২০১৪ থেকে মাঝপথে পদ্ম কাঁটায় উল্টেছে একাধিক সরকার , এবার পালা মহারাষ্ট্রের
Array
শিবসেনা মহারাষ্ট্রে মহা বিকাশ আঘাদি সরকারের জোটে সরকার গড়ে গত আড়াই বছর ধরে সরকার চালিয়েছে, কিন্তু আচমকাই তাঁদের সরকার মহা বিপদে পড়ে গিয়েছে। আসলে তাঁদের ভিতে আঘাত হেনেছে বিজেপি। তাঁদের প্রায় ১২ জন বিধায়ককে সেই পুরনো স্টাইলে দল থেকে ছিনিয়ে নিয়েছে। আর অঙ্ক বলছে একটু এদিক ওদিক হলেই বিজেপির হাতে যেতে চলেছে মহারাষ্ট্র।
সিনিয়র নেতা এবং নগর উন্নয়ন মন্ত্রী একনাথ শিন্ডে গত রাত থেকে দলের সঙ্গে আর যোগাযোগ রাখেননি তাতেই এই সম্ভাবনা জোরালো হয়ে গিয়েছে। কারণ তাঁর সঙ্গে রয়েছে আরও কিছু এমএলএ এবং বেশকিছু ছোট ছোট দলের বিধায়কও। তবে ২০১৪ সাল থেকে দেশের প্রায় প্রত্যেকটি রাজ্যে ক্ষ্মতায় এসেছে বিজেপি। আর কয়েকটি রাজ্য হলেই ভারত বিজেপিতে পূর্ণ হয়ে যাবে। কিছু বিজেপিহীন রাজ্যের মধ্যে মহারাষ্ট্র ছিল অন্যতম। ২০১৯ সালে এটা বিজেপির হাতছাড়া হয় এবার তা ফের যেতে পারে বিজেপির দখলে, সেই সম্ভাবনাই প্রকট হয়েছে। এই বিষয় নিয়ে শিবসেনা সাংসদ সঞ্জয় রাউত বলেছেন, বিজেপি মহারাষ্ট্রে সরকারকে অস্থিতিশীল করতে চায়। এবার ঘটনা হল এটাই যে শিন্দে সহ ভিন্নমতাবলম্বী বিধায়করা বিজেপিতে যোগ দিলে মহারাষ্ট্রে জাফরান দলের সরকার গঠনের প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। তবে এটাও ঘটনা এবং দেখার বিষয় যে গত আট বছরে ঠিক মহারাষ্ট্রের মতো একাধিক সরকারকে এভাবেই ভেঙেছে বিজেপি এবং মোদী সরকারের জমি শক্তিশালী হয়েছে ।
কী দেখা যাচ্ছে ?
ক্ষমতায় থাকাকালীন কংগ্রেস বিজেপির কাছে অরুণাচল প্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ এবং কর্ণাটক হারিয়েছিল। বিশাল সংখ্যক বিধায়কদের ধরে রাখতে পারেনি কংগ্রেস ফলে ওইসব স্থানে সরকার গঠন করতে সক্ষম হয়ে বিজেপি। একে অপারেশন লোটাস বললেও ভুল হয় না। মহারাষ্ট্রতেও বিজেপি আবার সরকার বসাতে শুরু করছে কি না এখন সেটাই দেখার।
মধ্যপ্রদেশ: মার্চ ২০২০
কংগ্রেস ২০ মার্চ ২০২০-তে বড় ধাক্কা খেয়েছিল কারণ মধ্যপ্রদেশ তার হাত থেকে সরে গিয়েছিল যখন মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী কমল নাথ রাজ্য বিধানসভায় সুপ্রিম কোর্টের বাধ্যতামূলক ফ্লোর টেস্টের আগে পদত্যাগের ঘোষণা করেছিলেন। কংগ্রেসের কাছে সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণের জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যা না থাকায় পদত্যাগ করেন কমলনাথ। কমলনাথের সরকার সংকটে পড়েছিল যখন ছয় মন্ত্রী সহ ২২ কংগ্রেস বিধায়ক তাদের পদত্যাগ করেছিলেন।
প্রবীণ কংগ্রেস রাজনীতিবিদ জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া পদত্যাগের ঘোষণা করে দেওয়ার পরে বিজেপি তাল ঠুকতে শুরু করে সরকার গঠনের। সিন্ধিয়া পদ ছাড়ার একদিন পরে বিজেপিতে যোগ দেন। কমল নাথ সাংবাদিক সম্মেলনে বলেছিলেন যে তিনি গত ১৫ মাসে রাজ্যকে একটি নতুন পরিচয় দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন কিন্তু বিজেপি তার সরকারকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করেছিল। তিনি আরও বলেন, "তিনবার আমার সরকার সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠতা দেখাতে পেরেছে। এটা বিজেপির কাছে অসহনীয় ছিল। ফলস্বরূপ, তারা জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া এবং ২২ জন সুবিধাবাদী বিধায়কের সহায়তায় আমার সরকারকে উৎখাত করতে চেয়েছিল"।
মধ্যপ্রদেশ বিধানসভার নির্বাচন ২০১৮ সালের নভেম্বরে ছত্তিশগড় এবং রাজস্থানের জন্য অনুষ্ঠিত হয়েছিল। তিনটি রাজ্যেই কংগ্রেস জিতেছে, কিন্তু মধ্যপ্রদেশে ব্যবধান ছিল খুবই কম। ২৩০-সদস্যের বিধানসভায় কংগ্রেস ১১৪ জন বিধায়ক নিয়ে নির্বাচনে জেতে। এসপি, বিএসপি এবং নির্দলের বিধায়কদের সহায়তায়, কংগ্রেস ১১৬-র ম্যাজিক ফিগার অতিক্রম করতে সক্ষম হয়েছিল।
কর্ণাটক: জুলাই ২০১৯
এইচডি কুমারস্বামীর নেতৃত্বাধীন জোট সরকার ২৩জুলাই ২০১৯-এ উৎখাত হয়। কাঁটা সেই পদ্মের। কর্ণাটকের কংগ্রেসের সংকট শুরু ঘটিয়েছিল যা ৬ জুলাই । সেদিন ১৬ জন কংগ্রেস এবং জেডি(এস) বিধায়কের পদত্যাগের মাধ্যমে এই দোলাচল শুরু হয়েছিল৷ ২৬শে জুলাই বিজেপির বিএস ইয়েদুরপ্পা কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন। তিনি ২৯ জুলাই বিধানসভায় কণ্ঠভোটে আস্থা প্রস্তাবে জয়ী হয়ে তার সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করেছিলেন।
গোয়া: ২০১৭
১৭
টি
আসন
নিয়ে,
কংগ্রেস
নির্বাচনের
পরে
একক
বৃহত্তম
দল
ছিল,
যেখানে
বিজেপি
১৩
টি
পেয়েছিল৷
'ম্যাজিক
ফিগার'
যেটি
অর্জন
করতে
হয়েছিল
তা
ছিল
২১।এই
লক্ষ্যে
পিছিয়ে
থাকা
সত্ত্বেও,
বিজেপি
সক্ষম
হয়েছিল
সরকার
গঠনে
কারণ
গোয়া
ফরওয়ার্ড
পার্টি
নির্বাচন
জুড়ে
কংগ্রেসের
পাশাপাশি
প্রচার
করার
পরে
পক্ষ
পরিবর্তন
করে।
অরুণাচল প্রদেশ
২০১৬
সালে,
বিজেপি
অরুণাচল
প্রদেশে
সরকার
গঠনে
সফল
হয়েছিল,
এমনকি
যখন
৬০
সদস্যের
বিধানসভায়,
তাদের
মাত্র
'১১'
বিধায়ক
ছিল।
মুখ্যমন্ত্রী
পেমা
খান্ডুর
নেতৃত্বে
পিপলস
পার্টি
অফ
অরুণাচল
(পিপিএ)
বিধায়কের
মধ্যে
৩৩
জন,
বিজেপিতে
যোগ
দেওয়ার
পরে
বিজেপি
সরকার
প্রতিষ্ঠিত
হয়।
রাজস্থান
শচীন পাইলট, ২০১৮ সালে মুখ্যমন্ত্রীত্ব প্রত্যাখ্যান করার পর থেকে ২০২০ সালের জুলাই মাসে বিদ্রোহ করেন। তিনি সহ, ১৯ জন কংগ্রেস বিধায়ক সিএম গেহলট এবং দলকে অবজ্ঞা করে আইনসভা দলের মিটিং থেকে দূরে ছিলেন। দিল্লিতে দলের নেতৃত্ব হস্তক্ষেপ না করা পর্যন্ত এবং পাইলট বিদ্রোহ ত্যাগ না করা পর্যন্ত গেহলট তার সমর্থকদের হোটেলে রেখেছিলেন। বিধানসভায়, মুখ্যমন্ত্রী আস্থা ভোট পেয়ে যান। কোনওক্রমে বেঁচে যায় সরকার। গেহলট এই সঙ্কটের জন্য বিজেপিকে দায়ী করেছিলেন।