সড়কপথে অসম থেকে কি মেঘালয় যাচ্ছেন, সাবধান! এমন বিপদে আপনিও পড়তে পারেন
এনআরসি বিতর্কে যা আশঙ্কা করা হচ্ছিব এবার সেই অশান্তি শুরু হয়ে গেল। রাস্তায় উপরে বাঙালি দেখলেই শুরু হয়েছে পাকড়াও অভিযান। খতিয়ে দেখা হচ্ছে তাঁর নাগরিক পরিচয়পত্র।
এনআরসি বিতর্কে যা আশঙ্কা করা হচ্ছিব এবার সেই অশান্তি শুরু হয়ে গেল। রাস্তায় উপরে বাঙালি দেখলেই শুরু হয়েছে পাকড়াও অভিযান। খতিয়ে দেখা হচ্ছে তাঁর নাগরিক পরিচয়পত্র। এনআরসি-র কোনও নথিপত্র আছে কি না তা জানতে চাওয়া হচ্ছে। সমগ্র অসমজুড়ে রাজ্য সীমানায় এলাকায় এমন চরম বিতর্কিত কার্যকলাপ শুরু হয়েছে।
বেছে বেছে মূলত বাঙালিদেরকেই নিশানা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ। বারাক উপত্যকার শিলচর শহর থেকে মেঘালয়ে যাওয়ার রাস্তাতেও শুরু হয়েছে নাকাবন্দি। খাসি স্টুডেন্টস ইউনিয়ন জয়ন্তিয়া পাহাড়ের বার্নিহাটে মঙ্গলবার বিকেল থেকেই নিজেদের উদ্যোগে নাকাবন্দি শুরু করে। অসম ও মেঘালয়ের সীমানায় তারা কেএসইউ-এর বোর্ডও ঝুলিয়ে দেয়।
বারাক থেকে যে সব গাড়ি মেঘালয়ে যাচ্ছিল তাদের থামিয়ে তল্লাশি চালাতে শুরু করে খাসি যুবকরা। এমনকী রোজ শ্রমিকের কাজ করতে যারা মেঘালয়ে যান তাদেরও রেহাই মেলেনি। খাসি যুবকদের সামনে তাদেরও খানা তল্লাশি দিতে হচ্ছে। তাদের ব্যাগপত্তর চেক করা হচ্ছে। এনআরসি-তে যে নাম এমন কোনও প্রমাণপত্র তাদের কাছে চাওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ। যারা কোনও প্রমাণ দিতে পারছে না তাদের আটকে দিয়ে ফেরত পাঠিয়ে দিচ্ছে খাসি যুবকরা। তারাই পরিষ্কার জানিয়ে দিতে থাকে এনআরসি-র নথি ছাড়া তাদের মেঘালয়ে ঢুকতে দেওয়া হবে না।
বিষয়টি এতটাই চরম আকার নেয় যে বারাকের কাছাড় জেলার জেলাশাসক ও পুলিশ সুপার মেঘালয়ের প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলেন। এরপরই বুধবার থেকে পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এসেছে। অসম-মেঘালয়ের সীমানায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। কিন্তু তারপরও বহু স্থানেই খাসি যুবকরা বলপূর্বক অসম থেকে আসা গাড়ি এবং তাতে থাকা সওয়াড়িদের তল্লাশি নিচ্ছে। বেছে বেছে গাড়ি থেকে বাঙালিদের নামানো হচ্ছে বলেও অভিযোগ।
অসম সরকার থেকে এনআরসি কর্তৃপক্ষ এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক আশ্বাস দিয়েছিল যে নাম না থাকাদের উপরে যাতে কোনও নির্যাতন না হয় তা নিশ্চিত করা হবে। কিন্তু, সরকারি সমস্ত প্রতিশ্রুতিকে তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিয়েছে বাঙালি বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির নেতা ও সমর্থকরা। এর ফলে অসমের বাইরে যাতায়াত করা বাঙালিরা বিপুল অসুবিধার সম্মুখিন হচ্ছেন। শুধু মেঘালয় নয় নাগাল্যান্ড, ত্রিপুরা-র সীমানাতেও একই ঘটনা চলছে।
এনআরসি-র চূড়ান্ত খসড়া তালিকা প্রকাশের পর নাম না থাকাদের যে অবরোধের সামনে .পড়তে হচ্ছে তা নিয়ে লোকসভায় সরব সাংসদ সুস্মিতা দেব। এই ব্যাপারে সরকারের জবাবদিহিও দাবি করেন তিনি। এনআরসি নিয়ে যাতে কোনও অন্তোষ পরিস্থিতি তৈরি না হয় তার জন্য আর্জিও জানান সুস্মিতা।
এদিকে, খাসি যুবকদের এই আগ বাড়িয়ে সাধারণ মানুষকে নির্যাতন করার বিষয়টির তীব্র প্রতিবাদ করেছে অসম নাগরিক রক্ষা সমন্বয় সমিতি। উত্তর-পূর্বাঞ্চলে আঞ্চলিক দলগুলির কাছে যেভাবে বাঙালিরা আক্রোশের শিকার হচ্ছে তাতে উদ্বেগও প্রকাশ করেছে তারা। জোর করে বাঙালিদের বিরুদ্ধে উত্তর-পূর্বের আঞ্চলিক জনজাতিগুলিকে খেপিয়ে তোলার অভিযোগ বহু পুরনো। এবারও সেই অভিযোগও আনা হয়েছে।