রাজধানীর বাতাসে বিষ! সুপ্রিম নির্দেশে আজ থেকে ফের অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হল স্কুলগুলি
দিল্লির বাতাসে বেড়েই চলেছে দূষণের মাত্রা। আর যা নিয়ে রীতিমত উদ্বিগ্ন সুপ্রিম কোর্ট। বৃহস্পতিবার পরিবেশ সংক্রান্ত মামলার শুনানিতে রাজধানীর মাত্রাছাড়া বায়ুদূষণ নিয়ে কেন্দ্র ও কেজরি সরকারকে তীব্র ভর্ৎসনা করেছেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি এন ভি রামানা।
দূষণ প্রসঙ্গে সুপ্রিম রায়
বায়ু দূষণ নিয়ে ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় ও সেই রাজ্যের সরকারকে ধমক দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি। 'কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না, অথচ দূষণ বেড়েই চলেছে' এই ভাষাতেই ভর্ৎসনা করেছে দেশের সর্বোচ্চ আদালত। সেইসঙ্গে স্কুলগুলি খলার প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, ' মধ্যবয়সী ব্যক্তিরা বাড়িতে বসে কাজ করছেন, অথচ ৪-৫ বছরের শিশুদের স্কুল যেতে হচ্ছে, যেটা ঠিক নয়।' এরপরেই শুক্রবার অর্থাৎ আজ থেকে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পুনরায় বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।
বায়ুদূষণ ও বিদ্যালয়
মূলত দিওয়ালির পর থেকেই দিল্লির বাতাসে বেড়েছে দূষণের মাত্রা। এছাড়াও খেত থেকে নতুন ফসল তোলার পর জমিতে পড়ে থাকা শুকনো ফসলের অবশিষ্টতে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার ঘটনাতেও অনেক মাত্রায় দূষণ ছড়ায় দিল্লিতে। ফলে গত ১ মাসে দূষণের মাত্রা ছিটেফোঁটাও কমেনি। তার উপর খুলে দেওয়া হয়েছে স্কুলগুলি। ফলে বাতাসের বিষ মিশছে খুদেদের শরীরে। আর এই কথা মাথায় রেখেই ফের জারি করা হল স্কুল বন্ধ করার নির্দেশিকা।
দূষণ ও স্কুল প্রসঙ্গে পরিবেশ মন্ত্রী
সুপ্রিম কোর্টের মন্তব্যের পরেই সাংবাদিকদের সামনে এই বিষয়ে বিস্তারিত জানালেন দিল্লির পরিবেশ মন্ত্রী গোপাল রাই। তিনি বলেন,' বাতাসে ক্রমশ বেড়ে চলা দূষণ এই মুহূর্তে গোটা দেশের মাথা ব্যথার কারণ।' পাশাপাশি তিনি আরও বলেন, ' করোনার ফলে দীর্ঘদিন লক ডাউনের জন্য বন্ধ রাখা হয়েছিল দিল্লির সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি। এই সবেমাত্র কিছুদিন আগে তা ফের খুলে দেওয়া হয়। সেইসময় দূষণমাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকলেও এখন দেখা যাচ্ছে চিত্রটা অন্যরকম। তাই দেশের সর্বোচ্চ আদালতের বক্তব্যকে সম্মান দিয়ে এবং জনস্বার্থে শুক্রবার থেকে ফের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিল কেজরিওয়াল সরকার।' তবে ক্লাসে উপস্থিত না থাকলেও ভার্চুয়ালি পড়াশোনা আগের মতই চলবে বলে জানান তিনি। শুক্রবার ৩ ডিসেম্বর থেকে রাজধানীতে স্কুল, কলেজ, কোচিং সেন্টার, মেধাবৃদ্ধির প্রতিষ্ঠান, সৃজন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আগামী নোটিস না পাওয়া পর্যন্ত বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
দূষিত বাতাস আসছে পাকিস্তান থেকে!
এদিকে সুপ্রিম কোর্টে দূষণ প্রসঙ্গে বয়ান দিতে গিয়ে বেফাঁস মন্তব্য যোগী সরকারের প্রতিনিধির। 'দূষণের ফলে প্রভূত ক্ষতি হচ্ছে উত্তরপ্রদেশের শর্করা ও দুগ্ধ শিল্পের।' এরই সঙ্গে সব দূষিত হাওয়া নাকি পাকিস্তান থেকে দিল্লিতে আসছে! এমনই মত প্রকাশ করলেন উত্তরপ্রদেশ সরকারর প্রতিনিধি। এরকম আলটপকা মন্তব্যের উত্তরে অবশ্য সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি এন ভি রামানা বলেন, ' তাহলে কি বলতে চাইছেন এখন পাকিস্তানের সব কল-কারখানা বন্ধ করে দিতে!' অবশ্য এই মন্তব্যকে ঘিরে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি বিরোধীরা।