কেও পর্যন্ত ছাড়েননি। খোদ সংসদ চত্বরে গিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের সমালোচনা করে এসেছেন। তার নির্দেশে বৃহস্পতিবার শিলচরেও যায় ৮ সদস্যের তৃণমূল দল। কিন্তু, শিলচর বিমানবন্দর থেকে তাঁদের বের হতে দেওয়া হয়নি। পুলিশ সেখানেই তৃণমূল সাংসদদের আটকে রাখে। বিমানবন্দরের ভিতরে অসম পুলিশের বিরুদ্ধে মারধর ও নিগ্রহের অভিযোগ আনেন প্রতিনিধি দলের সদস্য তৃণমূল সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদার। পরে অসম পুলিশও পাল্টা অভিযোগ করে যে তৃণমূল বিধায়ক মহুয়া মৈত্র-সহ কয়েকজন তৃণমূল সদস্যের আক্রমণে তাঁদের কয়েকজন কর্মী আহত হয়েছেন। শিলচরে যখন এই ঘটনা ঘটছে। ঠিক তখন গুয়াহাটি তৃণমূলনেত্রী ও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে একের পর এক এফআইআর দায়ের হয়।