১০ মিনিটে ২ কোটির জমি বিক্রি ১৮.৫ কোটিতে, দুর্নীতির অভিযোগ রাম মন্দির নিয়ে
দুর্নীতির অভিযোগ রাম মন্দির নিয়ে
অযোধ্যার রাম মন্দিরের চত্ত্বর বাড়ানোর পরিকল্পনা নিয়ে রাম জন্মভূমি তীর্থক্ষেত্র ট্রাস্ট এ বছরের ১৮ মার্চ জমি কিনেছিলেন, কিন্তু জমি নিয়ে দুর্নীতি ও প্রতারণার অভিযোগ তুলেছে সমাজবাদী পার্টি ও আম আদমি পার্টি। তাদের অভিযোগ, মাত্র ১০ মিনিটের ব্যবধানে জমির একটি অংশের দাম দু'কোটি থেকে বেড়ে দাঁড়াল ১৮.৫ কোটি টাকা। রবিবার প্রধানমন্ত্রীর প্রাক্তন মুখ্য সচিব তথা রাম জন্মভূমি তীর্থ ক্ষেত্র ট্রাস্ট নির্মাণ কমিটির প্রধান নৃপেন্দ্র মিশ্র ট্রাস্টি ও বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে অযোধ্যায় দেখা করে মন্দিরের কাজকর্মের বিষয় নিয়ে আলোচনা করার পাশাপাশি এ প্রসঙ্গেও কথা বলেন।
আপ নেতার অভিযোগ
অন্যদিকে, লখনউতে উত্তরপ্রদেশের আপের দায়িত্বে থাকা এবং সংসদের সদস্য সঞ্জয় সিং সাংবাদিক সম্মেলন করে বলেন, 'অযোধ্যায় জমিগুলি ২৪৩,২৪৪ ও ২৪৬ নম্বরে রেজিস্টার করা রয়েছে। যার মূল্য ৫.৮০ কোটি টাকা। এটা কিনেছিলেন কুসুম পাঠক এবং হরিশ পাঠক সুলতান আনসারি ও রবি মোহন তিওয়ারির থেকে ২ কোটি টাকায়। এই জমি কেনার দু'জন সাক্ষী রয়েছেন, রাম জন্মভূমি ট্রাস্টের সদস্য অনিল মিশ্র ও অযোধ্যার মেয়র হৃশিকেশ উপাধ্যায়। সন্ধ্যা ৭টা ১০ নাগাদ এই জমি কেনা বেচা হয়। এর পরের পাঁচ মিনিটেও ওই একই জমির অংশ কেনে রাম জন্মভূমি ট্রাস্ট এবং চম্পত রাই, তবে ১৮.৫ কোটি টাকায় আনসারি ও তিওয়ারির থেকে। আরটিজিএসের মাধ্যমে ১৭ কোটি স্থানান্তর করা হয়।' আপ নেতা দাবি করেন যে প্রতি সেকেন্ডে ওই জমির দাম বেড়েছে ৫.৫ লাখ টাকা।
মন্দির ট্রাস্টের বিবৃতি
চাপের মুখে পড়ে রবিবার গভীর রাতে মন্দিরের ট্রাস্টের পক্ষ থেকে চম্ত রাই বিবৃতি জারি করে জানান যে বর্তমান জমির মালিকের সঙ্গে এই জমি নিয়ে এক বছর আগেই চুক্তি রেজিস্টার হয়েছিল এবং ১৮ মার্চ বায়না হওয়ার পর তারা ট্রাস্টকে জমিটি বিক্রি করে দেয়। বিবৃতিতে এও বলা হয়েছে, '২০১৯ সালের ৯ নভেম্বর সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর অযোধ্যার সার্বিক বিকাশের জন্য জমি কিনতে শুরু করেছে যোগী আদিত্যনাথের সরকার। স্বাভাবিক কারণেই গোটা এলাকায় জমির দাম একলাফে অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে। যে জমিটি নিয়ে আলোচনা হচ্ছে তা রেল স্টেশন থেকে খুবই কাছে এবং তাই এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি লোকেশনও। ট্রাস্ট যে জমিগুলি কিনেছে তা বাজার দরের থেকে অনেক কম মূল্যে।' প্রসঙ্গত, আপের সঞ্জয় সিং দাবি করেছেন যে ওইদিন বিকেল ৫টা ১১ নাগাদ প্রথমবার জমি কেনার জন্য স্ট্যাম্প পেপার কেনা হয় এবং তারপর ৫টা ২২ নাগাদ ফের স্ট্যাম্প পেপার কেনা হয়। তিনি এও দাবি করেছেন যে কোটি কোটি মানুষের ধর্মীয় বিশ্বাসের জন্য এই ঘটনাটি সিবিআই বা ইডিকে দিয়ে তদন্ত করানো হোক।
একই অভিযোগ সপার
আর একটি সাংবাদিক সম্মেলনে সমাজবাদী পার্টির নেতা এবং প্রাক্তন বিধায়ক পবন পাণ্ডে একই ধরনের প্রশ্ন তুলেছেন। তিনি বলেন, 'ট্রাস্টিকে সাক্ষী রেখেই ২ কোটি টাকায় জমিটি কেনা হয়। কিছু মিনিটের মধ্যে কি জমিটা থেকে সোনা বের হচ্ছিল যে তার দাম ১৮.৫ কোটি হয়ে গেল। যার সাক্ষী রইলেন ট্রাস্টি সহ মেয়র হৃষিকেশ উপাধ্যায়। আমার কাছে এ বিষয়ে তথ্য রয়েছে।' তবে ট্রাস্টের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে রাজনৈতিক কারণেই তোলা হচ্ছে জমি দুর্নীতির অভিযোগ। ট্রাস্ট বলেছে, 'সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত এবং এটা পপরোপুরি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।'
রাম মন্দির চত্ত্বরের সুরক্ষার খাতিরে জমি কেনা
ট্রাস্টের সাধারণ সম্পাদক চম্পত রাইয়ের তরফে একটি বিবৃতি জারি করে দাবি করা হয়েছে, রাম মন্দির চত্ত্বরের সুরক্ষা এবং পুনর্বাসন সংক্রান্ত কারণে জমি কিনতে হচ্ছে ট্রাস্টকে। আর সেই কারণেই অনলাইনে স্ট্যাম্প পেপার-সহ বিভিন্ন প্রয়োজনীয় নথি কেনা হচ্ছে। আর সম্মতিপত্রের ভিত্তিতে কেনা হচ্ছে ওই সমস্ত জমি।