
ত্রিপুরায় হেরে হাল ছেড়ে দেবে না তৃণমূল, ২০২৩-এর রূপরেখা তৈরি করে দিলেন অভিষেক
ত্রিপুরাতে কোনও খাতা খুলতে পারল না তৃণমূল। খাতা খোলা তো দূর অস্ত, তৃণমূলের কোনও প্রার্থী জামানত বাঁচাতেও পারেননি। এরপরও তৃণমূল হাল ছাড়ছে না। কারণ ত্রিপুরার উপনির্বাচনে ত্রিপুরাবাসীর সঠিক প্রতিফল হয়নি বলেই মনে করছেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।

ত্রিপুরার উপনির্বাচনে তারটি কেন্দ্রেই মুখ থুবড়ে পড়েছে তৃণমূল। যা ভোট পেয়েছেন তৃণমূল প্রার্থীরা তার থেকে কাউন্সিলররা বেশি ভোট পায় বলে কটাক্ষ করেছেন শুভেন্দু অধিকারী। তার পাল্টা দিয়ে শুভেন্দু অধিকারীকে একহাত নেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। আর সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ব্যাখ্যা দেন, কেন তৃণমূলের ভরাডুবি হল।
অভিষেক বলেন, মানুষ যা রায় দিয়েছেন, তা আমরা মাথা পেতে নিয়েছি। কিন্তু যে ফলাফ এদিন সামনে এসেছে, তা ত্রিপুরাবাসীর প্রকৃত প্রতিফলন নয়। বিজেপি যে ত্রিপুরায় জয় পেয়েছে, তা ভোট লুঠের ফল বলে তিনি ব্যাখ্যা করেছেন। ভোট লুঠ করে বিজেপিতে জিতেছে বলে দাবি অভিষেকের। কলকাতা বিমান বন্দরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে একথা বলেন অভিষেক।
অভিষেকের কথা, ভোটের দিন যেভাবে গুন্ডামি, লুঠপাট চালানো হয়েছে, তাতে এই ফলই কাম্য। ভোটের নামে প্রহসন হয়েছে। সেই প্রহসনের ফলপ্রকাশ হল এদিন। বহুতে এজেন্টকে বসতে দেওয়া হয়নি। ভুয়ো ভোটার দিয়ে অবাধ ছাপ্পা মারা হয়েছে। আমরা ভুয়ো ভোটার ধরেছি। সংবাদ মাধ্যমের প্রতিনিধিদের ছবিতে উঠে এসেছেন গণতন্ত্রের লজ্জাজনক সব ছবি। তাই এদিনের ফলাফল মানুষের সঠিক প্রতিফলন নয়।
অভিষেক বলেন, গণতন্ত্রে গণদেবতাই আসল। মানুষ যা রায় দিয়েছেন তা আমরা মাথা পেতে নিচ্ছি। কিন্তু যে লড়াইয়ে আমরা নেমেছি, সেই লড়াই এখানেই থেমে যাবে না। আমরা লড়াই চালিয়ে যাব। আমরা ত্রিপুরাবাসীর পাশে দাঁড়াব। যাঁরা ভোট দিয়েছেন তাঁদের পাশেও থাকব, যাঁরা ভোট দেননি তাঁদের পাশেও থাকব।
তাঁর কথায়, যতদিন না ত্রিপুরায় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হচ্ছে তৃণমূল একচুল জমিও ছাড়বে না। যে মানসিকতা নিয়ে আমাদের লড়াই শুরু হয়েছিল, সেই অবস্থান থেকে আমরা সরে আসব না। আমাদের পরবর্তী লক্ষ্য ২০২৩-এর বিধানসভা নির্বাচন। তৃণমূল রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, ২০২৩-এ তৃণমূল কংগ্রেস ত্রিপুরার ক্ষমতা দখলে বিজেপি বিরোধী শক্তির নেতৃত্ব দেবে।
উল্লেখ্য, ত্রিপুরায় উপনির্বাচনে চারটি বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে তিনটিতে জয়ী হয়েছে। দুটি তারা ধরে রেখেছে, একটি তারা ছিনিয়ে নিয়েছে সিপিএমের কাছ থেকে। ২৯ বছর পর সিপিএমের হাতছাড়া হয়েছে যুবরাজনগর কেন্দ্রটি। আর বিজেপির হাতছাড়া হয়েছে আগরতলা আসনটি। কংগ্রেসের সুদীপ রায় বর্মন তা বিজেপির থেকে ছিনিয়ে নিয়ে ২০২৩-এর বিধানসভা নির্বাচনের প্রেক্ষাপট তৈরি করে দিয়েছে। বরদোয়ারি কেন্দ্র থেকে জয়ী হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা। আর সরমা কেন্দ্রেও বিজেপি জয়ী হয়েছে।