সাড়ে তিন ঘণ্টায় ৫০ কেজির টিউমার অপসারণ করে বিশ্বে নজির গড়লেন অ্যাপোলোর চিকিৎসকরা
সাড়ে তিন ঘণ্টায় ৫০ কেজির টিউমার অপসারণ করে বিশ্বে নজির গড়লেন অ্যাপোলোর চিকিৎসকরা
দেহের অর্ধেক ওজনের ৫০ কেজি টিউমার অপসারণ করে দেওয়া হল রোগীর ডিম্বাশয় থেকে। দিল্লির এক হাসপাতালে এই সফল অস্ত্রোপচার করেন চিকিৎসকরা। তাঁদের দাবি, বিশ্বের মধ্যে এ ধরনে বড় টিউমার অস্ত্রোপচার এই প্রথমবার হল। দিল্লির ৫২ বছরের বাসিন্দা শেষ কিছু মাস ধরে ক্রমাগত তাঁর ওজন বেড়ে যাওয়ায় সমস্যায় পড়েছিলেন এবং তাঁর ওজন দাঁড়িয়েছিল ১০৬ কেজি।
ওজন বেড়ে যায় অত্যাধিক
দিল্লির ইন্দ্রপ্রস্থের অ্যাপোলো হাসপাতালের ডাঃ অরুণ প্রসাদ জানিয়েছেন যে ওই মহিলার শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যা দেখা দিতে থাকে, তলপেটের তীব্র ব্যাথা এবং ফলস্বরূপ হাঁটা এবং ঘুমাতে সমস্যা শুরু হয়। ক্রমাগত ওজন বৃদ্ধি এবং সমস্যা বাড়তে থাকায়, পরিবার প্রথমে স্থানীয় এক চিকিৎসকের সহায়তা নেন, তিনি ওই রোগীকে অ্যাপোলো হাসপাতালে যাওয়ার পরামর্শ দেন।
বড় আকারের টিউমার প্রসারিত হচ্ছে
ওই চিকিৎসক বলেন, ‘বিষয়টি খতিয়ে দেখার পর বোঝা যায় যে ওই মহিলার ডিম্বাশয়ে একটি বড় আকারের টিউমার রয়েছে যা ক্রমান্বয়ে প্রসারিত হচ্ছে। টিউমারটি তার অন্ত্রের উপর চাপ সৃষ্টি করছিল, যার ফলে তীব্র পেট ব্যথা এবং খাদ্য হজম করতে অক্ষম হচ্ছিল। এর সঙ্গে ওই মহিলার হিমোগ্লোবিন স্তর নেমে ৬ চলে আসে, যার ফলে মারাত্মকভাবে রক্তস্বল্পতা দেখা দেয়।' গত ১৮ অগাস্ট চিকিৎসকের দল সাড়ে তিন ঘণ্টা অস্ত্রোপচারের পর ৫০ কেজি টিউমার মহিলার শরীর থেকে অপসারিত করে।
রোগীর শরীরে হিমোগ্লোবিন কমে যায়
এই কেসের বিষয়ে বিস্তারিত বলতে গিয়ে ডাঃ প্রসাদ বলেন, ‘সার্জেন হিসাবে আমার চিকিৎসা জীবনের ৩০ বছরে আমি এ ধরনের কেস দেখিনি, যেখানে টিউমারের ওজন রোগীর দেহের ওজনের প্রায় অর্ধেক। এর আগে এ ধরনের একটি ঘটনা ঘটেছিল ২০১৭ সালে কোয়াম্বাটুরে, যেখানে এক মহিলার ডিম্বাশয় থেকে ৩৪ কেজির টিউমার অপসারণ করা হয়।' তিনি বলেন, ‘৫০ কেজির টিউমার অপসারণ করা চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছিল চিকিৎসক দলের কাছে। তার কারণ রোগীর হিমোগ্লোবিন মারাত্মকভাবে কমে গিয়েছিল এবং অস্ত্রোপচারের আগে ও পরে তাঁর শরীরে ছয় ইউনিট রক্ত দেওয়া হয়েছিল।
অস্ত্রোপচার হয়েছে সনাতন রীতিতে
প্রথাগত রীতিতেই মহিলার অস্ত্রোপচার করা হয়েছিল কারণ রোগীর পেটে ল্যাপরোস্কোপির মাধ্যমে কিছু ঢোকানোর মতো জায়গা ছিল না। অস্ত্রোপচার তাতেই সফল হয়েছে। এই কেসের প্রধান সার্জেন ডাঃ অভিষেক তিওয়ারি জানিয়েছেন যে পেটে ব্যাথা, শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যা ও ওজন বৃদ্ধি নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন রোগী। রোগীকে পরামর্শ দেওয়া হয় যে শীঘ্রই অস্ত্রোপচার করা হোক, নইলে টিউমারটি প্রসারিত হতে হতে শরীরের অন্য অঙ্গেও প্রভাব ফেলবে এবং ক্ষতি করবে। ভাগ্যক্রমে অস্ত্রোপচার সফল হয়েছে এবং রোগীও এখন অনেকটাই সুস্থ আছে। অস্ত্রোপচারের পর ওই মহিলার ওজন এখন ৫৬ কেজি।
প্রশান্ত কিশোরই দ্বন্দ্ব লাগাচ্ছে বিজেপিতে! অর্জুনের নিশানায় বাণ হানলেন তথাগত