হাসপাতালের ICU-তে ছেলের বিয়ে সম্পন্ন হতেই প্রয়াত অসুস্থ বাবা
এমনটা হয়তো সিনেমার পর্দায় প্রায়ই দেখা যায়, কিন্তু এতো সিনেমা নয়, কঠিন বাস্তব। দীনানাত মঙ্গেশকর হাসপাতাল এক অনন্য ঘটনার সাক্ষী রইল। যা কোনওদিনও হয়নি হাসপাতালের ইতিহাসে এদিন তাই হল।
সাতারা, ২০ ডিসেম্বর : এমনটা হয়তো সিনেমার পর্দায় প্রায়ই দেখা যায়, কিন্তু এতো সিনেমা নয়, কঠিন বাস্তব। দীনানাত মঙ্গেশকর হাসপাতাল এক অনন্য ঘটনার সাক্ষী রইল। যা কোনওদিনও হয়নি হাসপাতালের ইতিহাসে এদিন তাই হল।
হাসপাতালের আইসিইউ-তে যেখানে রোগীর সঙ্গে দেখা করতে একসঙ্গে ২ জনের বেশি ঢুকতেও পারেন না, সেখানেই ডজন খানেক আত্মীয় নিয়ে বিয়ে হল এমবিএ পাত্র-পাত্রীর।
দ্যানেশ দেব এবং সুবর্ণা কালাঙ্গের বিয়ে হওয়ার কথা ছিল রবিবার। দ্যানেশ-সুবর্ণা দুজনেই এমবিএ পাশ করে বেসরকারি সংস্থায় কর্মরত। পুণেতে বিয়ের জন্য হল না পাওয়ায় সাতারায় বিয়ের সিদ্ধান্ত নেয় তারা। কিন্তু আচমকাই ভাগ্যের ফেরে বদলে দিতে হয় বিয়ের স্থান।
দ্যানেশের বাবা নন্দকুমার জেব হৃদরোগের সমস্যায় এক সপ্তাহ আগে হাসপাতালে ভর্তি হন। বিয়ের চারদিন আগে তাঁর শারীরিক অবস্থার দ্রুত অবনতি হতে শুরু করে। চিকিৎসরকরা সিদ্ধান্ত নেন নন্দকুমারকে ভেন্টিলেশনে রাখতে হবে। পাত্র-পাত্রী উভয়ের বাড়ি থেকেই বিয়ে পিছিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সুবর্ণার এক আত্মীয় ডাঃ রাজেশ পাওয়ার ওই হাসপাতালেই কর্মরত। তাঁর কথায়, দুই পরিবারের তরফেই অনুরোধ করা হয়, নন্দকুমারের উপস্থিতিতেই দ্যানেশ ও সুবর্ণা বিয়ে করতে চায়। নন্দকুমারের শারীরিক অবস্থায় হাসপাতালে বিয়ে ছাড়া আর কোনও উপায় ছিল না। আইসিইউ থেকেও তাঁকে বের করা সম্ভব ছিল না কারণ তাঁকে ভেন্টিলেশনে রাখা হয়েছিল। তাই বারবার অনুরোধ করায়, এবং পরিবারের মানসিক অবস্থিতি বুঝতে পের আইসিইউ-তেই বিয়ের অনুমতি দেওয়া হয়।
চিকিৎসকরাই আইসিইউ-র মধ্যেই বিয়ের ব্যবস্থা করেন, যাতে রোগী ও তাঁর পরিবারের ইচ্ছাপূর্ণ হয়। রবিবারের বদলে সোমবার সকাল ১১ টা নাগাদ দুই পরিবারের ১০-১২ জন ঘনিষ্ঠ সদস্য নিয়ে বিয়ের অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়। নন্দকুমারের আশীর্বাদও নেন নবদম্পতি।
কিন্তু বিয়ে শেষ হওয়ার এক ঘন্টার মাথায়, শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন নন্দকুমার। তাঁর পুত্রবধূ সুবর্ণার কথায়, "শুধু ছেলের বিয়ের চাক্ষুস করতেই মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে প্রাণ আটকে রেখেছিলেন বাবা। অনুষ্ঠান শেষ হতেই মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়লেন।"