ফ্রিজের মধ্যে তখনও শ্রদ্ধার দেহের অংশ, আফতাব বাড়িতে এনেছিল নতুন প্রেমিকাকে
ফ্রিজের মধ্যে তখনও শ্রদ্ধার দেহের অংশ, আফতাব বাড়িতে এনেছিল নতুন প্রেমিকাকে
আফতাব আমিন পুনওয়ালা ইতিমধ্যে স্বীকার করে নিয়েছেন, তিনি লিভ-ইন প্রেমিকাকে হত্যার ঘটনা স্বীকার করে নিয়েছেন। তদন্ত যত এগোচ্ছে, শ্রদ্ধার হত্যার ঘটনায় আফতাবের নৃশংশতা তত প্রকাশ পাচ্ছে। শিউরে উঠছেন দেশবাসী। পুলিশ প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছে, শ্রদ্ধাকে হত্যার ১৫ থেকে ২০ দিনের মাথায় আফতাব ডেটিং অ্যাপের মাধ্যমে নতুন প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিল। অভিযোগ উঠছে, তার নতুন প্রেমিকা ঘন ঘন বাড়িতে আসতেন। প্রাথমিকভাবে পুলিশের অনুমান, ফ্রিজে শ্রদ্ধার শরীরে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ থাকার সময়েই বাড়িতে আফতাবের প্রেমিকা আসা শুরু করেন।
নতুন প্রেমিকাকে নিয়ে আসত বাড়িতে
দিল্লি পুলিশ সূত্রের খবর, আফতাব শ্রদ্ধাকে হত্যার ১৫-২০ দিনের মাথায় ডেটিং অ্যাপে নতুন মেয়েদের সঙ্গে দেখা করতে শুরু করেন। আফতাবের নতুন প্রেমিকার বাড়িতে নিয়মিত আসা-যাওয়া ছিল। জানা যাচ্ছে, আফতাবের নতুন প্রেমিকা যখন বাড়িতে আসার সময় শ্রদ্ধার শরীরের একাধিক অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ফ্রিজে ছিল। সূত্রের খবর, জেরায় আফতাব জানিয়েছে, বাড়িতে যখন নতুন প্রেমিকা আসতেন, সেই সময় সে শ্রদ্ধার কাটা অঙ্গ-প্রত্যঙ্গগুলো অন্যত্র সরিয়ে রাখত। পুলিশ এই বিষয়ে আরও বিস্তারিত তথ্য জানতে আফতাবের ডেটিং অ্যাপের প্রোফাইলটি পর্যবেক্ষণ করছে।
শ্রদ্ধার সোশ্যাল মিডিয়ার অ্যাকাউন্ট ব্যবহার
দিল্লি পুলিশ তদন্তে জানতে পেরেছে, যাতে কারও সন্দেহ না হয়, সেই কারণে শ্রদ্ধার সোশ্যাল মিডিয়া আফতাব চালাতেন। শ্রদ্ধার মৃত্যুর পরেও তাঁর সোশ্যাল মিডিয়ায় অ্যাকাউন্টগুলো অ্যাকটিভ ছিল বেশ কিছুদিন। তবে শ্রদ্ধার ফোন দুই মাসের বেশি বন্ধ থাকায় এক বন্ধুর সন্দেহ হয়। তিনি শ্রদ্ধার ভাইকে ঘটনাটি জানান।
ফুড ব্লগার ছিল আফতাব
পুলিশ জানতে পেরেছে, আফতাব শেফ হওয়ার জন্য বেশ কিছুদিন প্রশিক্ষণ নিয়েছিল। শ্রদ্ধার সঙ্গে আফতাবও একটি কলসেন্টারে কাজ করতেন। বেশ কিছুদিন তিনি ফুড ব্লগার হিসেবে কাজ করেছিল। তবে আফতাবের সোশ্যাল মিডিয়ায় গত ফেব্রুয়ারি মাসে শেষ পোস্ট করেছিল। তারপর তাঁর সোশ্যাল মিডিয়ায় কোনও পোস্ট দেখতে পাওয়া যায়নি। আফতাবের ইনস্টাগ্রাম প্রোফাইলে ২৮,০০০ ফলোয়ার রয়েছে। তবে শ্রদ্ধাকে হত্যার পরেও তাঁর সোশ্যাল মিডিয়ার সক্রিয়তা বজায় রেখেছিল আফতাব। যাতে কারও সন্দেহ না হয়।
কালো ফয়েলে মুড়ে শ্রদ্ধার দেহের টুকরোগুলো ফেলত
দিল্লি পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শ্রদ্ধাকে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর তাঁর শরীরের ৩৫টি টুকরো করেছিল। সেই টুকরোগুলোকে রাখার জন্য নতুন ফ্রিজ কিনেছিল। পুলিশের সন্দেহ এড়াতে, শ্রদ্ধার দেহের অংশগুলো দিল্লির একাধিক অঞ্চলে ফেলে আসত। কালো ফয়েলে মুড়ে বাড়ি থেকে শ্রদ্ধার অঙ্গ-প্রত্যঙ্গগুলো নিয়ে বের হত সে। দিল্লি পুলিশ জানিয়েছে, শ্রদ্ধাকে খুন করার পর তার দেহ বাথরুমে লুকিয়ে রাখে। এরপর ফ্রিজ কিনে আনেন। শ্রদ্ধার দেহ ৩৫টি টুকরো করে কেটে ফ্রিজের মধ্যে রাখে। রক্তের দাগ তোলার জন্য রাসায়নিক নাম জানতে গুগলে সার্চ করেছিলেন। বাইরে থেকে রাসায়নিক কিনেই রক্তের দাগ তোলে আফতাব বলে জানা গিয়েছে। যে চাকুটি দিয়ে আফতাব শ্রদ্ধার দেহগুলো টুকরো করেছে, সেটি এখনও পুলিশ পায়নি বলে জানা গিয়েছে।
আফতাবের সঙ্গে সম্পর্ক রাখতে পরিবার ত্যাগ শ্রদ্ধার
আফতাবের সঙ্গে শ্রদ্ধার তিন বছরের সম্পর্ক। তাঁরা আগে মুম্বইয়ে থাকতেন। চলতি বছরের শুরুর দিকে তাঁরা দিল্লিতে আসেন। সেখানে দুজনেই একটি কল সেন্টারে কাজ করতেন। জানা যায় একটি ডেটিং অ্যাপের মাধ্যমে আফতাবের সঙ্গে শ্রদ্ধার পরিচয় হয়। তাঁদের সম্পর্ক মেনে না নেওয়ার জন্য শ্রদ্ধা বাড়ির সঙ্গে সমস্ত সম্পর্ক ত্যাগ করেন। দুই মাসের বেশি শ্রদ্ধার ফোন বন্ধ থাকায় তাঁর বন্ধুর সন্দেহ হয়। তিনি শ্রদ্ধার ভাইকে বলেন। পরে শ্রদ্ধার বাবা থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।