তিস্তা নিয়ে চিনের প্যাঁচের পরই বাংলাদেশ নিয়ে মোদীর তাবড় বার্তা! হাসিনার সঙ্গে বৈঠকে কী উঠে এল
তিস্তা নিয়ে চিনের ধূর্ত চালের পরই বাংলাদেশ নিয়ে মোদীর তাবড় বার্তা! হাসিনার সঙ্গে বৈঠকের কোন বক্তব্য প্রধানমন্ত্রীর
তিস্তা চুক্তি নিয়ে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে বহু দিনের টালবাহানা রয়েছে। প্রায় তিন দশক পার করলেও, এই নদীকে কেন্দ্র করে জল ভাগাভাগির ইস্যুতে বহু কূটনৈতিক গতিবিধি দেখা গিয়েছে দুই দেশের মধ্যে। এরই ফাঁকে লাদাখ আগ্রাসনের সময় দেখা যায় চিন, তিস্তা নিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে একটি নতুন প্রকল্পের দিকে হাত বাড়িয়েছে। এমন এক পরিস্থিতিতে এদিন বাংলাদেশের রাষ্ট্র প্রধান শখ হাসিনার সঙ্গে মোদীর বৈঠকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী দিলেন তাবড় বার্তা।
মোদীর বার্তা বাংলাদেশের প্রতি
মুক্তিযুদ্ধের বিজয় দিবসের পরদিনই আজ ভারত ও বাংলাদেশের রাষ্ট্রপ্রধানরা ভার্চুয়াল মিটে বসে দ্বিপাক্ষিক একাধিক প্রকল্পের সূচনা করেন। আর এই সূচনার হাত ধরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেন, ভারতের 'নেইবার ফার্স্ট' নীতির অন্যতম স্তম্ভ বাংলাদেশ। পাশাপাশি মুক্তিযুদ্ধের প্রসঙ্গ তুলে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপ্রধান হাসিনাকে বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন মোদী। '৭১ এ পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের লড়াইয়ে ভারত কীভাবে বাংলাদেশকে সমর্থন করে, সেই প্রসঙ্গও এই বার্তায় উস্কে যায়। ফলে সম্পর্কের খতিয়ানের দিক থেকে ভারত যে বাংলাদেশের 'পুরনো বন্ধু' তা ফের একবার স্মরণ করিয়ে দেন মোদী।
তিস্তা, চিন ও ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক
ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে যখন গত কয়েক দশক ধরে তিস্তা চুক্তি নিয়ে যখন টালবাহানা চলছে, তখন বাংলাদেশে বড়সড় প্রজেক্ট শুরু করেছে চিন। 'তিস্তা রিভার কম্প্রিহেনসিভ ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড রেস্টোরেশন প্রজেক্ট' নামের এই প্রকল্পে চিন প্রায় ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের ঋণ বাংলাদেশকে দিয়েছে। যা ঠিক লাদাখে ভারত-চিন সংঘাতের সময় বাস্তবায়িত হয়। ফলে বেজিংয়ের এমন পদক্ষেপ থেকে তাদের উদ্দেশ্য অনুমেয়।
নদী নিয়ে চিনের প্যাঁচ
তিস্তার ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে ঘুঁটি করে মূলত, চিন ভারতের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানানোর চেষ্টা করে। তিস্তা নিয়ে বাংলাদেশ যেভাবে দিল্লির পদক্ষেপে মনক্ষুণ্ণ, সেই সুযোগের সদ্ব্যাবহার করে বেজিং। এই প্রেক্ষাপটে তিস্তা নিয়ে চিনের ঋণ বাংলাদেশের মন জয়ে সমর্থ হয়। যার হাত ধরে বাংলাদেশকে হাতিয়ার করে ভারতের দিকে চোখ রাঙানি বাড়ায় বেজিং। এদিকে, শুধু তিস্তা নয়, লাদাখে গালওয়ান নদীতে ব্রিজ নির্মাণ করে তার গতিপথে রোখা, ব্রহ্মপুত্রে জলের নিয়ন্ত্রণের জন্য তাতে বাঁধ দেওয়া সহ একাধিক প্যাঁচ রয়েছে চিনের দখলে।
বঙ্গবন্ধু-মহাত্মার কথা স্মরণ করিয়ে মোদীর তাবড় বার্তা
চিনের আগ্রাসনের এই সমস্ত প্রেক্ষাপটে এদিন ভারত বাংলাদেশের পুরোন দিনের কথা স্মরণ করান মোদী। 'বঙ্গবন্ধু-বাপু' প্রদর্শনী উদ্বোধন করে মোদী বলেন, মহাত্মা ও বঙ্গবন্ধুই যুব সমাজকে অগ্রগতির পথে নিয়ে যাবে। পাশাপাশি ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা, সংযোগ বাড়াতে একাধিক প্রকল্পের উদ্বোধন করে মোদী-হাসিনা।
হলদিবাড়ি-চিলাহাটি রেল ও ৭ প্রকল্প
চিন যেখানে বাংলাদেশকে নিজের শিবিরে নিতে মরিয়া, সেখানে ভারত , বাংলাদেশের সঙ্গে বন্ধ হয়ে যাওয়া রেলরুট খুলে বাজিমাত করেছে। ১৯৬৫ সালে পাকিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধের পর হলদিবাড়ি-চিলাহাটি রেল যোগাযোগ বন্ধ ছিল। এরপর এদিন নরেন্দ্র মোদী ও শেখ হাসিনা এই রুট ফের উদ্বোধন করেন। এছাড়াও বস্ত্র, কৃষি, হাইড্রোকার্বন সহ একাধিক ক্ষেত্রে দুই দেশের সহযোগিতার খাতিরে ৭ টি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।