কার্গিল যুদ্ধে বাবা শহীদ হওয়ার ১৯ বছর পর একই ব্যাটেলিয়নে নিয়োগ পেলেন পুত্র
কার্গিল যুদ্ধে বাবা শহিদ হওয়ার ১৯ বছর পর, হিতেশ কুমার ভারতীয় সেনাবাহিনীর একজন লেফটেন্যান্ট হিসেবে নিযুক্ত হলেন।
বাবার মৃত্যুর সময় হীতেশ কুমারের বয়স ছিল মাত্র ৬। বাবা ছিলেন রাজপুতানা রাইফেলস-এর সেকেন্ড ব্যাটেলিয়নের ল্যান্স নাইক। ১৯৯৯-এর ১২ জুন কার্গীল যুদ্ধে তিনি শহীদ হন। সেই ছোট বয়স থেকেই লক্ষ্য স্থির করে নিয়েছিল হীতেশ, সে সেনাকর্মীই হবে। ১৯ বছর পর দেরাদুনের ইন্ডিয়ান মিলিটারি অ্যাকাডেমি থেকে পাশ করে সেনাবাহিনীতে নিয়োগ পেয়ে সে স্বপ্ন পূরণ করলেন তিনি।
শুধু সেনাবাহিনীতে নিয়েগ পাওয়াই নয়, আশ্চর্যের হল, বাবার বচন সিং-এর মতো হীতেশও রাজপুতানা রাইফেলস-এর সেকেন্জ ব্যাটেলিয়নেরই লেফট্য়ানেন্ট হিসেবে কাজে যোগ দিচ্ছেন তিনি। মুজফ্ফর নগরের সিভিল লাইনে বচন সিং-এর একটি স্মৃতিফলক রয়েছে। মিলিটারি অ্যাকাডেমির পাশ করার প্যারেড সেরেই হীতেশ বাবার স্মৃতিতে শ্রদ্ধা জানিয়ে আসেন।
হীতেশ জানান, তার স্বপ্ন পূর্ণ হয়েছে। তিনি বলেন, 'গত ১৯ বছর ধরে আমি এই স্বপ্নটাই দেখে এসেছি। আমার মায়েরও এটাই স্বপ্ন ছিল। এবার আমি সততা ও গর্বের সঙ্গে দেশের সেবা করবো। হীতেশের এই সাফল্যে তাঁর মা কামেশবালা অত্যন্ত গর্বিত। তিনি জানান, 'বচন শহিদ হওয়ার পর থেকে জীবনটা সহজ ছিল না। দুই ছেলেকে মানুষ করতে হয়েছে। আজ হীতেশ সেনাবাহিনীতে নিয়োগ পাওয়ায় আমি গর্বিত।' কামেশবালা জানিয়েছেন তাঁর ছোটছেলে, হীতেশের ভাই হেমন্তও সেনায় যোগ দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
হীতেশ সেনায় যোগ দেওয়ায় খুশি শহীদ বচন সিং-এর ব্যাটেলিয়নের সহকর্মীরাও। কার্গিল যুদ্ধে ভারতের পক্ষে প্রথম সাফল্য এসেছিল টোলোইং-এ। সেখানেই যুদ্ধে নিযুক্ত ছিল রাজপুতানা রাইফেলসঃএর এই ব্যাটেলিয়ন। ৩ সপ্তাহের রক্তক্ষয়ী সেই যুদ্ধে শতাধিক সেনাকর্মী হতাহত হন। মৃত্যু হয়েছিল ১৭ জনের। তাঁদেরই একজন ছিলেন বচন সিং। বচনের সহকর্মী ঋষিপাল সিং বলেন, 'বচন একজন সাহসী যোদ্ধা ছিল। টোলোইং-এ মাথায় গুলি লেগে যুদ্ধক্ষেত্রেই ওর মৃত্যু হয়। আমি খুব খুশি যে ওর ছেলে আজ সেনাবাহিনীতে যোগ দিল। এর বাবা বেঁচে থাকলে খুব গর্বিত হত।'