টার্গেট ২০১৯! বিজেপির প্রার্থী তালিকা থেকে বাদ পড়তে চলেছেন দেড় ডজন মন্ত্রী, ৪৫% সাংসদ
কমপক্ষে ১২০ জন বিজেপি সাংসদ ২০১৯-এর নির্বাচনে মনোনয়ন পাবেন না। সূত্রের খবর অনুযায়ী, তাঁদের মধ্যে রয়েছেন দেড় ডজনের মতো কেন্দ্রীয় মন্ত্রীও।
কমপক্ষে ১২০ জন বিজেপি সাংসদ ২০১৯-এর নির্বাচনে মনোনয়ন পাবেন না। সূত্রের খবর অনুযায়ী, তাঁদের মধ্যে রয়েছেন দেড় ডজনের মতো কেন্দ্রীয় মন্ত্রীও।
সাংসদদের তালিকায় যাঁদের বয়স ৭৫ বছর হয়ে যাচ্ছে তাঁদের রাখা হয়েছে। তবে সেই তালিকায় লালকৃষ্ণ আডবানীর নাম রয়েছে কিনা তা জানা যায়নি। বর্তমানে ২৭৩ জন বিজেপি সাংসদের মধ্যে প্রায় ৪৫ শতাংশই পরেরবারের জন্য মনোনয়ন পাচ্ছেন না বলে জানা গিয়েছে।
বিজেপি-র সর্বভারতীয় স্তরে বিভিন্ন পর্যায় থেকে সাংসদদের সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। তাঁদের কর্মক্ষমতাও যাচাই করা হচ্ছে। এছাড়াও রিপোর্ট নেওয়া হচ্ছে আরএসএস, দলীয় কর্মীদের থেকেও। প্রাইভেট এজেন্সিকে দিয়ে করানো সার্ভে এবং নমো অ্যাপের সার্ভেকেও গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে।
হরিয়ানার সুরজকুণ্ডে সম্প্রতি বিজেপি বৈঠক হয়েছে। সারা দেশ থেকে সংগঠনিক সম্পাদক, আরএসএস কর্তারা হাজির ছিলেন সেই বৈঠকে। সেখানেই বর্তমান সাংসদদের পুনরায় টিকিট দেওয়া নিয়ে আলোচনা হয় বলে সূত্রের খবর। আলোচনায় সেখানেই উঠে আসে প্রায় ১০০ সাংসদ কর্মদক্ষতা এবং জনপ্রিয়তার নিরিখে খুবই দুর্বল অবস্থানে রয়েছেন।
এই ১০০ সাংসদকে বাদ দেওয়ার পর তালিকায় রয়েছেন, পাটনা সাহিবের সাংসদ শত্রুঘ্ন সিনহা, দারভাঙার সাংসদ কীর্তি আজাদ। এঁরা দুজনেই বর্তমানে বিজেপি বিরোধী বলেই পরিচিত।
এছাড়াও খারাপ জায়গায় রয়েছেন উত্তর প্রদেশের কমপক্ষে ১৮ জন সাংসদ। ২০১৪-র নির্বাচনে উত্তরপ্রদেশের ৮০ টি আসনের মধ্যে ৭১ টিতে জয়ী হয়েছিল বিজেপি। উত্তর প্রদেশের পরেই রয়েছে রাজস্থান। যেখানে ২৫ আসনের সবকটিতেই জয়ী হয়েছিল বিজেপি। তালিকায় বিহার, মধ্যপ্রদেশ, গুজরাত ও কর্ণাটকের বেশ কয়েকজন সাংসদও রয়েছেন বলে জানা গিয়েছে।
কর্মদক্ষতা ও জনপ্রিয়তাকে বাদ দিলে প্রায় ১৯ জনকে টিকিট নাও হতে পারে বয়সজনিত কারণে। তাঁরা সবাই ৭৫ বছর পেরিয়ে যাচ্ছেন। ৭৫ পেরনোর তালিকায় যাঁরা রয়েছেন তাঁরা হলেন, মুরলি মনোহর যোশী(৮৪), কারিয়া মুণ্ডা(৮২), শান্তা কুমার(৮৩), ভুবন খাণ্ডুরি(৮৩), লীলা ধরভাই বাঘেলা(৮৩), কলরাজ মিশ্র(৭৬), রাম তাহাল চৌধুরী(৭৬), হুকুম দেও নারায়ণ যাদব(৭৯)।
যেসব সাংসদের কাজের রিপোর্ট ভাল নয়, তাঁদের সামনের ছয় মাস সময় দেওয়া হয়েছে। এই সময়ের মধ্যে পরিবর্ত প্রার্থী খুঁজে নেওয়ার কাজও চালানো হবে দলের তরফ থেকে। তবে মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান, ছত্তিসগড়, মিজোরামের ভোটের পর প্রার্থীদের নিয়ে চূড়ান্ত সমীক্ষা চালানো হবে বলে জানা গিয়েছে।
ইতিমধ্যের বর্তমানে যে সব কেন্দ্রে বিজেপি সাংসদ রয়েছেন, সেই সব কেন্দ্রে সাংসদদের জনপ্রিয়তার সমীক্ষা চালানো হচ্ছে। পাশাপাশি সেইসব কেন্দ্রে অন্য কোন নেতার জনপ্রিয়তা বেশি, তারও সমীক্ষা চালানো হচ্ছে। এই রিপোর্ট সংসদে বর্ষাকালীন অধিবেশন শুরুর আগেই তৈরি হয়ে যাবে বলে জানা গিয়েছে।
উত্তর-পূর্ব, পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িশা, অন্ধ্রপ্রদেশ, তেলেঙ্গানাকে বাদ দিয়ে বাকি রাজ্যগুলির প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করার ব্যাপারে আর কোনও দেরি করা হবে না বলেও জানা গিয়েছে। কিছু কিছু জায়গায়, বিজেপির তরফ থেকে ঘোষণা করা না হলেও, কাউকে কাউকে নির্বাচনের কাজ শুরু করতে বলে দেওয়া হবে।
দিল্লি ও মধ্যপ্রদেশের একাধিক সাংসদের ওপর কোপ পড়তে চলেছে বলে জানা গিয়েছে।
ইতিমধ্যেই দুই কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রাধামোহন সিং এবং উমা ভারতী পরবর্তী নির্বাচনে না দাঁড়ানোর ব্যাপারে নিজেদের সিদ্ধান্তের কথা দলকে জানিয়েছেন। তালিকায় রয়েছেন লোকসভার স্পিকার সুমিত্রা মহাজন।
শারীরিক কারণে সম্ভবত নির্বাচনে দাঁড় করানো হবে না বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজকে। তাঁর কেন্দ্র মধ্যপ্রদেশের বিদিশা থেকে রিপোর্টও ভাল আসেনি বলে সূত্রের খবর। তবে তাঁকে প্রয়োজনে রাজ্যসভা দাঁড় করানো হতে পারে।
২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনের আগে বিভিন্ন রাজ্যে দলের দায়িত্বপ্রাপ্তদেরও পরিবর্তন করা হতে পারে জানা গিয়েছে। তাঁদেরকে আলাদা আলাদা কোনও দায়িত্ব দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে জানা গিয়েছে। আবার ভূপেন্দ্র যাদব, অনিল জৈন, রাম মাধব, অনিল বালুনির মতো নেতাদের নির্বাচনের সংগঠনের দায়িত্ব দিয়ে কোনও রাজ্যে পাঠানো হতে পারে বলে জানা গিয়েছে।