
রাজস্থানে স্থিতাবস্থা বজায় রাখায় জোর কংগ্রেসের! সভাপতির দৌড় থেকে ছিটকে গেলেন অশোক গেহলট
কখনও ছত্তিশগড়, কখনও উত্তরাখণ্ড আর এবার রাজস্থান। রাজ্যেই গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে দীর্ণ কংগ্রেস। অশোক গেহলট যদি কংগ্রেস সভাপতি হন, তাহলে তার অনুগতদের মধ্যে থেকেই মুখ্যমন্ত্রী করার দাবিতে দলে বিদ্রোহ করেন বিধায়করা। ৮২ জন কংগ্রেস বিধায়ক পদত্যাগের কথাও জানিয়ে দেন। সেই পরিস্থিতি ক্ষমতা ধরে রাখতে রাজস্থানে স্থিতাবস্থা বজায় রাখার পক্ষেই মত দিয়েছে কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্ব। সেই কারণে কংগ্রেসের সভাপতির দৌড় থেকে ছিটকে গিয়েছেন অশোক গেহলট।

বিদ্রোহ সচিন পাইলটকে নিয়ে
অশোক গেহলট কংগ্রেস সভাপতি হলে সচিন পাইলট রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী পদে কংগ্রেস হাইকমান্ডের পছন্দের ছিলেন। কিন্তু সচিন পাইলট নিজের অনুগত ১৮ জন বিধায়ককে নিয়ে ২০২০ সালে অশোক গেহলটের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছিলেন। ফলে যে সময় অশোক গেহলটের কংগ্রেসের সভাপতি হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল, সেই সময় তাঁর অনুগত ৮২ জন বিধায়ক দলের বৈঠকে তাদের পদত্যাগপত্র দেন। দলের সেই বৈঠকেই রাজ্যের পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু গেহলট অনুগত বিধায়কদের পদক্ষেপে তা ভেস্তে যায়। তারা কোনওভাবেই পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে সচিন পাইলটকে মেনে নেবে না বলেও জানিয়ে দেন।

হাইকমান্ড দায়িত্ব দেয় খারগে ও মাকেনকে
কংগ্রেস নেতৃত্ব চাইছে এক, কিন্তু গেহলট অনুগামীরা চাইছেন আরেক, সেই অবস্থায় রাজস্থান কংগ্রেসে অচলাবস্থা তৈরি হয়। দলের তরফে বিষয়টি নিয়ে মল্লিকার্জুন খারগে ও অজয় মাকেনকে পর্যবেক্ষক হিসেবে সেখানে পাঠায়। এব্যাপারে দুই পর্যবেক্ষক হাইকমান্ডকে রিপোর্ট দেন। তবে অশোক গেহলটের পরে কে তা নিয়ে সঙ্কট তৈরি হওয়ায় অশোক গেহলট কংগ্রেসের সভাপতির পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা থেকে পিছিয়ে আসছেন বলেই সূত্রের খবর।
এই মুহূর্তে শীর্ষ নেতৃত্বে এক ব্যক্তি এক পদ নীতি নেওয়ার গেহলটের পক্ষে কংগ্রেস সভাপতি হওয়ার পরে রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব সামলানো সম্ভবপর ছিল না।

গেহলট অনুগামীদের তিন শর্ত
সংকটের সমাধান করতে গিয়ে গেহলটের অনুগামীরা তিন শর্ত দেন। তাঁরা বলেন, কংগ্রেস সভাপতি নির্বাচনের পরে মুখ্যমন্ত্রীর নির্বাচন নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হোক। এছাড়াও তাঁরা শর্ত দেন, বিঘায়কদের মধ্যে থেকে মুখ্যমন্ত্রী এমন কাউকে করতে হবে, যিনি ২০২০-তে রাজনৈতিক সংকটের সময় সরকারের পাশে ছিলেন। অর্থাৎ সেখানে বলেই দেওয়া হচ্ছে পাইলট কিংবা তাঁর অনুগত কেউ মুখ্যমন্ত্রী হতে পারবেন না। এছাড়াও এআইসিসির পর্যবেক্ষকরা এক-একজনের সঙ্গে বৈঠক না করে দলগতভাবে বৈঠক করুন। তবে কংগ্রেসের তরফে রাজস্থানের পর্যবেক্ষক এই ধরনের শর্তের তীব্র বিরোধিতা করেছেন বলেই জানা গিয়েছে।

স্থিতাবস্থা বজায় রাখার সিদ্ধান্ত
সূত্রের খবর অনুযায়ী, ৩০ সেপ্টেম্বর কংগ্রেসের সভাপতি পদের মনোনয়ন প্রক্রিয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত রাজস্থান নিয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের সম্ভাবনা কম। রাজস্থানের কংগ্রেস পর্যবেক্ষক মল্লিকার্জুন খারগে এবং অজয় মাকেন সোমবার দিল্লিতে সোনিয়া গান্ধীর সঙ্গে দেখা করে তাঁকে পরিস্থিতি সম্পর্কে অবহিত করেন বলে জানা গিয়েছে। মঙ্গলবার তাঁরা তাঁদের লিখিত রিপোর্ট জমা দেবেন। তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে অশোক গেহলট কংগ্রেসের সভাপতি পদের দৌড় থেকে বাদ পড়েছেন বলে কংগ্রেসের এক সিনিয়র নেতা জানিয়েছেন। তবে ৩০ জুনের মধ্যে কংগ্রেস সভাপতি পদের জন্য যাঁরা মনোনয়ন জমা দিতে পারেন, তাঁরা হলেন মুকুল ওয়াসনিক, মল্লিকার্জুন খারগে, দিগ্বিজয় সিং, কেসি বেনুগোপালের মতো নেতারা।
অনুপ্রেরণাই রতন টাটার সব থেকে বড় আনন্দ! টাটা গ্রুপের এমেরিটাস চেয়ারম্যানের 'মন্ত্র' একনজরে