ডিআরএস চেয়ে ফের রাজ্যপালের কাছে গেহলট, পাইলটের উড়ান থামাতে মোদী বিরোধিতা কংগ্রেসের
রাজস্থানে রাজনৈতিক পরিস্থিতি টালমাটাল৷ এই অবস্থায় বিধানসভায় নিজেদের সংখ্যা গরিষ্ঠতা প্রমাণ করতে মরিয়া কংগ্রেস৷ তবে তার জন্য প্রয়োজন অধিবেন ডাকা। অবশ্য সেই অধিবেশন ডাকতে নারাজ রাজ্যপাল কলরাজ মিশ্র। কিন্তু নাছোড়বান্দা অশোক পাইলটও ছাড়ার পাত্র নয়। এধিন দুপুর বেলায় কংগ্রেসের পরিষদীয় দলের বৈঠক ডেকে ফের রাজ্যপালের দ্বারস্থ হওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন অশোক গেহলট।
দিল্লিতে মোদীর বাসভবনের সামনে আন্দোলনের হুমকি
পাশাপাশি এদিন অশোক হেগলট হুমকি দিয়ে বলেন যে রাজ্যপাল তাঁদের দাবি মেনে না নিলে প্রয়োজনে দিল্লি গিয়ে রাষ্ট্রপতি ভবনের সামনে ধর্নায় বসবেন রাজস্থানের বিধায়করা। দরকারে প্রধআনমন্ত্রী মোদীর বাসভবনের সামনে প্রতিবাদ দেখানোরও হুমকি দেন রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোর গেহলট।
আদালতে পাইলটের কাছে গেহলটের হার
সম্প্রতি সচিন পাইলট ও ১৮ জন কংগ্রেস বিধায়কের বিরুদ্ধে দলবিরোধী কার্যকলাপের অভিযোগ তুলে নোটিস পাঠিয়েছিলেন রাজস্থান বিধানসভার স্পিকার। স্পিকারের সেই নোটিসের বিরোধিতা করে রাজস্থান হাইকোর্টে যান প্রাক্তন সচিন পাইলট ও ১৮ জন বিধায়ক। এরপরই সুপ্রিম কোর্টে যান অধ্যক্ষ। তাঁর বক্তব্য, বিধানসভার বিষয়ে হস্তক্ষেপ করতে পারে না হাইকোর্ট। গতকাল তাঁর আর্জি খারিজ করে দেয় শীর্ষ আদালত। সুপ্রিম কোর্টের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়, সিদ্ধান্ত জানাতে পারবে রাজস্থান হাইকোর্ট। সেই মতো শুক্রবার সকালে শুনানি শুরু হয়। আর তাতে জয় হয় সচিনের।
অশোকের পরের চাল
আর এরপরই সচিনকে দল থেকে সরানোর লক্ষ্যে বিধানসভা অধিবেশন ডাকার জন্য উঠে পড়ে লেগেছেন অশোক গেহলট। কারণ সেখানে আস্থা ভোট হলে হুইপের নির্দেশে পাইলট পন্ধীদের অশোক গেহলটকেই ভোট দিতে হবে। আর তা না করলে বা ভাটোভুটি থেকে অনুপস্থিত থাকলে দলবিরোধী কাজের দায়ে তাঁদের বহিষ্কার করার ক্ষমতা থাকবে স্পিকারের হাতে।
রাজ্যপাল বনাম অশোক
তবে অশোকের এই চালকে আটকে দিয়েছেন রাজ্যপাল কলরাজ। কারণ সচিনকে দল থেকে বের করতে গেহলট যেই অধিবেশন ডাকতে রাজ্যপালকে পরামর্শ দিয়েছেন, তা মেনে নেননি রাজ্যপাল। এরপরই দফায় দফায় ধর্না, আন্দোলন, ঘেরাও শুরু করেন গেহলট পন্থী কংগ্রেস নেতারা। তবুও অবিচল রাজ্যপাল।
গেহলটের বিরুদ্ধে রাজ্যপালের অভিযোগ
কলরাজ মিশ্র জানান, মুখ্যমন্ত্রী গেহলট বিধানসভার অধিবেশন ডাকার কোনও যুক্তি বা নির্দিষ্ট বিষয় উল্লেখ করেননি৷ তাই অধিবেশন ডাকার আগে তিনি রাজ্য সরকারের থেকে কিছু বিষয়ের জবাব চান৷ বিধানসভার অধিবেশন ডাকার আগে ২১ দিনের নোটিস জারি করতে হয় বলে বিবৃতিতে জানান রাজ্যপাল৷
গেহলটের চাপ সৃষ্টির রাজনীতি
গতকাল রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট ও তাঁর অনুগামী বিধায়করা রাজ্যপাল কলরাজ মিশ্রর বাড়িতে চার ঘণ্টার বেশি অবস্থান বিক্ষোভ করেন৷ বিধানসভার অধিবেশন ডাকার জন্য তাঁরা চাপ দিতে থাকেন৷ এতে ফল না হওয়ায় শুক্রবার রাতে রাজ্যের মন্ত্রিসভার সদস্যরা প্রায় আড়াই ঘণ্টা বৈঠক করেন৷ রাজ্যপাল মিশ্র বিধানসভা অধিবেশন ডাকার জন্য যে ছ'টি বিষয় উল্লেখ করেছেন, তা নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়৷ বিধানসভার অধিবেশনে মূল আলোচ্য বিষয় ‘কোরোনা ভাইরাস ও অর্থনীতিতে তার প্রভাব' হবে বলে বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়৷ এদিন বিকেলেও ফের বৈঠকে বসে কংগ্রেস।
সমীকরণে রাজস্থান
রাজস্থান বিধানসভায় ২০০টি আসনের মধ্যে কংগ্রেসের ১০১টি আসন রয়েছে৷ সচিন পাইলট শিবির দাবি করেছে, তাঁদের পক্ষে রয়েছেন ৩০ জন বিধায়ক৷ যদিও তাঁরা ১৯ জনের প্রমাণ দেখাতে পেরেছেন৷ অন্যদিকে বিজেপি-র রয়েছে ৭২টি আসন৷ অন্যান্য দল ও নির্দল প্রার্থীদের মিলিয়ে বিরোধীদের রয়েছে ৯৭টি আসন৷