গোরক্ষপুরের পর ফারুখাবাদ, ফের যোগীর রাজ্যে সরকারি হাসপাতালে শিশু মৃত্যু
উত্তরপ্রদেশের হাসপাতালে ফের শিশু মৃত্যু বিতর্ক। ফারুখাবাদের সরকারি হাসপাতাল রামমনোহর লোহিয়া হাসপাতালে একমাসে ৪৯ টি সদ্যোজাতের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টিতে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন জেলাশাসক।
উত্তরপ্রদেশের হাসপাতালে ফের শিশু মৃত্যু বিতর্ক। ফারুখাবাদের সরকারি হাসপাতাল রামমনোহর লোহিয়া হাসপাতালে একমাসে ৪৯ টি সদ্যোজাতের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। ঘটনার জেরে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে জেলাশাসক ও হাসপাতালের সিএমওএইচকে।
২১ জুলাই থেকে ২০ অগাস্টের মধ্যে উত্তরপ্রদেশের ফারুখাবাদের রাম মনোহর লোহিয়া হাসপাতালে ৪৯ টি সদ্যোজাতের মৃত্যুর পর নড়েচড়ে বসে জেলা প্রশাসন। হাসপাতাল সূত্রের দাবি, শিশুদের বেশির ভাগেরই ওজন ছিল অনেক কম। অসুস্থ হওয়ার অনেক পরে, অর্থাৎ দেরি করে হাসপাতালে আনা হয়েছিল বলে জানিয়েছে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
৪৯ টি শিশুর মধ্যে ৩০ টি শিশুর মৃত্যু এসএনসিইউ ইউনিটে এবং বাকি ১৯ টি শিশু জন্মের সময় কিংবা তার একটু পরেই মারা গিয়েছে। জেলাশাসক রবীন্দ্রকুমার দাস ঘটনার ম্যাজিস্ট্রেট পর্যায়ের তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। তদন্তের সময় সব বিষয়গুলিকেই খতিয়ে দেখা হবে বলে জানানো হয়েছে।
২১ জুলাই থেকে ২০ অগাস্টের মধ্য়ে হাসপাতালের এসএনসিইউ ইউনিটে ২১১টি শিশু ভর্তি হয়। তার মধ্যে মারা যায় ৩০ টি শিশু। অন্যদিকে, ওই সময়ের মধ্যে হাসপাতালে ৪৬১টি শিশুর জন্ম হয়েছিল, যার মধ্যে মৃত্যু হয় ১৯ টি শিশুর। এসএনসিইউ-এর দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসক কৈলাশ কুমার জানিয়েছেন, মৃত শিশুদের অধিকাংশেরই জন্ম হয়েছিল সময়ের আগে কিংবা তাঁদের ওজন প্রয়োজনের তুলনায় কম ছিল। একইসঙ্গে প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে যেসব শিশুগুলিকে পাঠানো হয়েছিল, তাদের নিয়ে হাসপাতালে পৌঁছতেও অনেক দেরি হয়েছিল বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
হাসপাতালের ম্যাটারনিটি উইং-এর এক চিকিৎসক, মায়েদের মধ্যে সচেতনতার অভাবকেও শিশু মৃত্যুর জন্য দায়ী করেছেন। মায়ের বেশিরভাগই সাক্ষর নন। বমি কিংবা রক্ত বমি-পায়খানা হলেও বুছতে দেরি করছেন তাঁরা। তাই বিষয়টি আরও জটিল আকার ধারণ করেছে।
হাসপাতালের চিফ মেডিক্যাল সুপার অখিলেশ আগরওয়াল জানিয়েছেন, এসএনসিইউ-এ মৃত ৩০টি শিশুর মধ্যে ২৪ টি শিশুর জন্ম হয়েছিল প্রাইভেট হাসপাতালে। তাঁদের যখন সরকারি হাসপাতালে আনা হয়, সবারই অবস্থা খুব খারাপ ছিল।
তবে ওই হাসপাতালেই জন্ম হওয়া ১৯ টি শিশুর মৃত্যু নিয়ে বিশেষ কোনও মন্তব্য করতে চায়নি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। জেলাশাসক জানিয়েছেন, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কোনও ভাবেই বিষয়টি এড়িয়ে যেতে পারেন না।
এদিকে, ফারুখাবাদের সরকারি হাসপাতালে শিশু মৃত্যুর খবর প্রকাশ্যে আসতেই যোগা সরকারের কড়া সমালোচনা করেছে সমাজবাদী পার্টি। তাঁদের দাবি, শিশু মৃত্যুর ঘটনায় স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে প্রকাশ্যেই ক্ষমা চাইতে হবে। একইসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর উচিৎ স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে পদত্যাগের পরামর্শ দেওয়া।