শিখণ্ডী গান্ধী পরিবার! ফের ভাঙনের চৌকাঠে কংগ্রেস, অধীরের পরামর্শে নয়া ঝড়ের আশঙ্কা
কপিল সিব্বলকে অন্য দলে যোগ দেওয়ার পরামর্শ দিলেন লোকসভায় কংগ্রেসের সংসদীয় দলনেতা অধীর চৌধুরী। মূলত দলের অভ্যন্তরে চলতে থাকা 'গান্ধী বিরোধী' হাওয়ায় কপিল সিব্বল অক্সিজেন যোগাতেই এহেন আক্রমণ। কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্বের মধ্যে এহেন বিরোধের জেরে শতাব্দী প্রাচীণ দলে বড়সড় ভাঙনের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

কপিলকে তোপ অধীর চৌধুরীর
এদিন অধীর চৌধুরী সরাসরি কপিল সিব্বলের নাম না নিয়েই বলেন, 'যদি কোনও নেতার মনে হয় যে কংগ্রেস তাঁদের জন্যে সঠিক দল নয়, তাহলে তাঁরা বিনা বাধায় দল ছেড়ে অন্য দলে যোগ দিতে পারেন বা নিজেদের দল গঠন করতে পারেন। তবে দলে থেকে এভাবে লজ্জাজনক কাজ করে দলকে বিব্রত করতে পারেন না তাঁরা।'

ময়দানে নেমে প্রচার করেছিলেন অভিযোগকারীরা?
তিনি এদিন আরও বলেন, 'একসময় এই নেতারা গান্ধীদের ঘনিষ্ঠ ছিলেন। তাঁরা খুব সহজেই গান্ধী পরিবারের সঙ্গে এই নিয়ে আলোচনা করতে পারেন। কিন্তু তা না করে তাঁরা যদি দলকে বিব্রত করতে বাক্য ব্যায় করেন তাহলে তাঁদের উদ্দেশে আমার প্রশ্ন, বিহার নির্বাচনে আপনারা কী ময়দানে নেমে দলের হয়ে প্রচার করেছিলেন?' উল্লেখ্য, একসময় বিহার থেকেই রাজ্যসভার সদস্য হিসাবে নির্বাচিত হয়েছিলেন কপিল সিব্বল।

বিহার নির্বাচনের ফলাফলে মুখ পুড়েছে কংগ্রেসের
বিহার নির্বাচনের ফলাফলে মুখ পুড়েছে কংগ্রেসের৷ এনিয়ে ঘরে-বাইরে সর্বত্র শুরু হয়েছে সমালোচনা। এই পরিস্থিতিতে কংগ্রেসকে চাঙ্গা করতে অভিজ্ঞ কারো হাতে দলের নেতৃত্ব তুলে দেওয়ার কথা বলেছিলেন প্রাক্তন কংগ্রেস সাংসদ কপিল সিব্বল৷ পাশাপাশি শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে তাঁর বার্তা, দলীয় সংগঠনে অভ্য়ন্তরীণ পর্যালোচনা এবং শীর্ষ নেতৃত্বের মনোভাব বদলের সময় এসেছে৷ কপিলের এহেন মন্তব্য 'গান্ধী বিরোধী' বলে মনে করা হয়। এরপরেই কংগ্রেসর অভ্যন্তরীণ বিরোধ ফের সামনে চলে আসে।

গান্ধীদের জন্যে বিভক্ত কংগ্রেস
কংগ্রেসে গান্ধী বিরোধী সুর তুলে এর আগেও হাইকমান্ডকে চিঠি দিয়েছিলেন কপিল সিব্বল সহ আরও ২২ জন নেতা। তবে সেবারও গান্ধীদের 'ব্র্যান্ড ভ্যালু' তাদের বাঁচিয়ে দেয়। তবে দলের ভালোর জন্যে কোনও দীর্ঘমেয়াদী সুরাহা বের হয়নি সেবারও। এই পরিস্থিতিতে বিহারে হার দলের জন্যে বিশাল ধাক্কা। মূলত এই নির্বাচনে ভালো ফলের উপর ভর করে রাহুলকে ফের কংগ্রেসের মসনদে বসানোর স্বপ্ন দেখা হচ্ছিল। তবে তা না হওয়ায় ফের 'গান্ধী' নামে বিভক্ত কংগ্রেস। এই একটি পরিবারকে সামনে রেখেই আড়াআড়ি বিভাজন হয়েছে দলে।

শীর্ষ নেতৃত্বের গাছাড়া মনোভাব নিয়ে সরব হন কপিল
প্রসঙ্গত, কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্বের গাছাড়া মনোভাবের সমালোচনা করে সিব্বল বলেছিলেন, শীর্ষ নেতৃত্বের এমন একটি মনোভাব, যেন বড় কোনও অঘটন ঘটেনি৷ পাশাপাশি যে সব রাজ্য়ে কংগ্রেস এখনও দ্বিতীয় শক্তিশালী দল, সেখানেও মানুষ কংগ্রেসের উপর আস্থা হারাচ্ছেন৷ এর স্বপক্ষে বিহার নির্বাচন ছাড়াও দেশজোড়া উপনির্বাচনগুলির ফলাফলকেও তুলে ধরেন তিনি৷ যেমন গুজরাত, রাজস্থান যেখানে কংগ্রেস শক্তিশালী সেখানেও হাত শিবির পিছিয়ে পড়েছে৷ সে সব রাজ্য়ে কংগ্রেস মানুষের প্রত্য়াশা পূরণে ব্য়র্থ হচ্ছে বলে মত প্রকাশ করেন তিনি৷ এরপরই কপিলের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছিলেন রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট। এবার কপিলকে তোপ দাগলেন অধীর চৌধুরী।

বিহারে ভরাডুবির পর উত্তরপ্রদেশে মিলছে না জোটসঙ্গী, যোগীর বিরুদ্ধে প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর অগ্নিপরীক্ষা