মোদী সরকারের আমলে গণপিটুনির ঘটনা বাড়েনি, দাবি অমিত শাহের
মোদী সরকারের যুগে গণপিটুনির ঘটনা বাড়েনি বলে দাবি করলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের। তিনি বরং জানান, বর্তমানে গণপিটুনিকে রাজনৈতিক রঙ দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে ৷

সর্বভারতীয় এক সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাতকারে অমিত শাহ বলেন, 'যদি কোনও ব্যক্তি খুন হন, তাহলে আমাদের কাছে অভিযুক্তকে শাস্তি দেওয়ার জন্য ৩০২ ধারা রয়েছে। এটা সব ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। বিজেপি সরকার এই ঘটনাগুলির তদন্ত করছে এবং সন্দেহভাজনদের বিরুদ্ধে চার্জশিটও নিয়ে আসছে। এখন আপনি যদি একে একটি রাজনৈতিক কোণ দিতে চান বা আপনি এটাকে সমাজের মন্দ হিসাবে বুঝতে চান, তবে সমাজকেই এটা সিদ্ধান্ত নিতে দিন।' সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন জায়গায় একাধিক মানুষ গণপিটুনির শিকার হয়েছেন। বেশিরভাগ ঘটনাই গো হত্যাকে কেন্দ্র করে ঘটেছে। উন্মত্ত জনতা মুসলিম সম্প্রদায়ের ওপর চড়াও হয়ে ভারত মাতা কি জয় বা জয় শ্রী রাম না বলার জন্য মারধর করেছে।
এই গণপিটুনি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে সুপ্রিম কোর্ট গত বছর কেন্দ্র সরকারকে আইন নিয়ে আসার কথা বলে। কিন্তু এখনও সেই আইন নিয়ে আসেনি সরকার। যদিও অমিত শাহের দাবি, গণপিটুনি নিয়ে আইন রয়েছে এবং তিনি আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে জানান যে সচেতনতা বাড়লেই এ ধরনের ঘটনা সমাধান হওয়া সম্ভব। তিনি বলেন, 'গণপিটুনি নিয়ে আইন রয়েছে। এই ঘটনায় ঠিকঠাক মতো ওই আইনের আওতায় তদন্ত হওয়া দরকার। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকও এ বিষয়ে একটি উপদেষ্টা কমিটি চালু করেছে।'
গণপিটুনি রোধ করার জন্য যে প্যানেল গঠন করা হয়েছিল তারই প্রধান অমিত শাহ।
অথচ তিনি সাক্ষাতকারে জানান যে বিজেপি সরকারের আমলে গণপিটুনি শুধুমাত্র ঘটমান বিষয় নয়। আইন-শৃঙ্খলার ব্যাপারেও রাজনৈতিক রং লাগানো হচ্ছে। সম্প্রতি সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্র থেকে আসা ৪৯ জন জনপ্রিয় ব্যক্তিত্ব প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে এই গণপিটুনি নিয়ে চিঠি লেখেন। এমনকী বিজয়দশমীর দিন আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবতের বক্তব্যেও এই গণপিটুনি ইস্যু উঠে আসে। যদিও তিনি এই গণপিটুনিকে পাশ্চাত্য প্রথা বলে অ্যাখা দেয়।
অমিত শাহ বরং গণপিটুনিকে একরকম সমর্থন করে বলেন, 'যদি গ্রামে কোনও লুটপাট হয় এবম গ্রামবাসীর হাতে চোর ধরা পড়ে যায় তবে তো তাকে মার খেতেই হবে এবং সেই মারে যদি সে মারা যায়, সেই ঘটনা তো অতীতেও অনেক ঘটেছে। শুধুমাত্র গণপিটুনিকেই রাজনৈতিক রং লাগানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে জিজ্ঞাসা করা হয় যে গণপিটুনির রোষে বেশিরভাগই দলিত ও মুসলিমকেই নিশানা করা হয়। এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'এরকমটা ঠিক নয়। গণপিটুনির ঘটনা সাধারণত গরিবদের সঙ্গে হয়ে থাকে, কোনও বিশেষ জাতির সঙ্গে নয়।'