ত্রিপুরায় এক তৃতীয়াংশের বেশি বিধায়ক তৃণমূলের পথে, কতটা সংকটে বিজেপি সরকার
ত্রিপুরায় এক তৃতীয়াংশের বেশি বিধায়ক তৃণমূলের পথে, কতটা সংকটে বিজেপি সরকার
পশ্চিমবঙ্গে মুকুল রায় (mukul roy) বিজেপি (bjp) ছেড়ে তৃণমূলে (trinamool congress) ফিরতেই ত্রিপুরায় তৃণমূলের সংগঠনে আশার আলো। বিধানসভায় বিজেপির সম্ভাব্য ভাঙনে সময় শেষ হওয়ার আগে কেউ কেউ সেখানে বিজেপির সরকার ভেঙে যাওরা কথাও বলছেন। যদিও পরিস্থিতি বলছে অন্য কথা।
২০১৮-র নির্বাচনে পরিস্থিতি
২০১৮-র ১৮ ফেব্রুয়ারি ত্রিপুরার বিধানসভা নির্বাচনে ২৫ বছরের বামফ্রন্ট সরকারকে সরিয়ে ক্ষমতায় আসে বিজেপি। ৬০ টি আসনের মধ্যে ৫৯ টি আসনে হওয়া নির্বাচনে বিজেপি ৩৫ টি আসন দখল করে। জোটসঙ্গী আইপিএফটি পায় ৮ টি আসন। জোট সর্বমোট পায় ৪৩ টি আসন। আর বিপক্ষে বামেরা পায় ১৬ টি আসন।
মুকুল তৃণমূল ছাড়তেই প্রভাব পড়ে ত্রিপুরায়
২০১৪ সালে মুকুল রায়কে তৃণমূলের তরফে ত্রিপুরার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। ২০১৬-তে তাঁর হাত ধরেই কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেন তৎকালীন বিরোধী দলনেতা সুদীপ রায়বর্মন-সহ সাতজন। কিন্তু ২০১৭-র নভেম্বরে মুকুল রায় বিজেপিতে যোগ দিতেই সুদীপ রায়বর্মন অনুগামীদের নিয়ে বিজেপিতে যোগ দেন। বিধানসভায় সুদীপ রায়বর্মনের অনেক অনুগামীকেই টিকিট দেয় বিজেপি।
সুদীপ রায় বর্মন এখন বিক্ষুব্ধ
২০১৮-তে নির্বাচন হলেও, ত্রিপুরায় বিজেপির বিক্ষুব্ধ শিবির তৈরি হতে বেশিদিন সময় লাগেনি। মূলত বিপ্লব দেবকে মুখ্যমন্ত্রী করা এবং সুদীপ রায় বর্মনকে গুরুত্ব না দেওয়ার অভিযোগ শুরু থেকেই ছিল। পরবর্তী সময়ে ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনের আগে সুদীপ রায় বর্মনকে মন্ত্রিসভা থেকে সরিয়ে দেন বিপ্লব দেব। তার পর থেকে ফাটল আরও চওড়া হয়। গতবছর থেকেই অন্তত ১২ জন বিধায়ক রয়েছেন সুদীপ রায়বর্মনের সঙ্গে। তাঁরা নিজেদের অবস্থান জানান দিতে আলাদা কর্মসূচিও নেন। কিন্তু অপেক্ষা ছিল মুকুল রায়ের দলবদলের।
মুকুল রায় দলবদল করতেই ত্রিপুরায় বিজেপির জরুরি বৈঠক
মুকুল রায় দলবদল করতেই তার প্রভাব গিয়ে পড়ে ত্রিপুরায়। সুদীপ রায় বন্মনের মোকাবিলা করে ঘর গোছানোয় মন দিয়েছে গেরুয়া শিবির। বুধাবর বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতা (সংগঠন) বিএল সন্তোষ আগরতলায় গিয়ে বৈঠক করেন সুদীপ রায় বর্মন অনুগামী বেশ কিছু বিধায়কের সঙ্গে। সেখানে ছিলেন সুদীপ রায় বর্মন। প্রসঙ্গত যেসব বিধায়ককে ডাকা হয়েছিল, তাঁরা সবাই সুদীপ রায় বর্মনের সঙ্গে ২০১৭-তে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন।
বিজেপি বিধায়কদলের এক তৃতীয়াংশের বেশি বিধায়ক 'বিক্ষুব্ধ'
সূত্রের খবর অনুযায়ী, এই মুহূর্তে ত্রিপুরার অন্তত ১৩ জন বিধায়ক সুদীপ রায় বর্মনের সঙ্গে রয়েছেন। এঁরাই কলকাতায় গিয়ে তৃণমূলে যোগ দিতে পারেন বলে সূত্রের খবর। ইতিমধ্যে সুদীপ রায় বর্মন আলাদা ফেসবুক পেজ খুলেছেন। শোনা যাচ্ছে যা করা হয়েছে মুকুল রায়ের সঙ্গে কথা বলেই।
সরকারের পতনের সম্ভাবনা এখনই নেই
যদি বিজেপির ৩৫ জন বিধায়কের মধ্যে ১৩ জন বিধায়কও দলবদল করেন, তাহলে এই মুহূর্তে ত্রিপুরায় বিজেপির সরকারে পড়ে যাওয়ার কোনও সম্ভাবনা দেখছেন না রাজনীতিবিদরা। কেননা সেক্ষেত্রে বিজেপির ২২ জন বিধায়কের সঙ্গে আইপিএফটির ৮ জন বিধায়ক যুক্ত হবেন। ৫৯ সদস্যের বিধানসভায় যা অর্ধেকের বেশি। আর আইপিএফটিও এখনও বিধায়সভায় বিজেপির ওপর থেকে সমর্থন তুলে নেওয়ার কথা জানায়নি।