করোনা আবহে গত বছর দিল্লিতে মৃত্যু ৫৪ হাজার মানুষের, দায়ি বায়ু দূষণ
করোনা আবহে গত বছর দিল্লিতে মৃত্যু ৫৪ হাজার
দিল্লিতে বাতাসের গুণমান ধীরে ধীরে আরও খারাপ হচ্ছে। গত বছরই বায়ু দূষণের জন্য, যেখানে বাতাসে বিপজ্জনক পিএম ২.৫ সূক্ষ্ম কণা ছিল, ৫৪ হাজার মানুষের মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। অন্যদিকে নতুন এক সমীক্ষায় উঠে এসেছে, দূষণের মাত্রা হু–এর নির্ধারিত সীমা থেকে ছয় গুণ বেশি দিল্লিতে। ধীরভাবে এই বায়ু দূষণ প্রতিনিয়ত মানুষকে খুন করে চলেছে নিঃশব্দে।
গত বছর মৃত্যু ৫৪ হাজার মানুষের
বায়ুর গুণগত মান নিয়ে গ্রিনপিস সাউথইস্ট এশিয়ার বিশ্লেষণে দেখা গিয়েছে, দিল্লিতে পিএম ২.৫ বায়ু দূষণের কারণে প্রতি দশ লক্ষ মানুষের মধ্যে ১৮ হাজার মানুষ মারা যাচ্ছে। সমীক্ষায় উঠে এসেছে, '২০২০ সালে পিএম ২.৫ বায়ু দূষণের কারণে ভারতের জাতীয় রাজধানীতে প্রায় ৫৪ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে।' প্রসঙ্গত, পিএম ২.৫ এমন একটি সূক্ষ্ম কণা যা ২.৫ মাইক্রোমিটারের চেয়ে কম ব্যাসের কণা হিসাবে পরিচিত। পিএম ২.৫ সূক্ষ্ম কণাকে বিশ্বব্যাপী মৃত্যুর জন্য পরিবেশগত ঝুঁকির কারণ হিসাবে বিবেচনা করা হয় এবং ২০১৫ সালে ৪২ লক্ষ মানুষের অকাল মৃত্যুর জন্য এই পিএম ২.৫ সূক্ষ্ম কণা দায়ি। সমীক্ষায় এও উঠে এসেছে যে ভারতের অন্যান্য শহরেও এটি সমানভাবে ক্ষতি করছে।
দিল্লি ছাড়াও দেশের অন্যান্য রাজ্যে প্রভাব
সমীক্ষাতে বলা হয়েছে, '২০২০ সালে বায়ু দূষণের ফলে মুম্বইতে ২৫ হাজার জনের মৃত্যু হয়েছে। বেঙ্গালুরু, চেন্নাই, হায়দরাবাদ ও লখনইতে যথাক্রমে মৃত্যু হয়েছে ১২ হাজার, ১১ হাজার , ১১ হাজার ও ৬,৭০০ জনের। এই সব মৃত্যুর জন্য বায়ু দূষণই দায়ি।' এখানে এটা উল্লেখযোগ্য যে দিল্লির বায়ু দূষণের পর্যায় হু-এর নির্ধারিত সীমার চেয়ে ৬ গুণ বেশি। সমীক্ষায় বলা হয়েছে যে বায়ু দূষণজনিত অর্থনৈতিক ক্ষতির পরিমাণ ছিল ৮.১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার (৫৮,৮৯৫ কোটি ), যা দিল্লির বার্ষিক জিডিপির ১৩ শতাংশ। সমীক্ষায় বলা হয়েছে, 'লকডাউনের কারণে সাময়িকভাবেল বায়ু দূষণের মান কিছুটা উন্নতি হলেও, সাম্প্রতিকতম পরিস্থিতি বলছে দ্রুত পদক্ষেপ করার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।
বায়ু দূষণের ফলে পাঁচটি শহরে অকালমৃত্যু
মারাত্মক পরিবেশ দূষণের কারণে এমনকি করোনা ভাইরাস লকডাউনের কারণে কিছু জায়গায় বাতাসের গুণগত মান বৃদ্ধি সত্ত্বেও বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল পাঁচটি নগরীতে গত বছর প্রায় ১ লাখ ৬০ হাজার জনের অকাল মৃত্যু হয়েছে। এই পাঁচটি শহর হল দিল্লি, মেক্সিকো, সাও পাওলো, সাংঘাই ও টোকিও। জীবাশ্ম জ্বালানি পোড়ানোর কারণে আণুবীক্ষণিক পিএম ২.৫ কণা ছড়িয়ে পড়ায় এই অকাল মৃত্যু ঘটছে।
পিএম ২.৫ ক্ষতিকর কণা
গ্রিনপিস ইন্ডিয়ার জলবায়ু আন্দোলনকারী অবিনাশ চঞ্চল বলেছেন, 'দূষণমুক্ত জ্বালানির বদলে যখন সরকার কয়লা, তেল ও গ্যাস বেছে নেয়, তখন আমাদের স্বাস্থ্যকে এর মূল্য দিতে হয়।' পিএম ২.৫ কণাকে স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এই কণা হার্ট ও ফুসফুস ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে এবং গুরুতর হাঁপানি দেখা দিতে পারে। পিএম ২.৫ কণা সম্পর্কিত কিছু গবেষণায় দেখা যায়, শরীরে পিএম ২.৫ কণা রয়েছে এমন লোকদের কোভিড-১৯ এ মৃত্যুর উচ্চ ঝুঁকি রয়েছে।
রাজ্য সরকারি কর্মীদের জন্যে বড় স্বস্তির খবর, উপকৃত হবেন বহু মানুষ