গাছ কাটা থেকে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ, পুনেতে মোদীর জনসভা ঘিরে বিতর্ক; সরব বিরোধীরা
শহরকে আরও বেশি উন্নত করতে মেট্রোর কাজ শুরু হয়েছিল মুম্বইতে। এর জেরে শহরের আরে কলোনিতে জোর কদমে চলছিল গাছকাটার কাজ।
শহরকে আরও বেশি উন্নত করতে মেট্রোর কাজ শুরু হয়েছিল মুম্বইতে। এর জেরে শহরের আরে কলোনিতে জোর কদমে চলছিল গাছকাটার কাজ। গাছ কাটার প্রতিবাদে বিক্ষোভ প্রদর্শন শুরু হয় যা শেষ পর্যন্ত গড়ায় সুপ্রিমকোর্ট পর্যন্ত। সেই বিতর্কের রেষ কাটতে না কাটতেই ফের বৃক্ষচ্ছেদনের ঘটনা সেই মহারাষ্ট্রেই। স্থান পুনে। সৌজন্যে নরেন্দ্র মোদী। আসন্ন মহারাষ্ট্র বিধানসভা নির্বাচনের প্রচারে আজ পুনেতে এক জনসভায় ভাষণ রাখবেন প্রধানমন্ত্রী। অভিযোগ উঠেছে যে মোদীর এই জনসভার জন্য পুনেতে কাটা হচ্ছে প্রচুর গাছ। স্থানীয় সাংসদ তথা এনসিপি নেত্রী বন্দনা চৌহান অভিযোগ আনেন, প্রধানমন্ত্রীর জনসভার জন্য পুনের শ্রী পরশুরাম কলেজের মাঠের সুবাবুল গাছগুলিকে কেটে ফেলা হচ্ছে। এদিকে গাছ কাটার বিতর্ক ছাড়াও যোগ হয়েছে আরও একটি বিতর্ক। মোদীর পুনে সফর ঘিরে ইতিমধ্যেই নিরাপত্তার চাদরে ঘিরে ফেলা হয়েছে গোটা শহরকে। পাশাপাশি গাড়ি চলাচলের ক্ষেত্রে জারি করা হয়েছে বিধিনিষেধ। আজ বেলা ১২টা থেকে শুরু হওয়া ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ চলবে আজ মাঝরাত পর্যন্ত। এতে বেড়েছে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ। এবিষয়েও সরব হয়েছে বিরোধীরা।
অবশ্য এনসিপি নেত্রীর এই অভিযোগের সাফাই শোনা যায় কেন্দ্রীয় পরিবেশ বিষয়ক মন্ত্রীর গলায়। মন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েরর এই বিষয়ে বলেন, "এটা এমন কোনও ঘটনা না। এর আগেও বহু প্রধানমন্ত্রীর সভার জন্য এরকম গাছ কাটার নজির রয়েছে। আগে এই বিষয়ে কেন কোনও সচেতনতা ছিল না? এবং যতবার আমরা কোনও গাছ কাটি আমরা তার থেকে বেশি বৃক্ষরোপণ করি। বনদপ্তরের এটাই নিয়ম। তাহলে এই বিষয়টিকে নিয়ে এত জলঘোলা কেন হচ্ছে?"
এদিকে গাছ কাটার বিষয়ে শ্রী পরশুরাম কলেজ কতৃপক্ষকে প্রশ্ন করা হলে তারা দাবি করে, গাছ কাটা হচ্ছে না। বরং মাঠের কয়েকটি গাছের ডালপালা ছাঁটা হচ্ছে। এবং এটি করা হচ্ছে ছাত্রদের সুরক্ষার কথা মাথাতে রেখেই। কারণ ওখানে যেই ছআত্ররা খেলে তারা সেই ডালপালাগুলো থেকে আহত হে পারে। জালপালা ছাঁটার সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর জনসভার কোনও যোগ নেই।
চলতি মাসের শুরুর দিকেই মেট্রোর কাজের জন্য মুম্বইয়ের আরে কলোনিতে ২৬০০ গাছ কেটে ফেলার অভিযোগ ওঠে। যার বিরুদ্ধে প্রতিবাদে নামেন পরিবেশবিদরা। সঙ্গে ছিলেন এলাকাবাসীরা। এরপরই রণক্ষেত্রের চেহারা নিতে শুরু করে এলাকা। শুরু হয় পুলিশ ও বিক্ষোভকারীদের সংঘাত। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে এলাকায় জারি করা হয় ১৪৪ ধারার।
পরবর্তীতে আরে কলোনির সেই ঘটনায় কড়া নির্দেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালত জানায়, আরে কলোনিতে আর গাছ কাটা যাবে না। পাশাপাশি, বিক্ষোভ প্রদর্শনের সময় যে সমস্ত পরিবেশবিদ , ও বাসিন্দাদের গ্রেফতার করা হয়েছে, তাঁদের ছেড়ে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। নির্বাচনের আগে মহারাষ্ট্র সরকারের কাছে এই রায় একপ্রকার ধাক্কা ছিল। এবার ফের গাছ কাটা নিয়ে বিরোধীদের তোপের মুখে মহারাষ্ট্রের ক্ষমতাশীন বিজেপি।