এবার আইনের মাধ্যমে 'মৌলিক কর্তব্য'গুলিকে লাগু করার আবেদন এল সুপ্রিম কোর্টে
এবার আইনের মাধ্যমে 'মৌলিক কর্তব্য'গুলিকে লাগু করার আবেদন এল সুপ্রিম কোর্টে
ভারতীয় সংবিধানের পঞ্চম খন্ডের ৫১এ ধারায় ১১টি মৌলিক কর্তব্যের কথা বলা হয়েছে৷ এই মৌলিক কর্তব্যগুলি দেশের জনগনের জন্য অবশ্য পালনীয় কর্তব্য হলেও বাধ্যতামূলক নয়৷ এবার এই মৌলিক কর্তব্যগুলিকেই আইনের মাধ্যমে সারা দেশে লাগু করার জন্য সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করলেন দুর্গা দত্ত নামে এক ব্যক্তি। তাঁর আবেদনের ভিত্তিতেই দেশের র সর্বোচ্চ আদালত কেন্দ্র ও রাজ্যগুলির কাছে জানতে চেয়েছে তারা সংবিধান বর্ণীত 'মৌলিক কর্তব্য' নিয়ে কী ভাবছে।
কী এই মৌলিক কর্তব্য?
২৬ নভেম্বর ১৯৪৯ এ ভীমরাও আম্বেদকর, ডঃ রাজেন্দ্র প্রসাদ প্রমূখদের তত্ত্বাবধানে দেশের সংবিধান তৈরি হয়েছিল। ১৯৫১ সালে সারা দেশে তা লাগু হয়। সংবিধানের প্রথম অবস্থায় 'মৌলিক কর্তব্য'এর বিষয়টি ছিল না৷ পরে ১৯৭৬ সালের ৪২ তম সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে 'মৌলিক কর্তব্য'গুলি ভারতী সংবিধানের ৫১এ ধারায় স্থান পায়। ভারতের সংবিধানে মৌলিক কর্তব্যগুলি সোভিয়েত রাশিয়া ও জাপানের সংবিধান থেকে নেওয়া হয়েছে৷ কিন্তু প্রথমে সংবিধানে মাত্র ১০টি মৌলিক কর্তব্য ছিল পরে ২০০২ সালের ৮৬ তম সংবিধান সংশোধনর মাধ্যমে আরও একটি মৌলিক কর্তব্য স্থান পায় সংবিধানে৷ মৌলিক অধিকারের সঙ্গে মৌলিক কর্তব্যের মূল পার্থক্য হল কর্তব্যগুলি আইন দ্বারা সুরক্ষিত বা বলবৎযোগ্য৷ অর্থাৎ দেশের কোনও নাগরিক মৌলিক অধিকার না মানলে তা আইনে শাস্তি যোগ্য অপরাধ নয়৷ কিন্তু ভারতীয় সংবিধানে মৌলিক অধিকার কঠোরভাবে আইন দ্বারা সুরক্ষিত৷ এবং কোন নাগরিক অন্য কারও মৌলিক অধিকারে হস্তক্ষেপ করলে তা শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
'ছাপ্পা ভোট দিতে দেখলে ইভিএম ভেঙে দেবেন', পুরভোটের প্রচারে বিস্ফোরক বার্তা বিজেপি বিধায়কের
কেন 'মৌলিক কর্তব্য'গুলিকে আইনের সুরক্ষা দেওয়ার দাবি উঠছে?
সুপ্রিম কোর্ট সোমবার কেন্দ্র ও রাজ্যগুলিকে বিস্তৃত, সু-সংজ্ঞায়িত আইনের মাধ্যমে দেশপ্রেম এবং জাতির ঐক্য সহ নাগরিকদের মৌলিক কর্তব্যগুলি কার্যকর করার জন্য একটি আবেদনের জবাব দিতে বলেছে। বিচারপতি সঞ্জয় কিশান কাউলের নেতৃত্বে একটি বেঞ্চ দুর্গা দত্তের দায়ের করা একটি পিটিশনের ভিত্তিতেই কেন্দ্র ও রাজ্যগুলির কাছে এই জবাব চেয়েছেন৷ দেশের সর্বোচ্চ আদালতে করা দুর্গা দত্তের আবেদনটিতে মৌলিক কর্তব্যের গুরুত্ব সম্পর্কে ভগবদগীতাকে উল্লেখ করা হয়েছে৷ আবেদনকারী যুক্তি দিয়েছেন যে সময়ের প্রয়োজন হল নাগরিকদের মনে করিয়ে দেওয়া যে মৌলিক কর্তব্যগুলি সংবিধানের অধীনে মৌলিক অধিকারগুলির মতোই গুরুত্বপূর্ণ। বাক ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার আড়ালে বিভিন্ন সময় বিক্ষোভকারীরা প্রতিবাদ করতে গিয়ে সংবিধান উল্লেখিত মৌলিক অধিকারগুলি মানছেন না৷ সরকারকে তাদের দাবি পূরণে বাধ্য করার জন্য সড়ক ও রেলপথ অবরোধ করা সহ সরকারি সম্পত্তি নষ্ট করার মতো বিষয়ও দেখা গিয়েছে। যা নাগরিকদের মৌলিক কর্তব্যকে নষ্ট করছে৷ তাই এবার আইন প্রয়োগের মাধ্যমে দেশের সংবিধান বর্ণীত মৌলিক অধিকারগুলিকে সুরক্ষিত করা প্রয়োজন বলে আবেদন করেছেন দুর্গা।