বিজেপি সভাপতি হলেন নরেন্দ্র মোদীর 'ডান হাত' অমিত শাহ
হিন্দি বলয়ের দুই রাজ্য উত্তরপ্রদেশ ও বিহার বরাবরই নির্ধারক শক্তি দিল্লিতে সরকার গড়ার ক্ষেত্রে। দলের একাংশের তীব্র আপত্তি সত্ত্বেও এই দুই রাজ্যে সংগঠন দেখভালের দায়িত্ব অমিত শাহকে দিয়েছিলেন নরেন্দ্র মোদী। ফল? উত্তরপ্রদেশের ৮০টি লোকসভা আসনের ৭৩টি পায় বিজেপি-আপনা দল জোট। আর বিহারে ৪০টি আসনের মধ্যে বিজেপি-লোক জনশক্তি পার্টি পায় ৩১টি আসন। বিজেপি একাই পেয়েছে ২২টি আসন। এটা অমিত শাহের সাংগঠনিক দক্ষতা ছাড়া পাওয়া সম্ভব ছিল না বলে এখন মানছেন সবাই। পাশাপাশি, ২০০২ সালের গোধরা দাঙ্গার পর মুসলিম ভোটব্যাঙ্কের কথা ভেবে যে রামবিলাস পাসোয়ান এনডিএ ছেড়ে বেরিয়ে গিয়েছিলেন, তাঁকেও শরিক হিসাবে ফিরে পেতে সমর্থ হন অমিত শাহ। বিহারে নীতীশ কুমারের দুর্গে ধস নামিয়ে দেয় বিজেপি-এলজেপি জোট।
আরও দেখুন: বিজেপির নতুন সভাপতি অমিত শাহ: মাহেন্দ্রক্ষণের কিছু ঝলক
রাজনাথ সিং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হওয়ার পর কে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বভার সামলাবে, তা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়। মুরলীমনোহর যোশীর নাম উঠে আসছিল। কিন্তু নরেন্দ্র মোদী চাইছিলেন অমিত শাহ ওই পদে বসুন।
প্রথমত, ৫০ বছরের অমিত শাহ অন্যান্য প্রতিদ্বন্দ্বীদের থেকে অপেক্ষাকৃত তরুণ। দ্বিতীয়ত, তাঁর সাংগঠনিক দক্ষতা প্রশ্নাতীত। তৃতীয়ত, এ বছরের শেষেই হরিয়ানা ও মহারাষ্ট্রে বিধানসভা ভোট। পরের বছর ভোট ঝাড়খণ্ড ও জম্মু-কাশ্মীরে। তাই সভাপতি পদে ক্ষুরধার বুদ্ধিসম্পন্ন ও দাপুটে ব্যক্তিত্বযুক্ত একজনকে দরকার ছিল। তা ছাড়া, আগামী ২০১৬ সালে পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা নির্বাচন। বিজেপি এই নির্বাচনকে পাখির চোখ করেছে। তাই অমিত শাহের দক্ষতা পশ্চিমবঙ্গেও কাজে লাগাতে চায় বিজেপি। মূলত এই তিনটি কারণে নরেন্দ্র মোদী বলেছিলেন, অমিত শাহেরই বিজেপি সভাপতি হওয়া উচিত। এতে সিলমোহর দেন সদ্যপ্রাক্তন সভাপতি রাজনাথ সিং। অরুণ জেটলিও সমর্থন করেন এই যুক্তিকে।
১৯৬৪ সালে মুম্বইয়ে জন্ম অমিত শাহের। ১৯৯৭, ১৯৯৮, ২০০২ এবং ২০০৭ সালে পরপর চারবার গুজরাতে সরখেজ থেকে তিনি বিধায়ক হন। ২০১২ সালে নারানপুরা বিধানসভা আসনে লড়েও জয়ী হন। তিনি নরেন্দ্র মোদীর 'ছায়াসঙ্গী' হিসাবে পরিচিত। অমিত শাহ বিজেপি সভাপতি হওয়ায় দলের ওপর নরেন্দ্র মোদীর নিয়ন্ত্রণ আরও আঁটোসাঁটো হল।