
অসমের বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ, মৃতের সংখ্যা ১০০ ছাড়িয়ে গেল
অসমের বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়ে গিয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় চার শিশু সহ আরও ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। এই মৃত্যুর সঙ্গে এ বছরের বন্যা ও ভূমিধসে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ১০০।

বাড়ছে বিপদ
হোজাই জেলা থেকে চারজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। কামরুপে ২ জন এবং বারপেটা ও নলবাড়িতে তিনজন মারা গিয়েছে। ৩২ টি জেলার ৪৯৪১ টি গ্রামে ৫৪.৭ লক্ষেরও বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্থ জেলাগুলিতে জেলা প্রশাসনের দ্বারা মোট ৮৪৫টি ত্রাণ শিবির এবং ১০২৫টি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে যেখানে ২.৭১ লক্ষেরও বেশি মানুষ আশ্রয় নিচ্ছেন।

বন্যা পরিস্থিতির অবনতি
বুধবার চিরাং জেলায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় দমকল ও জরুরি পরিষেবার কর্মীরা কাজ শুরু করে। বাজালি, বাকসা, বারপেটা, বিশ্বনাথ, বোঙ্গাইগাঁও, কাছাড়, চিরাং, দররাং, ধেমাজি, ধুবরি, ডিব্রুগড়, ডিমা-হাসাও, গোয়ালপাড়া, গোলাঘাট, হাইলাকান্দি। , হোজাই, কামরুপ, কামরুপ মেট্রোপলিটন, কার্বি আংলং পশ্চিম, করিমগঞ্জ, কোকরাঝাড়, লখিমপুর, মাজুলি, মরিগাঁও, নগাঁও, নলবাড়ি, শিবসাগর, সোনিতপুর, দক্ষিণ সালমারা, তামুলপুর, তিনসুকিয়া এবং উদালগুড়ি জেলাগুলি বন্যার জলের নিচে তলিয়ে যাচ্ছে।

জলের স্তর বিপদ চিহ্নের উপরে
চলতি বছরের বন্যায় ৯৯,০২৬ হেক্টরের বেশি ফসলি জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কপিলি, ডিসাং ও ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বিভিন্ন স্থানে বিপদসীমার ওপর দিয়ে বইছে। সেনাবাহিনীর পাশাপাশি, জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী (এনডিআরএফ), রাজ্য বিপর্যয় প্রতিক্রিয়া বাহিনী (এসডিআরএফ) এবং আসাম পুলিশের ফায়ার অ্যান্ড ইমার্জেন্সি সার্ভিস ত্রাণ ও উদ্ধার অভিযানে নিযুক্ত রয়েছে।
সেনাবাহিনী বুধবার দারাং, বারপেটা ও কামরুপ জেলায় ত্রাণ ও উদ্ধার অভিযান অব্যাহত রেখেছে। প্রত্যন্ত বন্যা দুর্গত এলাকায় ত্রাণ ও ওষুধ সরবরাহের জন্য বন্যা দুর্গতদের কাছে পৌঁছানোর জন্য সেনাবাহিনীর সাতটি কম্পোজিট কলাম দিনরাত কাজ করে যাচ্ছে।

মুখ্যমন্ত্রী নগাঁও পরিদর্শন করেছেন
পরিস্থিতি পর্যালোচনা করতে মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা ট্রেনে করে নগাঁও যান। তিনি একটি নৌকায় বিভিন্ন বন্যা কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেন এবং কামপুর কলেজ ও রাহা উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নেওয়া মানুষের সঙ্গে কথা বলেন।
চাপারমুখ রেলস্টেশনে আশ্রয় নেওয়া বন্যাকবলিত মানুষের সঙ্গেও কথা বলেন তিনি। তিনি মরিগাঁও জেলার নেল্লিতে জাতীয় সড়কের পাশে অস্থায়ী ত্রাণ শিবিরে বন্যা-দুর্গত পরিবারের সাথে দেখা করেন এবং তাদের সব ধরনের সাহায্যের আশ্বাস দেন। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে বৃহস্পতিবার কাছাড়ের শিলচরে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর।
কেন্দ্রীয় নৌপরিবহন মন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল নগাঁও জেলার কপিলি ব্লকের ফুলাগুড়ি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে একটি ত্রাণ শিবির পরিদর্শন করেছেন এবং ক্ষতিগ্রস্থদের সাথে কথা বলেছেন। তিনি বলেছেন যে, একটি কেন্দ্রীয় দল শীঘ্রই রাজ্যে যাবে, ক্ষতির মূল্যায়ন করবে, একটি লিস্ট তৈরি করবে এবং জমা দেবে। পরে তা সহায়তার জন্য সরকারের কাছে জমা দেবে। কাজিরাঙ্গা জাতীয় উদ্যানে বন্যার জলে মোট ২৩৩টি শিবিরের অন্তত ২৬টি প্লাবিত হয়েছে এবং ১১টি প্রাণী ডুবে মারা গিয়েছে বলে জানা গিয়েছে।