আম্বানি বোমাতঙ্ক কাণ্ডে টুইস্ট, বিস্ফোরক ভর্তি গাড়ির মালিক হিরেন নন, বরং অন্য কেউ
আম্বানি বোমাতঙ্ক কাণ্ডে টুইস্ট, বিস্ফোরক ভর্তি গাড়ির মালিক হিরেন নন, বরং অন্য কেউ
গত ২৫ ফেব্রুয়ারি মুম্বইয়ে মুকেশ আম্বানির বাড়ির সামনে বিস্ফোরক–ভর্তি এসইউভি গাড়ি উদ্ধারের তদন্তে নেমেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এনআইএ। ওই গাড়িটি অ্যান্টিলিয়া থেকে কিছু মিটার দূরে পার্ক করা ছিল এবং তার ভেতর থেকে ২০টি জিলেটিন স্টিক ও আম্বানি পরিবারকে উদ্দেশ্য করে লেখা একটি হুমকি চিঠিও উদ্ধার হয়।
আ্যান্টিলিয়া ঘটনার আটদিন পর ওই গাড়ির মালিকের সন্ধান পায় পুলিশ এবং এক সপ্তাহের কম সময়ের মধ্যে গাড়ির মালিকের দেহ মুম্বইয়ের বাইরে এক খাঁড়ি থেকে উদ্ধার হয়। পুলিশের সন্দেহ তাঁকে খুন করা হয়েছে। ওই গাড়িটির নম্বর ভুয়ো ছিল এবং চ্যাসিস এবং ইঞ্জিন নম্বর নষ্ট করে দেওয়া হয়েছিল। তবে গাড়ির রিয়ার গ্লাস থেকে পাওয়া আর্থিক সংস্থার নাম ও নম্বর থেকে পুলিশ গাড়ির প্রকৃত নমঞবর প্লেট খুঁজে বের করে, যেটি হল এমএইচ০২এওয়াই ২৮১৫। এরপরই মনসুখ হিরেনের খোঁজ পায় পুলিশ, যিনি ভিখরোলিতে ১৭ ফেব্রুয়ারি তাঁর গাড়ি চুরির অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। পুলিশ এখন এই গাড়ি কে চুরি করেছে তার পাশাপাশি আম্বানির বাড়ির সামনে কে বা কারা বিস্ফোরক গাড়ি রাখল ও হিরেনের খুনি কে এই তিনটে ঘটনার তদন্ত চলছে।
তবে অ্যান্টিলিয়ার ঘটনার তদন্তে এখন এনআইএ নেমেছে। এর পাশাপাশি মুম্বইয়ের এটিএসও খুন ও গাড়ি চুরির তদন্ত করছে। তবে এই ঘটনার মোড় ঘোরানো তথ্য সামনে এসেছে। তা হল মনসুখ হিরেন ওই স্করপিও গাড়িটির মালিক ছিলেন না। বরং গাড়িটি থানের বাসিন্দা স্যাম পিটার নিউটনের, যিনি ২০০৭ সালের ৭ এপ্রিল থানের আরটিওতে নথিভুক্ত করিয়েছিলেন তাঁর গাড়িটি। মনসুখ হিরেন তাঁর মৃত্যুর আগে ক্রাইম ব্রাঞ্চকে দেওয়া বয়ানে জানিয়েছিলেন যে ২০১৬ সাল থেকে তিনি নিউটনকে চেনেন। হিরেনের থানেতে কার ডেকরের ব্যবসা রয়েছে এবং নিউটন তাঁকে তাঁর গাড়িটি সাজিয়ে দিতে বলেছিলেন। হিরেন বলেছিলেন, '২.৮০ লক্ষ টাকার বিল হয়েছিল এবং নিউটন আমায় দু’টি চেকে টাকা দেন, যার একটি অ্যাক্সিস ও অন্যটি এইচডিএফসি ব্যাঙ্কের। আমি তাঁর গাড়িটি ফেরত দিয়ে দিই। কিন্তু আমি যখন চেক ডিপোজিট করি তখন উভয় চেক বাউন্স হয়ে যায়।’ হিরেনের কথানুযায়ী, তিনি তাঁর টাকা নিউটনের থেকে আদায় করার চেষ্টা করেন, কিন্তু ব্যর্থ হন। ২০১৮ সালের ৬ এপ্রিল থানের একটি শপিং মলে হিরেন দেখা করেন নিউটনের সঙ্গে এবং টাকার জন্য চাপ দেন। কিন্তু নিউটন যখন জানান যে তিনি টাকা দিতে ব্যর্থ তখন হিরেন তাঁকে নপাড়া পুলিশ থানায় নিয়ে যান। পুলিশের কাছে নিউটন ১৫ দিনের মধ্যে টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন এবং ততদিন তাঁর ওই গাড়িটি ব্যবহার করতে বলেছিলেন হিরেনকে। এরপর নিউটন তাঁর ১৩ বছরের বেশি বা কম গাড়িটিকে হিরেনের কাছে দিয়ে দেন।
অন্যদিকে হিরেনের স্ত্রী বিমলা হিরেন জানিয়েছেন যে মনসুখ ওই গাড়িটি অ্যাসিস্ট্যান্ট পুলিশ ইনস্পেক্টর সচিন বেজের কাছে দিয়েছিলেন, যিনি গত বছরের নভেম্বর থেকে এ বছরের ৫ ফেব্রুয়ারি চার মাসের জন্য ব্যবহার করেন। তবে গাড়ির প্রকৃত মাইক নিউটন এ প্রসঙ্গে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তবে সচিন বেজ মনসুখ হিরানির স্ত্রীয়ের অভিযোগ নস্যাৎ করে দিয়েছেন। হিরেনের স্ত্রী এও জানান যে ৫ ফেব্রুয়ারি তাঁর স্বামীকে গাড়ি ফেরত দেওয়ার পর তা ১২ দিএনরও কম সময় তাঁর কাছে ছিল কারণ গত ১৭ ফেব্রুয়ারি তা ইস্টার্ন এক্সপ্রেস হাইওয়ে থেকে চুরি হয়ে যায়।