মমতা চাষীর জমির কাড়বেন না, দেশ বেচবেন না, তাই সমর্থন: আন্না
এদিন শুরুতেই আন্না হাজারে বলেছেন, "অনেককে দেখলাম। আশাভঙ্গ হয়েছে। শুধু মমতাই একই রয়ে গিয়েছে মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পরও। ওঁর জীবনযাপন সাদাসিধে। আমি জানি, উনি কৃষকদের থেকে জোর করে জমি নেবেন না, দেশের নদী, খনি, বনজ সম্পদ বিক্রি করে দেবেন না। তাই ওঁকে সমর্থন করছি। মহাত্মা গান্ধী বলতেন, দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হলে গ্রামের উন্নতি করতে হবে। গ্রামের মানুষের কথা ভাবতে হবে। একমাত্র মমতাই গ্রামের মানুষের কথা ভাবেন। আমার তাই অনুরোধ, আপনারা ওঁকে সারা দেশে অন্তত ১০০ আসনে জেতান।"
জবাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "আমার ওপর ভরসা রাখার জন্য আমি আন্নাজির কাছে কৃতজ্ঞ। একটা দল ৬৬-৬৭ বছর ধরে কেন্দ্রে জমিদারি কায়দায় শাসন চালাচ্ছে। যা মনে করছে, তাই করছে। এই যেমন ধরুন, অন্ধ্রপ্রদেশের যা হল। ওদেরই মুখ্যমন্ত্রী পদত্যাগ করল। দেশে যা কিছু হবে, সম্মতির ভিত্তিতে হওয়া উচিত। অবস্থা পাল্টাতে তাই কেন্দ্রে বদল আনতে হবে। আমাদের বাংলা থেকে কেন্দ্রীয় সরকার দু'বছরে ৭০ হাজার কোটি টাকা ঋণের সুদ বাবদ নিয়ে গিয়েছে। অনুরোধ করেছিলাম, শোনেনি। তাতেও আর্থিক বিকাশের যা জাতীয় গড়, তার চেয়ে আমাদের বিকাশের গড় হার অনেক বেশি। এবার বুঝুন, ওই টাকাটা থাকলে আমরা কী করতে পারতাম।"
প্রসঙ্গত, এর আগে মঙ্গলবার রাতে নয়াদিল্লির ১৮১, সাউথ অ্যাভিনিউতে মুকুল রায়ের বাড়িতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠক করেন আন্না হাজারে। এক ঘণ্টা বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের বলেছিলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একজন সৎ মানুষ। ক্ষমতা পেয়ে যেখানে অনেকে বিলাসে গা ভাসিয়ে দেন, বাংলার মুখ্যমন্ত্রী তেমন নন। এখনও সাদামাটা পোশাক পরেন, সাধারণভাবে থাকেন। দেশকে এতদিন দিশা দেখানোর মতো কেউ ছিল না। এখন পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই যোগ্য ব্যক্তি।
আন্না হাজারে এটাও বলতে ভোলেননি যে, দুর্নীতি দমন-সহ ১৭টি ইস্যুতে তিনি বিভিন্ন রাজনীতিক দলকে চিঠি লিখেছিলেন। কেউ উত্তর দেয়নি। একমাত্র মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় উত্তর দিয়েছেন। তাই মমতার সদিচ্ছা রয়েছে।
মঙ্গলবার রাতে বৈঠক শুরু হওয়ার আগে আন্না হাজারের পা ছুঁয়ে প্রণাম করেন মমতা। তার পর বৈঠক শেষে দু'জনে একসঙ্গে খাওয়া-দাওয়া সারেন।
প্রসঙ্গত, এর আগে অরবিন্দ কেজরিওয়ালের ওপর যথেষ্ট ভরসা করেছিলেন আন্না হাজারে। কিন্তু নানা ইস্যুতে দু'জনে মতপার্থক্য হয়। এখন তো মুখ দেখাদেখি বন্ধ। তাই আন্না হাজারে এখন ভরসা করছেন একমাত্র মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই।