অসমে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি, গুয়াহাটিতে ভূমিধসে দুই শিশুর মৃত্যু
অসমে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি, গুয়াহাটিতে ভূমিধসে দুই শিশুর মৃত্যু
অসমে বন্যা পরিস্থিতির ক্রমেই অবনতি হচ্ছে। পরিস্থিতি ক্রমেই খারাপ হচ্ছে। গত কয়েকদিন ধরে প্রবল বৃষ্টিপাতের জেরে অসমের একাধিক জায়গা নতুন করে প্লাবিত হতে শুরু করেছে। অসমের ছয় জেলা প্রশাসন সমস্ত স্কুল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। গুয়াহাটিতে হড়পা বান ও ভূমিধসে দৈনন্দিন জীবনন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। একাধিক রাস্তা জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। মৌসম ভবন পূর্বাভাসে জানিয়েছে, অসমের বেশ কয়েকটি জেলাতে ১৭ জুন পর্যন্ত ভারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। তার জেরে রাজ্যের বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
প্রবল বৃষ্টিতে পশ্চিম অসমের গোয়ালপাড়া শহরে বাড়ি ধসে দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে। টানা দুদিন ধরে প্রবল বৃষ্টিপাতের জেরে গুয়াহাটির বিভিন্ন জায়গা থেকে ভূমিধসের খবর পাওয়া যাচ্ছে। পাশাপাশি একাধিক রাস্তা জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। ভূমিধসের কারণে গীতানগর, সোনাপুর, কালাপাহাড়, নিজারাপার এলাকার একাধিক রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
জাতীয় ও রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর কর্মীরা ইতিমধ্যে উদ্ধারকাজ শুরু করেছে। বন্যাকবলিত এলাকা থেকে জলবন্দি মানুষকে উদ্ধার করতে নৌকার সাহায্য নিতে হচ্ছে। জলবন্দি মানুষের কাছে ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছে দেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার ভূমিধসের জেরে গুয়াহাটির বোরাগাঁও এলাকায় একটি বাড়ি ভেঙে পড়ে। সেই ধ্বংসস্তূপ থেকে চার শ্রমিকের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
অন্যদিকে, বুধবার থেকেই কামরুপ মেট্রো জেলায় সমস্ত স্কুল প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। ভারি বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাসের পরেই জেলা প্রশাসন আগাম সতর্কতা হিসেবে স্কুল প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। কিন্তু বৃহস্পতিবারও গুয়াহাটি শহরের অবস্থার কোনও উন্নতি হয়নি। বরং প্রবল বৃষ্টিপাত, হড়পা বান, ভূমিধসের কারণে পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে।
সেই কারণে কামরূপ জেলা প্রশাসন বৃহস্পতিবারও স্কুল বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পাশাপাশি ডিমা হাসাও, বাজালি, নলবাড়ি, বোঙ্গাইগাঁও ও তামুলপুর জেলা প্রশাসনও বৃহস্পতিবারও স্কুল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। স্কুল বন্ধ রাখা হলেও নির্ধারিত পরীক্ষা নেওয়ার অনুমতি দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
লোকসভার আগে ২১ শে জুলাই সমাবেশ আরও বড়? জরুরি বৈঠক ডাকলেন অভিষেক
প্রবল বৃষ্টিতে অসমের দিমা হাসাও জেলা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। ভূমিধসের কারণে ৬ নম্বর জাতীয় সড়ক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এরজেরে দক্ষিণ অসমের সঙ্গে মেঘালয়ের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। বুধবার রাজ্যে বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর থেকে জানানো হয়েছে, গত কয়েকদিনের প্রবল বৃষ্টিতে অসমের ১৮টি জেলার ৩৫ হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন।
ভারি বর্ষণের পূর্বাভাস থাকায় রাজ্যের বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হবে বলে অসমের বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর আশঙ্কা প্রকাশ করে। চলতি বছর অসমের বন্যায় এখনও পর্যন্ত ৪২ জনের মৃত্যু হয়েছে।