মেজর লিতুল গগৈ শ্রীনগরে, জানতেন না তাঁর কমান্ডাররা
মেজর লীতুল গগৈ-এর শ্রীনগর-এর কর্মকান্ডের কোনও হদিশ ছিল না সেনাবাহিনীর 'চেইন অব কমান্ড'-এর কাছে।
মেজর লাতুল গগৈ-এর শ্রীনগর-এর কর্মকান্ডের কোনও হদিশ ছিল না সেনাবাহিনীর 'চেইন অব কমান্ড'-এর কাছে। ইতিমধ্যে কাশ্মীরে দু'দিনের সফরে এসেছিলেন সেনা প্রধান জেনারেল বিপিন রাওয়াত। এসেছিলেন কেন্দ্রীয় সরকার জঙ্গিদের বিরুদ্ধে রমজান মাসে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করার পর উপত্যকার অবস্থা কী আছে তা জানতে। কিন্তু এসে থেকে মেজর গগৈ-এর ঘটনা নিয়েই ব্য়স্ত থাকতে হয়েছে তাঁকে। জানা গিয়েছে কীভাবে ৫৩ নম্বর রাষ্ট্রীয় রাইফেলস-এর এই অফিসার এই ঘটনায় জড়িয়ে পড়লেন, যার জন্য তাঁকে গত বুধবার শ্রীনগরের ডালগেট এলাকায় পুলিশ তাঁকে আটক করে, তা নিয়ে বিস্তারিত তদন্ত করেছেন সেনা প্রধান।
বৃহস্পতিবারই মেজর গগৈ-এর বিরুদ্ধে 'কোর্ট অব ইনকোয়ারি' (সিওআই)- এর আদেশ দিয়েছেন জেনারেল রাওয়াত। তবে তাঁর আগে ভিক্টর ফোর্স-এর জেনারেল কম্যান্ডিং অফিসার, সেক্টর -১০ এর কমান্ডার, এবং আরআর 53 -এর কমান্ডিং অফিসারকে চিনার কর্পসের সদর দপ্তরে ডেকে এনে তুলোধোনা করেছেন জেনারেল রাওয়াত। একটি সূত্রের দাবি, ভয়ঙ্কর ক্ষুব্ধ জেনারেল রাওয়াত তাঁদের জিজ্ঞাসা কাছে বারবার করে জানতে চান এক অফিসার, যাঁকে কিনা তিনি নিজে হাতে করেছেন ২017 সালের মে মাসে সন্ত্রাসবাদ বিরোধী কাজের জন্য কমেন্ডেশন কার্ড দিয়েছিলেন, তিনি কিকরে শ্রীনগরের এক জনবহুল এলাকার হোটেলে রাত কাটাতে চলে গেলেন? কিন্তু সেনা প্রধানকে কোন উত্তর দিতে পারেননি ওই অফিসাররা। কারণ মেজরের গতিবিধি নিয়ে তাদের কাছে কোনও খবর ছিল না।
২০১৭-র এপ্রিলে মেজর গগৈ তাঁর জিপের সামনে অসামরিক নাগরিক ফারুক দারকে মানব ঢাল হিসেবে ব্যবহার করেছিলেন। কাশ্মীরের পাথর নিক্ষেপকারীদের হাত থেকে নিজের পেট্রোনলিং বাহিনী ও ভোটকর্মীদের বাঁচাতে তাঁর ওই অভিনব পন্থা গ্রহন নিয়ে বিতর্ক উঠেছিল। প্রশ্ন উঠেছিল মানবাধিকার লঙ্ঘনের। কিন্তু সেনার তরফে বলা হয়েছিল, ওভাবে তিনি সেদিন অনেকের প্রাণ বাঁচিয়েছেন। তার স্বীকৃতিতেই জেনারেল বিপিন রাওয়াত নিজে হাতে মেজর গগৈ-এর হাতে কমেন্ডেশন কার্ড তুলে দেন। তবে উপত্যকায় ওই ঘটনা নিয়ে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছিল।
কাজেই শ্রীনগরের জনবহুল এলাকায় একা একা যাওয়াটা মেজর লীতুল গগৈ-এর পক্ষে অত্যন্ত ঝুঁকির। সন্ত্রাসবাদীরা তো আছেই, সাধারণ কাশ্মীরি জনতার হাতেও প্রাণ সংশয়ের সম্ভাবনা ছিল। কিন্তু এত বিপদ মাথায় নিয়ে তিনি সেদিন গ্র্যান্ড মমতা হোটেলে বুড়গামের ওই কিশোরীকে নিয়ে কেন গেলেন সেই প্রশ্ন এখনও হাতরাচ্ছে সেনা। শুধুই কী ওই মেয়েটির সঙ্গে রাত কাটাতে চেয়েছিলেন না অন্য কোনও উদ্দেশ্য ছিল তাঁর তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে সেনার কোনও কাজে যে তিনি যাননি এটা ইতিমধ্যেই স্পষ্ট। কারণ, মেজরের বাহিনী আরআর 53 বিএন-এর অপারেশন বুড়গাম জেলার বীরওয়া এলাকার মধ্যে সীমাবদ্ধ। মেয়েটির গ্রামটি যে এলাকায়, তার দায়িত্বে আছে আরআর ০২ বিএন। এবং শ্রীনগরের যে এলাকা থেকে তিনি আটক হন, সেখানে সেনাবাহিনী কোনো অভিযানে জড়িত নেই।