চিন সীমান্তের অদূরেই অসম-মিজোরাম উত্তেজনা উদ্বেগ বাড়িয়েছে নয়াদিল্লির, নেপথ্যে কোন ফ্যাক্টর
চিন সীমান্তের অদূরেই অসম-মিজোরাম উত্তেজনা উদ্বেগ বাড়িয়েছে নয়াদিল্লির, নেপথ্যে কোন ফ্যাক্টর
ভারতের ভৌগলিক সীমানার ৮ শতাংশ দখলে রেখেছে উত্তর পূর্বা সীমান্ত। যে সীমান্তে চিনের আগ্রাসী নজর রয়েছে বহু দশক ধরে। এবার সেই উত্তরপূর্বের সীমান্তে অসম ও মিজোরামের সংঘাত কার্যত দিল্লির জন্য বেশ মাথাব্যথার কারণ হয়ে উঠছে। সাম্প্রতিক লাদাখ সংঘাতের পরিস্থিতিতে চিন সীমান্তের দুই রাজ্যর মধ্যে সীমানা নিয়ে লড়াই কেন ভারতের জন্য উদ্বেগ তৈরি করতে পারে, দেখা যাক।
নিরাপত্তাজনিত উদ্বেগ!
প্রসঙ্গত, সিকিমকে সঙ্গে নিলে উত্তরপূর্বের সেভেন সিস্টারর্সের সঙ্গে অষ্টম অংশ জোড়া লাগে। অসম, মেঘালয় , অরুণাটল প্রদেশ , ত্রিপুরা, মিজোরাম, নাগাল্যান্ড, মনিপুরের সঙ্গে সিকিম সীমান্তের ঘাড়ে কার্যত নিঃশ্বাস ফেলছে চিনের লালফৌজের গতিবিধি। সেই জায়গা থেকে উত্তর পূর্বের রাজ্য মিজোরাম ও অসমের মধ্যে এলাকা দখলকে কেন্দ্র করে রক্তপাত চিনকে স্ট্র্যাটেজিক সুবিধা দিতে পারে বলে মনে করছেন অনেকেই।
চিকেন নেক ও উদ্বেগ
প্রসঙ্গত, পশ্চিমবঙ্গের 'চিকেন নেক' বা 'শিলিগুড়ি করিডর' মূলত ২৩ কিলোমিটার চওড়া। যার সঙ্গে নেপাল, ভূটান, চিন, মায়ানমার ও বাংলাদেশের ৫০০০ কিলোমিটারের সীমান্ত ভাগ করেছে ভারত। আর এই জায়গাটিই লাদাখ পরবর্তী পরিস্থিতিতে বেশ উদ্বেগে রাখছে ১৩০ কোটির দেশকে। এর কাছেই রয়েছে তিব্বত ও বিতর্কিত এলাকা ডোকলাম।
সীমান্ত সংঘাত ও উত্তরপূর্ব
প্রসঙ্গত, ক্রমেই দক্ষিণ এশিয়ার বুকে বড় শক্তি হিসাবে আস্ফালন বাড়াতে শুরু করেছে চিন। সেই জায়গা থেকে ভারতের উত্তর পূর্বে সীমান্ত ইস্যুতে এখনও বেজিং বনাম দিল্লি দ্বন্দ্ব চলছে। এই সীমান্তগুলিতে উস্কানি দিয়ে ১৯৬২ এর মতো করে ফের একবার লালফৌজ পদব্রজে এগিয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা থেকেই গিয়েছে।
উগ্রবাদ ও বিদ্রেহী সমস্যা
প্রসঙ্গত, চিন ও ভারতের মধ্যে উত্তরপূর্বের সীমান্তের মাঝে বড় এলাকা জুড়ে জঙ্গল। সেখানে বহু ভারত বিরোধী বিদ্রোহীদের আঁতুর ঘর রয়েছে বলে খবর। যাদের ক্রমাগত সমর্থন জোগাচ্ছে চিন। এদিকে, উগ্রবাদীরাও অস্ত্র সজ্জায় বেশ সেজে উঠছে। এদিকে, নাগা, মিজো ও উলফা সমস্যায় যখন ভারত ধীরে ধীরে উগ্রবাদের নাগপাশে জড়াতে শুরু করেছিল, তখন ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ গঠিত হয়। যার জেরে ভারত নিরাপত্তার দিক থেকে খানিকটা আস্বস্ত হয় উত্তরপূর্ব সীমান্ত ঘিরে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বাংলাদেশ বহু সময় উত্তরপূর্বে ভারতকে সাহায্য করেছে।
বিভেদ ও উদ্বেগ
বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের ভৌগলিক বিভেদ হতেই ত্রিপুরা অনেকটাই এককোণে চলে যায়। পশ্চিমবঙ্গের পর বাংলাদেশ পেরিয়ে ভারতের উত্তরপূর্বের রাজ্যগুলি আসে। ফলে আর্থিক দিক থেকে তাদের পিছিয়ে পড়া নিয়ে বহু ফ্যাক্টর উঠে আসে। সেই জায়গা থেকে উপজাতি অধ্যুষিত উত্তরপূর্বে নানান সমস্যা দেখা যায়। ফলে বিভেদের জেরেই রাজ্যে রাজ্যে সংঘাত শুরু হয়।
কেন উদ্বেগে কেন্দ্র
যেভাবে অসম বনাম মিজোরাম সংঘাতে রক্ত ঝরেছে , তাতে মৃত্য়ু হয়েছে ৫ জন পুলিশের। বিষয়টি মোটেও ভালোভাবে নেয়নি দিল্লি। একদিকে যখন উত্তরপূর্ব ভারতের দিকে ক্রমেই চিনের ফোকাস বাড়ছে, ঠিক তখন এমন পরিস্থিতি বিপাকে ফেলতে পারে বলে মনে করছেন অনেকে।