মমতার জোট ভেস্তে দিতে ‘খোলা’ চিঠি ‘চাণক্যে’র! সংকট-মোচনের চেষ্টা বিজেপির
উত্তরপ্রদেশে উপনির্বাচনে হেরে মুসড়ে পড়েছিল বিজেপি। এরপর রাজ্যসভা নির্বাচনে পাল্টা দিয়ে অক্সিজেন পেতেই আবার স্বমহিমায় বিজেপির সভাপতি অমিত শাহ।
উত্তরপ্রদেশে উপনির্বাচনে হেরে মুসড়ে পড়েছিল বিজেপি। এরপর রাজ্যসভা নির্বাচনে পাল্টা দিয়ে অক্সিজেন পেতেই আবার স্বমহিমায় বিজেপির সভাপতি অমিত শাহ। তিনি এবার চিঠি লিখলেন টিডিপি প্রধান চন্দ্রবাবু নাইডুকে। তিনি লেখেন- 'চন্দ্রবাবু নাইডুর এই সিদ্ধান্ত একতরফা এবং দুর্ভাগ্যজনক।' তিনি ফের একবার বিবেচনার আর্জি জানান অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীকে।
উল্লেখ্য, অন্ধ্রপ্রদেশের জন্য 'স্পেশাল স্ট্যাটাসে'র দাবিতে চন্দ্রবাবু নাইডু বিজেপির বিরুদ্ধে তোপ দেগে এনডিএ ত্যাগ করেন। তারপরই দেশজুড়ে বিকল্প ফ্রন্টের আবহ তৈরি হয়। এবং বিজেপির উপনির্বাচনে হারের ধাক্কা সামলে উঠতে না উঠতেই চন্দ্রবাবু নাইডু-সহ এনডিএ-সঙ্গীদের তির্যক বাণে বিদ্ধ হতে থাকে বিজেপি।
অবশেষে রাজ্যসভা নির্বাচনে বিরোধী বিধায়কদের ভাঙিয়ে উত্তরপ্রদেশে সপা-কংগ্রেস-বসপাকে পাল্টা দেওয়ার পর বিজেপি শরিক-ম্যানেজে আসরে নামল। আর সেই লক্ষ্যে বিজেপির চাণক্য একেবারে চিঠি লিখে ফেললেন চন্দ্রবাবু নাইডুকে। তিনি তাঁর চিঠিতে ২০১৯-এর আগে স্পষ্ট বার্তা দিলেন এনডিএ-ত্যাগী দলগুলির উদ্দেশ্যে।
তেলেগু দেশম পার্টির এনডিএ ছাড়ার পর থেকে একপ্রকার মৌনতাই অবলম্বন করেছিলেন বিজেপির দুই প্রধান মুখ নরেন্দ্র মোদী ও অমিত শাহ। কিন্তু তাতে যে ফাটল দীর্ঘতর হচ্ছে, সেই আভাস পেয়ে এবার মৌনতা ভেঙে ময়দানে নামলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ।
তিনি চিঠিতে লেখেন, 'টিডিপি-র এনডিএ ছাড়ার সিদ্ধান্তে তিনি উদ্বিগ্ন। একেবারেই একতরফা ভাবে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। রাজনৈতিক উদ্দেশ্য চরিতার্থ করতেই কোনও এক শ্রেণি এর পিছনে মদত দিচ্ছে। ফলে রাজ্যের উন্নয়ন বিঘ্নিত হতে পারে। তাই এই সিদ্ধান্তের ব্যাপারে আরও একবার ভেবে দেখুন।'
তিনি আরও লেখেন, 'প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী অন্ধ্রপ্রদেশের উন্নয়নের জন্য সমস্তরকম সহায়তা করেছেন। ভবিষ্যতেও বিজেপি রাজ্যের পাশে থাকবে। বিশেষ মর্যাদায় যে সমস্ত সুযোগ দেওয়া যায়, সেইরকম আর্থিক প্যাকেজই দেওয়া হবে। কিন্তু বিশেষ মর্যাদার কথা ঘোষণা করা সম্ভব নয়। তাই বিষয়টি আর একবার ভাবার আবেদন রইল।'
অমিতের এই চিঠিকে বিরোধীরা ফ্যাসাদে পড়ে ম্যানেজ করার চেষ্টা বলে মনে করছেন। কারণ, ওয়াইএসআর কংগ্রেস বিজেপির বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনার পর চন্দ্রবাবু নাইডুর টিডিপিও অনাস্থায় সমর্থন জারি রেখেছে। তার উপর কংগ্রেসও এবার অনাস্থা প্রস্তাব দিতে চলেছে সংসদে।
আগামী ২৭ মার্চ কংগ্রেসের তরফে অনাস্থা আনা হবে বলে জানিয়েছেন বিরোধী দলনেতা মল্লিকার্জুন খাড়গে। তাই বিজেপি সভাপতির এই প্রয়াস বিরোধীদের ছত্রখান করার একটা পরিকল্পনা মাত্র। এমনটাই মনে করছে কংগ্রেস, তৃণমূল কংগ্রেস-সহ বিরোধী দলগুলি।