প্রায় ১৩৫ কোটি করোনা ভ্যাকসিন মজুত রাখা হবে কোন হিমঘরে? চিন্তায় ঘুম উড়ছে কেন্দ্রের
ভারতের জন্য প্রয়োজনীয় ১৩৫ কোটি ভ্যাকসিনের মজুত হবে কোন হিমঘরে
বর্তমানে অন্তিম ট্রায়ালের দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে বেশ কয়েকটি করোনা ভ্যাকসিন । কিন্তু প্রায় ১৩৫কোটি ভারতবাসীর কাছে সেই প্রতিষেধক পৌঁছে দেওয়ার মত পরিকাঠামো কি আদৌও রয়েছে সরকারের কাছে? তা নিয়ে রয়েছে ধোঁয়াশা। যদিও ইতিমধ্যে ওষুধ সংরক্ষণের জন্য ভারতে ব্যবহৃত ২৮,০০০ হিমঘর সম্বিলিত সংস্থা জানিয়েছে -২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নীচে তাদের পক্ষে ভ্যাকসিন সংরক্ষণ কার্যত অসম্ভব। যদিও তাতে কতটা মুশকিল আসান হবে তা নিয়েই তৈরি হয়েছে ধোঁয়াশা।
বিকল্প পন্থা কী শুষ্ক বরফেই ?
এদিকে সমস্যা সমাধানে ভিন্ন পন্থার কথা বলছেন ন্যাশনাল সেন্টার ফর কোল্ড চেইন ডেভেলপমেন্ট (এনসিসিডি)-এর প্রাক্তন সিইও পবনেক্স কোহলি। তাঁর কথায়, " ভ্যাকসিন সংরক্ষণে শুষ্ক বরফ ব্যবহার করা যেতে পারে যা প্রায় দু'দিন পর্যন্ত -৭০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে ভ্যাকসিনের কার্যক্ষমতা অক্ষুন্ন রাখে।।" ইতিমধ্যেই এ বিষয়ে ভাবনাচিন্তা শুরু হয়ে গিয়েছে বলেও সূত্রের খবর। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য একযোগে একাধিক হিমঘরে বড় মাত্রায় ভ্যাকিসন সরবরাহ করার ক্ষেত্রেই গোলযোগ পাকাচ্ছে বলে তাঁর ধারণা। বর্তমানে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসেরও কম তাপমাত্রায় ভ্যাকসিন সংরক্ষণ সম্ভব হলেও এজাতীয় হিমঘরের সংখ্যা হাতেগোনা। এবং তা চলমান একাধিক ভ্যাকসিন কর্মসূচীর কাজেই মূলত ব্যবহৃত হয়।
বেসরকারি-সরকারি সংস্থাগুলির মিলিত প্রয়াসে পথ খোঁজার চেষ্টা
সূত্রের খবর, সরকারি ও বেসরকারি হিমঘর সংস্থাগুলি একযোগে খতিয়ে দেখছে ভারতের পরিকাঠামোগত অবস্থান। এই কাজে অগ্রণী ভূমিকা নিচ্ছে সিরো ক্লিনফার্ম নামক একটি বেসরকারি হিমঘর সংস্থা। এই সংস্থার বাজার উন্নয়ন বিভাগের প্রধান অক্ষয় দাফতারে জানিয়েছেন, "অত্যন্ত শীতল তাপমাত্রায় সংরক্ষণের জন্য উন্নত সফ্টওয়্যার ও ডেটা মনিটর দরকার। ভারত বায়োটেক, জনসন এন্ড জনসন এবং অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রোজেনেকার ভ্যাকিসিনের জন্য যে ২ থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার প্রয়োজন, তা আমরা সরবরাহ করতে সক্ষম।"
ভাইরাসের অভিযোজন সমস্যা হবে গুরুতর
কোহলির কথায়, "প্রথম সারির কোভিড যোদ্ধাদের ভ্যাকসিন দেওয়ার ফলে কোভিড ভাইরাসের অভিযোজন অবশ্যম্ভাবী। সেক্ষেত্রে নতুন করে হিমঘর নেওয়ার ক্ষেত্রে অতিরিক্ত অর্থের বোঝা চাপবে সরকারের মাথায়।" এদিকে সরকারি সূত্রে খবর, কেন্দ্রীয় বাণিজ্য মন্ত্রক দ্বারা সৃষ্ট জিএস১ সংস্থাই এখন থেকে ভারতে প্রতিটি ভ্যাকসিনের সরবরাহ সংক্রান্ত নথি জমা রাখবে।
সিরাম সহ অন্যান্য সংস্থার সাথে একযোগে কাজ করছে জিএস১
জাইডাস ক্যাডিলা, সিরাম ইনস্টিটিউট, ভারত বায়োটেক এবং ডঃ রেড্ডি'স ল্যাবরেটরিস-এর সঙ্গে একযোগে কাজ করছে জিএস১। জিএস১-এর কর্নধার এস স্বামীনাথন জানিয়েছেন, "উৎপাদনের স্থান থেকে দ্বিতীয় ও অন্তিম ধাপের প্যাকেজিং ব্যবস্থা, সকল জায়গাতেই থাকবে জিটিআইএন, কার্টন কোডের মত অত্যাধুনিক প্রযুক্তি।" তিনি আরও জানিয়েছেন, "ভ্যাকসিন প্রস্তুতের সময়, ব্যবহারের শেষ সময় সহ তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রক মনিটর, সবকিছুর হিসাবই হবে সরকারি ড্রাগ নিয়মাবলী মেনে।" সূত্র বলছে, ২০২১-এর জুলাইয়ের মধ্যে ৪০-৫০ কোটি ডোজের মাধ্যমে দেশের প্রায় ২০-২৫ কোটি মানুষকে টিকাকরণের আওতায় আনার প্রচেষ্টায় রয়েছে জিএস১।
চোখের জলে তেহট্টের বীর সন্তান সুবোধ ঘোষের শেষকৃত্য সম্পন্ন