
আমার দেখা সবচেয়ে গণতান্ত্রিক প্রধানমন্ত্রীদের একজন হলেন নরেন্দ্র মোদী, বললেল অমিত শাহ
২০১৪-র আগে গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী এবং দু'হাজার চোদ্দোর পর প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নরেন্দ্র মোদীর সমালোচনায় বিরোধীরা 'স্বৈরাচারী' তকমা লাগিয়ে থাকে৷ এদিন সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে এই 'স্বৈরাচারী' বক্তব্যেরই বিরোধিতা করলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ৷ কেন্দ্রে মোদী জমানার শুরু থেকেই শক্তিশালী শাহ-মোদী জুটির রাজনৈতিক মোকাবিলা করতে প্রতি পদে বেগ পেতে হচ্ছে বিরোধীদের। মোদী-শাহ জুটির একে অপরের প্রতি আস্থারও উদাহরণ দেওয়া হয় ভারতীয় রাজনীতিতে। রবিবার এহেন অমিত শাহকে পাবলিক ব্রডকাস্টার সংসদ টিভির পক্ষ থেকে একজন সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, নরেন্দ্র মোদীকে অনেকে 'ডিকটেটর/স্বৈরাচারী' বলেন এবিষয়ে আপনি কী বলবেন?

স্ট্রেট ব্যাটে সাংবাদিকের প্রশ্নের উত্তর দিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তাঁর পরিচিত সবচেয়ে গণতান্ত্রিক নেতাদের একজন। তিনি আরও বলেন, আমি মোদীজির সঙ্গে বিরোধী দলের পাশাপাশি সরকারে কাজ করার সুযোগ পেয়েছি। তার মতো শ্রোতার সঙ্গে আমার আর অন্য কোথাও কখনো দেখা হয়নি। মিটিং যে বিষয়েই হোক না কেন, মোদীজি প্রয়োজনের তুলনায় কম কথা বলেন এবং ধৈর্য সহকারে সবার কথা শোনেন। তিনি ব্যক্তির মতামতের মূল্য বিবেচনা করেন এবং তারপর একটি সিদ্ধান্ত নেন। তাই তাঁকে স্বৈরাচারী বলে অভিযোগের ধুয়ো তোলার চেষ্টা করা হয় তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন৷
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, মোদীজি অত্যন্ত গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে দেশের মন্ত্রিসভা পরিচালনা করেন। দেশের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো কোনওভাবেই পাবলিক ফোরামে আলোচনা করা সম্ভব হয় না তাই অনেকে ভুল ধারণা পোষণ করেন যে তিনিই সমস্ত সিদ্ধান্ত নেন, কিন্তু বিষয়টি একদমই সেরকম নয়৷ তিনি যে কোনও বিষয় নিয়ে খোলাখুলি আলোচনা পছন্দ করেন। সবার কথা শোনেন এবং ভালো -মন্দ দিকগুলো মূল্যায়ন করেন। তবে শেষ সিদ্ধান্ত তাঁকেই নিতে হয় কারণ তিনি দেশের প্রধানমন্ত্রী৷
সংসদ টিভিতে বিরোধীদের উদ্দেশ্য অমিত শাহ বলেন, এটা দুর্ভাগ্যজনক যে, যারা ভিন্ন রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করেন তাঁরা দেশের প্রধানমন্ত্রীর ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য সত্যকে বিকৃত করার চেষ্টা করছেন।
নরেন্দ্র মোদীর অধীনে কেন্দ্রে বিজেপি ক্ষমতায় আসার পর থেকে বেশ কয়েকজন বিরোধী নেতা প্রধানমন্ত্রীকে স্বৈরাচারী বলেছেন৷ বা বিভিন্ন সময় মোদী সরকারের কাজের সমালোচনা করে তাঁকে 'তুঘলক'ও বলতে ছাড়েননি৷ নোটবন্দি, ৩৭০ ধারা বাতিল থেকে শুরু করে কৃষিবিল নিয়ে মোদীর সমালোচনায় মুখর হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী৷ এ বিষয়ে শাহ-এর স্পষ্ট বক্তব্য হল, প্রধানমন্ত্রী মোদী কিছু ঝুঁকি নিলেও নীতি ও শাসন সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় তিনি তার ইচ্ছা চাপিয়ে দেন না। প্রধানমন্ত্রী 'ইন্ডিয়া ফার্স্ট' (সর্বপ্রথম ভারত) লক্ষ্য নিয়ে কাজ করেন। তিনি অতীতে অনেকবার বলেছেন যে আমরা (বিজেপি) দেশ পরিবর্তন করার জন্য ক্ষমতায় এসেছি, শুধু সরকার চালানোর জন্য নয়। 'সবকা সাথ, সবকা বিকাশ, সবকা বিশ্বাস' আমাদের লক্ষ্য বলেও এদিন উল্লেখ করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
কংগ্রেস এবং সমাজবাদী পার্টিকে কটাক্ষ করে শাহ অভিযোগ করেন যে কিছু দল স্বজনপ্রীতির মতাদর্শ গ্রহণ করেছে এবং দেশ শাসন করাকে তাদের জন্মগত অধিকার বলে মনে করে। তিনি দাবি করেন, প্রধানমন্ত্রী মোদী ক্ষমতায় এসেছেনই এই ধরণের রাজনীতির বংশবাদের পরিবর্তন করার জন্য। যার কারণেই বিরোধীগুলি তার চরিত্রকে কালিমালিপ্ত করার চেষ্টায় লেগে থাকে।
