ছত্তিশগড়ে ফের হাতি মৃত্যু, তিনদিনে তিনটি দাঁতালের মৃত্যু নিয়ে রহস্য দানা বাঁধছে
ছত্তিশগড়ে ফের হাতি মৃত্যু, তিনদিনে তিনটি দাঁতালের মৃত্যু নিয়ে রহস্য দানা বাঁধছে
বৃহস্পতিবার ছত্তিশগড়ের সুরগুজা বিভাগে আরও এক বন্য হাতি মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। বেশ কিছু দিনের মধ্যে এই নিয়ে তিনটে হাতির মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে বন বিভাগের পক্ষ থেকে। প্রসঙ্গত কেরলে গর্ভবতী হাতির মৃত্যুর রেশ কাটতে না কাটতেই ফের হাতি মৃত্যুর ঘটনা প্রকাশ্যে এল।
একই পালের তিন হাতির মৃত্যু
বলরামপুর জেলার রাজপুরের জঙ্গলে সম্প্রতি এক হাতি মৃত্যুর ঘটনা সামনে এসেছে। এর আগে ২ জন হাতি, যার মধ্যে এক গর্ভবতী মহিলা হাতি, মৃত অবস্থায় পাওয়া যায় ৯ ও ১০ জুন সুরাজপুর জেলার প্রতাপপুর জঙ্গলের সংলগ্ন এলাকায়। প্রধান বন সংরক্ষণ বিভাগের আধিকারিক অরুণ কুমার পাণ্ডে বলেন, ‘তিনজন মৃত হাতি মহিলা এবং তারা সম্ভবত একই পালের। তাদের মৃত্যুর কারণ মনে হয় এক।' তিনি আরও বলেন, ‘তৃতীয় হাতির ময়নাতদন্ত হয়ে গিয়েছে। যদিও প্রাথমিকভাবে ময়নাতদন্তের রিপোর্টে পাওয়া গিয়েছে যে তিনজন হাতির উপসর্গ দেখে মনে হচ্ছে এই মৃত্যু স্বাভাবিক নয় এবং শরীরে বিষক্রিয়ার ফলে তাদের মৃত্যু হয়েছে।'
মহুয়া বা সার খেয়ে ফেলে অতিরিক্ত পরিমাণে
ওই আধিকারিক বলেন, ‘প্রাথমিক তথ্য থেকে জানা গিয়েছে এই হাতির পাল সম্প্রতি রাজপুর থেকে প্রতাপপুর জঙ্গলের দিকে আসে, আসার পথে গ্রামের কিছু মাটির বাড়ি ভেঙে দেয় তারা। হাতিরা সম্ভবত গ্রামবাসীর মজুত করে রাখা মহুয়া ফুল বা সার অতিরিক্ত পরিমাণে খেয়ে ফেল। যার জন্য শরীরে বিষ ছড়িয়ে পড়ে।' তবে মৃত্যুর নিশ্চিত কারণ এখনও অজানা বলে জানিয়েছেন পাণ্ডে।
হাতির পাল কি খেয়েছিল তার তদন্ত চলছে
বিভাগীয় বন আধিকারিক (বলরামপুর বিভাগ) প্রণয় মিশ্র জানিয়েছেন স্থানীয়দের থেকে হাতিদের মৃত্যুর ঘটনা শোনার পর বন বিভাগের কর্মীরা তড়িঘড়ি ঘটনাস্থানে পৌঁছান। তিনি বলেন, ‘কোনও আঘাতের চিহ্ন ছিল না হাতিদের শরীরে, শুধুমাত্র বোঝা যাচ্ছিল ২-৩দিন আগে মৃত্যু হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে আসার পরই মৃত্যুর আসল কারণ জানা যাবে।' মিশ্র জানিয়েছেন যে ১৮টি হাতির পালের মধ্যে ওই তিনটি দাঁতাল হাতি ছিল, যারা ৬-৭ জুন প্রতাপপুরের দিকে যাওয়ার আগে কারওয়া গ্রামে ঢুকে বেশ কিছু মাটির বাড়ি ভেঙে দেয়। হাতির পাল কি খেয়েছিল তা সন্ধান করার জন্য তারা যে যে গ্রাম অতিক্রম করেছিল সেখানে গিয়ে বনকর্মীরা তা জানার চেষ্টা করছে। এর পাশাপাশি বনকর্মীরা এলাকার জলাশয়গুলির নমুনা সংগ্রহ করে দেখছেন যে জলের মধ্যে বিষ রয়েছে কিনা।
উচ্চ পর্যায়ের তদন্তের দাবি
বুধবার বন বিভাগের পক্ষ থেকে জানা গিয়েছে যে গর্ভবতী হাতিটিকে মৃত অবস্থায় পাওয়া গিয়েছিল তার যকৃতে সিস্ট ছিল এবং প্লীহাতে কিছু সমস্যা ছিল যা তার মৃত্যুর কারণ হতে পারে। বিলাসপুরের পশুপ্রেমী কর্মীরা দাবি করেছেন যে উচ্চ-পর্যায়ের তদন্ত করতে হবে এই হাতি মৃত্যু নিয়ে কারণ তাদের সন্দেহ এর মধ্যে কোনও রহস্য রয়েছে। পশু প্রেমি মনসুর খান বলেন, ‘গত বছরের নভেম্বরে বলরামপুরে বন্য হাতিকে মেরে তার দাঁত উপড়ে নেওয়ার অভিযোগে আটজনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। তাই এই তিন হাতির মৃত্যুতেও অন্য কোনও গন্ধ রয়েছে। উচ্চ প্যায়ের তদন্ত হলে তবেই সত্য উদঘাটন হবে।'
হাতির দৌরাত্ম্যে বিরক্ত উত্তর ছত্তিশগড়
উল্লেখযোগ্যভাবে, সুরগুজা, কোরবা, রায়গড়, যশপুর এবং কোরিয়া জেলা নিয়ে গঠিত ঘন-বনাঞ্চলযুক্ত উত্তর-ছত্তীসগড় মানুষ-হাতির সংঘর্ষের ঘটনার জন্য কুখ্যাত। গত কয়েক বছরে বন্য হাতির দৌরাত্ম্যে বহু মানুষ মারা পড়েছে এবং বহু বাড়ি ও ফসল নষ্ট করেছে তারা।
প্রতীকী ছবি
ভারতীয় শেয়ার বাজারে কালো ছায়া! সেনসেক্স-নিফটির বড় পতনে বিনিয়োগকারীদের মাথায় হাত