২০১৯-এর পর ছন্নছাড়া কংগ্রেসের হাল ধরুন রাহুল, সোনিয়ার সামনেই সরব অধীর
২০১৯-এ লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির কাছে হারের পর থেকেই ছন্নছাড়া কংগ্রেস। অথচ তার আগে একাধিক রাজ্যে কংগ্রেস ভালো ফল করেছিল। কিন্তু কংগ্রেস সঙ্ঘবদ্ধ হতে পারেনি। তার ফলে কংগ্রেসকে ভেঙে বিজেপি আবার সরকার গড়েছে।
২০১৯-এ লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির কাছে হারের পর থেকেই ছন্নছাড়া কংগ্রেস। অথচ তার আগে একাধিক রাজ্যে কংগ্রেস ভালো ফল করেছিল। কিন্তু কংগ্রেস সঙ্ঘবদ্ধ হতে পারেনি। তার ফলে কংগ্রেসকে ভেঙে বিজেপি আবার সরকার গড়েছে। কংগ্রেস ভাঙন রোখার কোনও চেষ্টা করেনি। আর তা হয়েছে নেতৃত্বহীনতার জন্য। এ বিষয়েই কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটির সভায় মুখ খুললেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী।
কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধীর সামনেই অধীর চৌধুরী বলেন, কংগ্রেসের এই অবস্থায় রাহুলজি দায় এড়াতে পারেন না। তাঁকেই সবার আগে দরকার কংগ্রেসে। উত্তরপ্রদেশের লখিমপুরের ঘটনা প্রমাণ করে দিয়েছে, এখনও রাহুল গান্ধী-প্রিয়াঙ্কা গান্ধীরা ময়দানে নামলে কংগ্রেসের হারানো জমি উদ্ধার করা যাবে। তাই ২০২৪-এর আগে কংগ্রেসের দরকার সঙ্ঘবদ্ধতা।
এদিন কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে একপ্রকার স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে, গান্ধী পরিবারের বাইরে এখনও কংগ্রেসের বিকল্প নেতৃত্ব এখনও তৈরি হয়নি। তাই কংগ্রেসের বিদ্রোহ সোনিয়া গান্ধীর দরবারেই শেষ হয়ে গিয়েছে। যখন প্রশ্ন উঠেছে কংগ্রেসে দীর্ঘদিন সভাপতি নেই। তখন সোনিয়া গান্ধী বলে উঠেছেন, কে বলেছে সভাপতি নেই। আমি কংগ্রেসের সভানেত্রী। সবার বিদ্রোহ সেখানেই সমাপ্তি ঘটেছে।
গান্ধী পরিবারের প্রতি কংগ্রেসের একাংশের অনাস্থা জন্মাচ্ছিল। তাঁরা বিকল্প কোনও নেতা চাইছিলেন পার্টির। কিন্তু সে অর্থে কাউকেই সামনে এগিয়ে আসতে দেখা যায়নি সোনিয়া গান্ধীর অন্তর্বর্তীকালীন সবানেত্রী থাকার মেয়াদে। গুলাম নবি আজাদ, কপিল সিব্বল ও আনন্দ শর্মাদের লড়াই তাই মাঝপথেই থমকে গিয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে কেরলের এ কে অ্যান্টনি, বাংলার অধীর চৌধুরীদের মতো নেতারা রাহুল গান্ধীকে ফিরিয়ে আনার সওয়াল করেছেন কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে। আরও অনেকে রাহুলের সমর্থনে গলা ফাটান। অধীর চৌধুরী বলেন, প্রতিদিন একটু একটু করে দল ভাঙছে। দলকে রক্ষা করার মতো, ঐক্যবদ্ধ করে চলার মতো কোনও চেষ্টা দেখা যাচ্ছে না।
তাঁর কথায়. কংগ্রেস যত ভঙ্গুর হচ্ছে, ততই তার জায়গা নিয়ে নিচ্ছে আঞ্চলিক শক্তিগুলি। যেমন বাংলায় তৃণমূল কংগ্রেস। কংগ্রেসের সহযোগিতা ছাড়া কোনওদিন তৃণমূল কংগ্রেস বাম শাসনের অবসান ঘটাতে পারত না বাংলায়। কংগ্রেসের সহযোগিতায় বাংলার পরিবর্তন আনার পর তাঁরা কংগ্রেসকেই ভেঙে খানখান করে দিয়েছে। এখনও সেই ধারা বর্তমান। জোট রাজনীতি করতে গিয়ে আমরাই নিজেদেরকে শেষ করছি। এই অবস্থায় রাহুলজি মুখ ফিরিয়ে থাকতে পারেন না। রাহুলজির নেতৃত্বে কংগ্রেসকে নিজের শক্তি বাড়ানোর কথা ভাবতে হবে।
অধীরের মতে, লখিমপুর আমাদের দেখিয়ে দিয়েছে কংগ্রেস আবার হারানো জমি ফিরে পেতে পারে। রাহুল-প্রিয়াঙ্কা যদি ময়দানে নামেন, তবে কংগ্রেসকর্মীরা উজ্জীবিত হবেনই। উত্তরপ্রদেশের কংগ্রেস কর্মীরা ওই একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে উজ্জীবিত হয়েছেন। সুতরাং আমাদের ওই পথেই এগোতে হবে। মানুষের পাশে থাকার জন্য ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। রাহুল গান্ধী এই মুহূর্তে একমাত্র বিকল্প।