বিহারে দুই উপমুখ্যমন্ত্রী কুর্সি দখলের পরও বিজেপির সামনে কোন কাঁটা রয়ে যাচ্ছে! পাল্টা চাল শুরু
বিহারে বিজেপি পূর্বের দেওয়া কথা মতো মুখ্যমন্ত্রী পদে নীতীশ কুমারকে রাখলেও উপমুখ্যমন্ত্রী পদে আচমকা বড় পরিবর্তন এনে গোবলয়ের রাজনীতিতে বড় বার্তা দিয়েছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে , বিহারের রাজনীতিতে বিজেপির সামেন আসন্ন চ্যালেঞ্জকে নজরে রেখেই গেরুয়া শিবির এই পরিবর্তন ডেকে আনে। কোন বিপদকে আঁচ করে বিজেপি এমন পদক্ষেপ নিয়েছে দেখে নেওয়া যাক।

২০২০ তে জনসমর্থন পেয়ে এবার কোন চ্যালেঞ্জ?
শুরু করা যাক, তেজস্বী যাদবের বক্তব্য দিয়ে। তিনি বলেছিলেন, মাত্র ১৫ ভোটে আরজেডি জোটের পিছিয়ে থাকার মানে কিন্তু জনসমর্থন নীতীশ সরকার বিরোধী। আর সেই অঙ্ক খুব ভালো করে বুঝেছে বিজেপি ও জেডিইউ। মূলত , ৭৪ টি আসন বিহারে দখল করেও, স্বস্তিতে নেই পদ্মশিবির। বিহারে 'রাজা'কে অক্ষত রাখতে দাবার বোর্ডে এবার হাতি থেকে ঘোড়া সমস্ত কিছুকেই বুদ্ধি করে ঢাল হিসাবে সাজাচ্ছে পদ্মশিবির!

প্রথম চাল বিজেপির!
ভোট যে নীতীশ বিরোধী তথা সরকার বিরোধী হয়েছে, তা আঁচ করে নিয়েছে গেরুয়া দল। তাই নীতীশ ঘনিষ্ঠ বিজেপির মুখ সুশীল মোদীকে প্রথমেই সরকার থেকে ছেঁটেছে গেরুয়া ক্যাম্প। এবার জেডিইউয়ের থেকে বেশি সংখ্যক ভোট নিয়ে দলের দুই বিধায়কে উপমুখ্যমন্ত্রীর গদিতে বসিয়ে কার্যত এনডিএ সরকারের নতুন 'রূপ' তুলে ধরার চেষ্টায় বিজেপি। যাতে নীতীশ কুমারের ঔজ্জ্বল খানিকটা ম্লনা হয়। তবে তাতেও বিজেপর জন্য থেকে যাচ্ছে চ্যালেঞ্জ।

আরজেডি ও তাদের হিন্দু ভোটব্যাঙ্ক
যাদব নন, এমন হিন্দু ভোটারদের টার্গেটে রেখে বিজেপি বিহারে ক্ষমতার পথে হাঁটে। তবে ২০২০ সালের বিহার বিধানসভা নির্বাচন সাফ বাতলে দিয়েছে যে, এই ভোট ব্যাঙ্ক কিন্তু অনেকটাই নীতীশ বিরোধী মহাজোটের সমর্থনে রয়েছে। বিহারের একটা বড় অংশ আরজেডি লবি নিজের ছায়ায় এনে ফেলেছে। পাশাপাশি , ও দরিদ্র হিন্দুভোটারদের নিজের পাশে পেয়েছে লালু শিবির। ফলে চ্যালেঞ্জ বড় হচ্ছে বিজেপির সামনে।

ঘর বাঁচাতে বিজেপি কোন গেমে!
মূলত সুশীল মোদীকে সরিয়ে বিহারের ইবিসি তথা নোনিয়া সম্প্রদায়কে হাতে রাখতে চেয়েছে বিজেপি। যারা আরজেডি ভোটব্য়াঙ্কের অংশ, এই সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি রেনুদেবী। যিনি সদ্য বিহারের উপমুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন। অন্যিক বৈশ্য সম্প্রদায় থেকে তারকিশোর প্রসাদের উঠে আসাও একই কারণে। আরজেডির রাস্তা ব্লক করতেই এমন চাল বিজেপির।

মাথা তুলছে বামেরা
এদিকে, বিহারের বাম দূর্গও ক্রমেই চাঙ্গা হতে শুরু করেছে। আরজেডির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে এবার বিহারের ভোটে বামেদের ভোট শেয়ারও বেড়েছে। বামেদের দাবি, বিহারের ভোটে কংগ্রেসের থেকে তারা বেশি আসন পেলে মহাজোট এতদিনে সরকার গড়ত। ফলে গেরুয়া শিবিরের কট্টর দক্ষিণপন্থার সঙ্গে তালে তাল মিলিয়ে এবার বামেরাও বিহার রাজনীতিতে ঝাঁপাবে। যার দিকে সুচতুর নজর রেখেছে বিজেপি।

বিহারে সুশীল মোদীর ডানা ছেঁটে কোন সমীকরণের বার্তা দিল বিজেপি! কীভাবে ঘুঁটি সাজাচ্ছে গেরুয়া শিবির