
আমার বিরুদ্ধে যেভাবে মামলা করা হয়েছিল তা দুর্ভাগ্যজনক, জেল থেকে মুক্তি পেলেন আনন্দ তেলতুম্বদে
শনিবার নভি মুম্বইয়ের তালোজা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পেলেন আনন্দ তেলতুম্বদে। মুক্তির পরেই কারগারের বাইরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, ৩১ মাস পরে মুক্তি পাওয়ার পর তিনি অত্যন্ত খুশী। তাঁর বিরুদ্ধে যেভাবে মামলা করা হয়েছিল, তা দুর্ভাগ্যজনক বলেও তিনি মন্তব্য করেন। ভীমা কোরেগাঁও মামলায় তাঁকে ২০২০ সালের এপ্রিল মাসে গ্রেফতার করা হয়েছিল।

১৮ নভেম্বরকে বোম্বে হাইকোর্টে আনন্দ তেলতুম্বদেকে জামিনে মুক্তি দেয়। এর বিরোধিতা করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন এনআইএ। শুক্রবার জাতীয় তদন্তকারী সংস্থার আবেদন খারিজ করে দেয় সুপ্রিম কোর্ট। এরপরে শনিবার তিনি নভি মুম্বইয়ের কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পান।
ভারতের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বে একটি বেঞ্চ এনআইএ-এর আবেদন খারিজ করে দেন। ভীমা কোরেগাঁও মামলায় অভিযুক্ত ১৬ জনের মধ্যে নয় জনকে পুনে থেকে পুলিশ ২০১৮ সালে গ্রেফতার করে। এরপরেই ঘটনার তদন্তভার এনআইএ-এর ওপর যায়। ২০২০ সালের ১৪ এপ্রিল এনআইয়ের কাছে আনন্দ তেলতুম্বদে আত্মসমর্পণ করে। এরপর এনআইএ তাঁকে গ্রেফতার করে।
গ্রেফতার ১৬ জনের মধ্যে তিনি তৃতীয় অভিযুক্ত যিনি জামিনে মুক্তি পেলেন। এর আগে তেলেগু কবি এবং সমাজকর্মী ভারাভারা রাওকে এই বছরের অগাস্টে জামিনের জন্য মুক্তি পেয়েছিলেন। সুধা ভরদ্বাজকে গত বছরের ডিসম্বরে ডিফল্ট জামিনে মুক্তি দেওয়া হয়েছিল।
২০১৮ সালে পুনের কাছে একটি গ্রামে সাম্প্রদায়িক হিংসার সঙ্গে জড়িত ভীমা কোরেগাঁও মামলায় ১৬জনকে গ্রেফতার করা হয়। আনন্দ তেলতুম্বদেকে ১৮ নভেম্বর জামিন দেওয়ার পরেই সুপ্রিম কোর্টে জরুরি ভিত্তিতে আবেদন করা হয়। এরপরেই সুপ্রিম কোর্ট আনন্দ তেলতুম্বদের জামিন এক সপ্তাহের জন্য স্থগিতাদেশ দেয়।
সুপ্রিম কোর্টে শুক্রবার শুনানির সময় জিজ্ঞাসা করা হয়, কেন তেলতুম্বদেকে বেআইনি কার্যকলাপ (প্রতিরোধ) আইনের অধীনে অভিযুক্ত করা হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে ইউএপিএ ধারাগুলো কার্যকর করার জন্য অভিযুক্তের বিরুদ্ধে কী প্রমাণ রয়েছে বলেও এনআইএকে প্রশ্ন করা হয়। যে অনুষ্ঠানের জন্য তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছি, তা দলিতদের একটি অনুষ্ঠান ছিল।
দলিতদের সমাবেশ কি নিষিদ্ধ কার্যকলাপের মধ্যে পড়ে বলেও প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ প্রশ্ন তোলেন।
অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল ঐশ্বরিয়া ভাটি এনআইয়ের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন। তিনি বলেন, অভিযুক্তের কাছ থেকে একাধিক চিঠি ও অন্যান্য নথি পাওয়া গিয়েছে।
যার মাধ্যমে বোঝা যায়, তিনি দেশের আইন শৃঙ্খলা নষ্টের পরিকল্পনা করছিলেন। একটি চিঠিতে নকশাল আন্দোলনের উল্লেখ পাওয়া যায়। সেখানে কীভাবে ছাত্রদের উপস্থিতি বাড়ানো যায় তা চিঠিতে অভিযুক্ত বলেছিলেন বলে সলিসিটর জেনারেল ঐশ্বরিয়া দাবি করেন।প্রসঙ্গত, কর্মী ভার্নন গনসালভেস, রোনা উইলসন, সুরেন্দ্র গ্যাডলিং এবং অধ্যাপক শোমা সেন সহ অন্যান্য অভিযুক্তরা কারাগারে রয়েছেন।