ফের অশান্তির আঁচ, 'অসমবাসীর সংজ্ঞা' সংক্রান্ত গোপন রিপোর্ট প্রকাশ্যে! বিতাড়িত হবেন বাঙালিরা?
২০১৯ সালের শেষ লগ্নে এসে জ্বলে ওঠে অসম। এই বিক্ষোভএর মূলে ছিল নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন। এবং সেই বিক্ষোভের আগুন নেভাতেই অসমের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনওয়াল অসম চুক্তির ৬ নম্বর ধারা দ্রুত বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। অসম চুক্তির এই ৬ নম্বর ধারা বাস্তবায়ন তখনই সম্ভব, যখন 'অসমবাসী' কে, সেই সংক্রান্ত সংজ্ঞা পাওয়া যাবে।
প্রকৃত অসমবাসী কে?
অসমের মানুষ বা প্রকৃত অসমবাসী কে? তা নির্ধারণের জন্যে গঠিত হয়েছিল এক ১৪ সদস্যের কমিটি। ফেব্রুয়ারিতেই এই কমিটি তাঁদের রিপোর্ট জমা দিয়েছিল। শেষ পর্যন্ত সেই রিপোর্টটি প্রকাশ করা হল মঙ্গলবার। এই রিপোর্ট প্রকাশ করেন কমিটির চারজন সদস্য। তাঁদের মধ্যে তিনজনই অল অসম স্টুডেন্ট ইউনিয়নের নেতা।
১৯৫১ সালের ১ জনুয়ারিকে বানানো হয়েছে ভিত্তি বছর
কী বলা হয়েছে রিপোর্টে? অসমে বসবাসরত সকল আদিবাসী ও তাঁদের সন্তানরা অসমিয়া। তাছাড়া যে সকল ভারতীয় অন্য জায়গা থেকে এসে অসমে ১৯৫১ সালের ১ জনুয়ারির আগে থেকে বসবাস শুরু করেছেন, তাঁরা এবং তাঁদের সন্তান ও বংশ অসমিয়া।
অসম অ্যাকর্ডের ৬ নম্বর ধারা
অসম অ্যাকর্ডের ৬ নম্বর ধারা অনুযায়ী অসমের মানুষের সাংস্কৃতিক, সামাজিক, ভাষাগত পরিচয় এবং ঐতিহ্য সুনিশ্চিত করার জন্য সাংবিধানিক, আইনগত এবং প্রশাসনিক নিরাপত্তা দিতে হবে। সেই ভিত্তিতেই সিএএ-র বিরুদ্ধে জনরোষ দেখা দেয় অসমে।
বিজেপি আমলে গঠন হয় কমিটি
১৯৭৯ থেকে অসমের ৬ বছরের আন্দোলন শেষে অল অসম স্টুডেন্ট ইউনিয়নের সঙ্গে স্বাক্ষরিত হয় অসম অ্যাকর্ড। সেই চুক্তির ৬ নম্বর ধারা বাস্তবায়িত করতে এত বছরে কোনও কমিটি গঠন না হলেও বিজেপি আমলে গঠন হয় কমিটি। তবে ২০১৬ সালের প্রস্তাবিত নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের বিরোধিতায় সেই কমিটি থেকে পদত্যাগ করেন তিনজন।
সিএএ-র বিরোধিতা
অসম অ্যাকর্ডের ৬-নম্বর ধারা অনুযায়ী অসমে নাগরিকত্ব পাওয়ার কাট-অফ তারিখ হচ্ছে ২১ মার্চ ১৯৭১, আর নাগরিকত্ব বিল বলছে তারিখটি হবে ৩১ ডিসেম্বর ২০১৪। অসমবাসীর দাবি ছিল যে আগে ৬ নম্বর ধারা বাস্তবায়িত হোক। তারপর সিএএ। গত বছর অক্টোবর মাসে অসম গণ পরিষদ এই নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে মিছিল করেছিল সে রাজ্যে।
৬ নম্বর ধারা বাস্তবায়নে রয়েছে প্রচুর বাধা
এই ৬ নম্বর ধারা বাস্তবায়নে রয়েছে প্রচুর বাধা। কাদেরকে বলা হবে আসল অসমিয়া। তা নিয়ে ধন্দে ছিল সকলেই। কোন ভিত্তিতে রাজনৈতিক সংরক্ষণ বা চাকরির সংরক্ষণ, তাও স্পষ্ট নয়। কমিটি তাদের রিপোর্টও জমা দিলেও তা সরকারি ভাবে ঘোষণা করা হয়নি। তবে এটা যত দেরি হবে তত আরও অশান্ত হবে অসম।
অসমিয়া হওয়ার সংজ্ঞা প্রাকাশে অশান্তির আঁচ
এবার সেই অসমিয়া হওয়ার সংজ্ঞাই প্রকাশ করা হল। তবে এটা যেভাবে সামনে এল তাতে অশান্তি আরও বেশি ছড়াতে পারে বল মনে করা হচ্ছে। এই বিষয়ে সর্বানন্দ সোনওয়ালও বলেছেন, যে এভাবে কমিটির রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসা দুর্ভাগ্যজনক। আমরা অসম চুক্তির ৬ নম্বর ধারা বাস্তবায়িত করতে বদ্ধপরিকর। এদিকে বিজেপি সেরাজ্যে বাঙালি হিন্দিদেরও বাঁচাতে যায়। এনআরসিতে যেই ১৯ লক্ষ নাম বাদ পড়েছে তাতে রয়েছেন ৬ থেকে ৭ লক্ষ বাঙালি, ১ লক্ষ গোরখা। তাদের কী হবে এবার?
শক্তিরূপেণ সংস্থিতা, ইতিহাস গড়ল ভারতীয় সেনা! প্রথমবারের জন্য পাক সীমান্তে নিযুক্ত নারীরা