লোকসভায় পাস হল মানব পাচার বিরোধী বিল, কিন্তু এনিয়ে এখনও জারি বিতর্ক
বৃহস্পতিবার লোকসভায় পাস হল মানব পাচার বিরোধী বিল। নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী কৈলাশ সত্যার্থী এবং কিছু এনজিও এটিকে স্বাগত জানিয়েছে। কিন্তু বেশিরভাগ আইনজীবী, মানবাধিকার কর্মী ও যৌনকর্মীরা এর বিরোধিত
বৃহস্পতিবার লোকসভায় পাস হল পাচার বিরোধী, 'ট্রাফিকিং অব পার্সনস (প্রিভেনশন, প্রোটেকশন অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশন) বিল, ২০১৮'। লোকসভায় এই বিলকে 'ভারতে মানব পাচার সমস্যার মোকাবিলায় প্রথম পদক্ষেপ' বলে বর্ণনা করেন নারী ও শিশু কল্যান মন্ত্রী মানেকা গান্ধী। তবে লোকসভায় পাস হওয়ার পরও এই বিল নিয়ে বিতর্ক থামছে না।
লোকসভাতেও বিলটি সহজে পাস হয়নি। বিরোধী সাংসদরা বিলটির বিভিন্ন ক্ষতিকর দিক নিয়ে প্রশ্নে জেরবার করে দিয়েছেন মানেকা গান্ধীকে। তবে মানেকা সাফ জানিয়ে দেন, 'যাঁরা স্বেচ্ছায় যৌনপেশায় নিযুক্ত হয়েছেন তাদের নিগ্রহের জন্য এই বিল তৈরি হয়নি। যাঁরা যৌনচক্রের শিকার হন, তাঁদের প্রতি সহানুভূতিশীল এই বিল।'
মানেকা আরও জানান এই বিলটির বিভিন্ন দিক সমর্থন করেছেন নোবেল শান্তি পুরষ্কার জয়ী কৈলাস সত্য়ার্থী। তিনি মানব পাচার বিশেষ করে যৌনপেশার ক্ষেত্রে মানব পাচার নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে আসছেন। এছাড়া বেসরকারি সংস্থা 'প্রয়াস' ও মানবাধিকার কর্মী সুনিতা কৃষ্ণাণেরও পরামর্শ নেওয়া হয়েছে বলে জানান নারী ও শিশু কল্য়ান মন্ত্রী।
বিলটি পাস হওয়ার পর কৈলাস সত্যার্থী বলেছেন, 'শিশু, নারী বা পুরুষদের পাচার হওয়া মানবতার পক্ষে সবচেয়ে বড় হুমকি। ভারতের সংসদ লোকসভায় এই পাচার বিরোধী বিল পাস করে এই বিপদ রুখতে প্রথম কড়া পদক্ষেপটা নিল।' তাঁর আবেদন রাজ্য সভাও যেন এই বিলকে সমর্থন করে।
সত্যার্থীর মতোই বিলটিকে স্বাগত জানিয়েছে বেশ কয়েকটি এনজিও। কিন্তু এখনও এই বিলটির বিরোধিতা করে যাচ্ছেন বেশ কয়েকটি ট্রেড ইউনিয়ন, আইনজীবীদের সংগঠন, যৌনকর্মীদের সংগঠন, সুশীল সমাজের একাংশ ও বেশ কিছু সমাজকর্মী। তাঁরা বলছেন বিলটিকে লোকসভার কোনও স্ট্যান্ডিং কমিটিতে বিবেচনার জন্য পাঠালেই ঠিক হত।
বিলটির বিরুদ্ধে তাঁদের অভিযোগ এই বিল এইচআইভি আক্রান্তদের আরও একঘরে করে দেবে। যৌনপেশার জগতে বিপদ ডেকে আনবে। যৌনকর্মীদের, রূপান্তরকামীদের তাদের স্বাধীনতা হরণ করবে। এছাড়া শ্রমিক অধিকারের প্রশ্নে নিয়োগ, মজুরি ও কাজের পরিবেশ - নিয়ে বিলটিতে কোনও উল্লেখ নেই। এমনকী শিশু ও নারীদের অধিকার রক্ষাতেও বিলটি কার্যকর হবে না। কারণ উদ্ধারের পর সবাইকেই বাধ্যতামূলকভাবে হোমে পাঠানোর কথা বলা হয়েছে, মানবাধিকারের লঙ্ঘন।