বিজেপির হাত ফসকে গেল ঝাড়খণ্ডও, এরপর যে যে রাজ্যে টিকে রইল গেরুয়া শিবির
সোমবার বেলা ১২ টা পর্যন্ত পাওয়া ফলাফলের নিরিখে সারা ভারতে আরও এক রাজ্য বিজেপি হাত ফসকে যাচ্ছে। ৮১ আসনে ঝাড়খণ্ড বিধানসভায় বিজেপি এগিয়ে রয়েছে ২৮ আসনে আর জেএমএম জোট এগিয়ে রয়েছে ৪১ টি আসনে।
সোমবার বেলা ১২ টা পর্যন্ত পাওয়া ফলাফলের নিরিখে সারা ভারতে আরও এক রাজ্য বিজেপি হাত ফসকে যাচ্ছে। ৮১ আসনে ঝাড়খণ্ড বিধানসভায় বিজেপি এগিয়ে রয়েছে ২৮ আসনে আর জেএমএম জোট এগিয়ে রয়েছে ৪১ টি আসনে। মহারাষ্ট্রের পর ঝাড়খণ্ডে সরকার গঠন করতে না পারাটা বিজেপির কাছে বিপর্যয়েরই মতোই। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের মতে, এই ঘটনা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী থেকে শুরু করে সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহকে যথেষ্টই চাপে মধ্যে রাখবে। যদিও বিজেপি তা মানতে নারাজ।
একা লড়াইয়ের ইচ্ছা পিছোচ্ছে বিজেপিকে
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা বলছেন একা লড়াইয়ের ইচ্ছাই পিছিয়ে দিচ্ছে বিজেপিকে। মহারাষ্ট্রের ক্ষেত্রে ৩০ বছরের শরিক শিবসেনার সঙ্গে বিচ্ছেদ হয়ে যায়। অন্যদিকে, যে শরিক আজসুর সঙ্গে ঝাড়খণ্ডে ৫ বছর ক্ষমতায় ছিল বিজেপি, আসন সমঝোতা নিয়ে বিরোধের কারণে, তার সঙ্গে বিচ্ছেদ হয়ে যায়, ভোটের আগে। দুটি ক্ষেত্রেই বিজেপি একা চলার সিদ্ধান্ত নিতে গিয়ে বিপাকে পড়েছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক ভাষ্যকারদের একাংশ।
কেন্দ্রে পছন্দ বিজেপিকে, রাজ্যে অন্য দল
ভোটারদের সাম্প্রতিক ইচ্ছা পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যাচ্ছে যখনই কেন্দ্রের ভোট হচ্ছে তখন মোদীর ডাকে বিজেপিকেই ভোট দিচ্ছেন বেশিরভাগ মানুষ। অন্যদিকে যখন রাজ্যের ভোট হচ্ছে, তখন মোদী অমিত শাহরা, যতই প্রচার করুন না কেন, স্থানীয় জনতা বেছে নিচ্ছে বিজেপি বিরোধী দলকে।
রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, ছত্তিশগড়ে কংগ্রেস সরকার
২০১৮-তে রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, ছত্তিশগড়ে বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেস ক্ষমতায় আসে। যদিও তার কয়েক মাসের মধ্যেই হওয়া লোকসভা ভোটে তিন রাজ্যে বেশ ভাল ফল করে বিজেপি।
২০১৯-এর লোকসভায় ধুয়ে মুছে যায় বিরোধীরা
২০১৪ সালের পর থেকে দেশ দেখেছে চাণক্য অমিত শাহের দল পরিচালনা থেকে দেশব্যাপী মোদী ঝড়। ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনেও মোদী ঝড়ে কার্যত ধুয়ে মুছে গিয়েছে বিরোধীরা। ২০১৪ সালে ৭ রাজ্য থেকে, ২০১৫-তে ১৩, ২০১৬-তে ১৫, ২০১৭-তে ১৯ এবং ২০১৮-তে ২১টি রাজ্য।
এক সময়ে ২১ রাজ্যে ক্ষমতায় ছিল বিজেপি
২০১৪ সালে বিজেপি যখন কেন্দ্রে ক্ষমতায় আসছে তখন তাদের হাতে ছিল মাত্র সাতটি রাজ্য। এরপর ২০১৮ সাল নাগাদ তা পৌঁছে গিয়েছিল ২১টি রাজ্যে। এরপর থেকে সংখ্যায় তা কমতে থাকে। রাজনৈতিক লড়াইয়ে বিজেপি কংগ্রেসের কাছে পরাজিত হয় মধ্যপ্রদেশ এবং রাজস্থানের মতো বড় রাজ্যে। যদিও এই দুরাজ্যে লোকসভায় ভাল ফল করে বিজেপি।
২০১৪ সালে সারা ভারতে বিজেপি কিংবা তাদের শরিকদল শাসিত রাজ্য বলতে ছিল গুজরাত, মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান, ছত্তিশগড়, গোয়া, অরুণাচল প্রদেশ। ২০১৮-র সেপ্টেম্বর নাগাদ যেসব রাজ্যগুলি বিজেপি কিংবা তাদের শরিকদের হাতের বাইরে ছিল, সেগুলি হল তামিলনাড়ু(এআইএডিএমকে), কেরল(এলডিএফ), কর্নাটক(কংগ্রেস), মিজোরাম( কংগ্রেস), পঞ্জাব(কংগ্রেস), ওড়িশা(বিজেপি), পশ্চিমবঙ্গ(তৃণমূল কংগ্রেস এবং তেলেঙ্গানা( টিআরএস)।
রাজনৈতিক জমি কমেছে বিজেপির
ঝাড়খণ্ড হাত ছাড়া হতে যাচ্ছে। এর আগে মহারাষ্ট্রে বিজেপির সরকার গড়তে না পারায় সারা দেশে বিজেপির রাজনৈতিক জমি হারানোর পরিমাণটা বাড়িয়ে দিয়েছিল। ঝাড়খণ্ডকে বাদ দিয়ে পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০১৭ সালে সেখানে ভারতের ৭১ শতাংশ এলাকা বিজেপির দখলে ছিল বর্তমানে তা কমে হয়েছে ৪০ শতাংশের মতো।
এরপর পরবর্তী পর্যায়ে টিডিপি জোট ছেড়ে বেরিয়ে যায়। অন্যদিকে জম্মু ও কাশ্মীরে জারি করা হয় রাষ্ট্রপতি শাসন। ২০১৯-এ বছরের শেষে প্রথমে মহারাষ্ট্রে বিপর্যয় ঘটে বিজেপির এরপর ঝাড়খণ্ডে ক্ষমতা হারানোর পথে বিজেপি।
উত্তরপ্রদেশে যোগীর নির্দেশের পর ৬০টি দোকান 'সিল'! হিংসায় অভিযুক্তদের ঘিরে কোমর কষছে