হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ রিপোর্ট মিথ্যা ছাড়া আর কিছুই নয়! পাল্টা সরব আদানি গোষ্ঠী
হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ রিপোর্টের পরেই পরপর দুদিন দেশের শেয়ার বাজারে বড় ধাক্কা খায় আদানি গোষ্ঠী। একইসঙ্গে তাদের ঋণদানকারী দুই সংস্থা এলআইসি এবং এসবিআইও শেয়ার বাজারে বহু কোটি টাকা হারায়।
তাদেরকে নিয়ে মার্কিন সংস্থা হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের রিপোর্টকে মিথ্যা বলে দাবি করল আদানি গোষ্ঠী। তারা এই রিপোর্টকে নিজেদের প্রতিষ্ঠান ছাড়াও ভারতের ওপরে আক্রমণ বলে মন্তব্য করেছে। বিষয়টিকে তাদের প্রতিষ্ঠান এবং ভারতের ওপরে একটি গঠনমূলক আক্রমণ বলে বর্ণনা করেছে তারা।
পাশাপাশি রিপোর্টে করা মন্তব্যকে মিথ্যা বলেও দাবি করেছে আদানি গোষ্ঠী।
আদানি গোষ্ঠীর প্রতিক্রিয়া
হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের রিপোর্ট নিয়ে আদানি গোষ্ঠী ৪১৩ পাতার প্রতিক্রিয়া দিয়েছে। তারা দাবি করেছে এই রিপোর্ট মিথ্যা এবং খারাপ উদ্দেশ্য নিয়ে এই প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। তারা দাবি করে বলেছে, এটি নিছক কোনও নির্দিষ্ট সংস্থার ওপরেই আক্রমণ নয়, তা ভারত, ভারতীয় প্রতিষ্ঠান, তাদের স্বাধীনতা, অখণ্ডতা, গুণমান, ভারতের বৃদ্ধি এবং এগিয়ে যাওয়ার ওপরে পরিকল্পিত আক্রমণ।
ভুল উদ্দেশ্যে ভিত্তিহীন অভিযোগ
আদানি গোষ্ঠী বলেছে, হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের ২৪ জানুয়ারির প্রতিবেদন ভুল তথ্যের সংমিশ্রন। ভুল উদ্দেশ্য নিয়ে ভিত্তিহীন অভিযোগ। তাদের আরও দাবি, তাদেরকে অসম্মানিত করতেই তথ্য গোপন করার অভিযোগ আনা হয়েছে। শেয়ার বাজারে একটা মিথ্যা বাজার তৈরি করার উদ্দেশে হিন্ডেনবার্গ এটা তৈরি করেছে বলেও অভিযোগ করেছে আদানি গোষ্ঠী। বিনিয়োগকারীদের মূল্যে ব্যাপক আর্থিক লাভ করার উদ্দেশেই এটা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে আদানি গোষ্ঠী।
আদানি গোষ্ঠী বলেছে, যে সময় আদানি এন্টারপ্রাইজ লিমিটেড ভারতের ইক্যুইটি শেয়ারের সব থেকে বড় পাবলিক অফার নিয়ে এসেছে, সেই সময় এই রিপোর্টের বিশ্বাসযোগ্যতা এবং নৈতিকতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। তারা আরও অভিযোগ করেছে হিন্ডেনবার্গের রিপোর্টটি স্বাধীন নয়, বরং কোনও স্বার্থ নিয়ে তা করা হয়েছে।
প্রশ্নের উত্তর দিয়েছে আদানি গোষ্ঠী
হিন্ডেনবার্গ যে ৮৮ টি প্রশ্ন তুলেছিল, তার মধ্যে ৬৫ টি প্রশ্ন ছিল আদানি গোষ্ঠীর পোর্টফোলিও সংক্রান্ত। যা যথাযথভাবে প্রকাশ করা হয়েছে বলে দাবি করেছে আদানি গ্রুপ। তাদের তরফে দাবি করা হয়েছে, সব আইন মেনেই তারা কাজ করছেন। তারা সব স্টেকহোল্ডারদের স্বার্থরক্ষার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বলেও জানিয়েছে আদানি গোষ্ঠী। আদানি পোর্টফোলিওতে শক্তিশালী অভ্যন্তরীণ নিয়ন্ত্রণ রয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে। পাশাপাশি পোর্টফোলিও-র সব তালিকভুক্ত কোম্পানিগুলিতে প্রশাসনিক পরিকাঠামো শক্তিশালী বলেও জানানো হয়েছে।
জালিয়াতিতে জড়িত, বলেছিল হিন্ডেনবার্গ রিপোর্ট
গত ২৪ জানুয়ারি রিপোর্ট প্রকাশ করে হিন্ডেনবার্গ বলে তারা তদন্তে দেখেছে, আদানি গোষ্ঠী স্টক ম্যানিপুলেশন এবং অ্যাকাউন্টিং জালিয়াতিতে জড়িত। কয়েক দশক ধরে এই পরিকল্পনা করা হয়েছে বলেও রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে বলে, প্রকাশিত হয়েছে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে। এই রিপোর্ট প্রকাশের পরেই আদানি গোষ্ঠী বৃহস্পতি ও শুক্রবারে ৫০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি বাজার হারায়। আদানি প্রায় ২০ বিলিয়ন ডলারের নিজের সম্পত্তিও হারান।