কংগ্রেসের যাত্রাভঙ্গ করে বিজেপির জয়ের পথ সুগম করছে আপ, রাহুল তবু আশাবাদী মোদী-রাজ্যে
কংগ্রেসের যাত্রাভঙ্গ করে বিজেপির জয়ের পথ সুগম করছে আপ, রাহুল তবু আশাবাদী মোদী-রাজ্যে
মোদী-রাজ্যে মহারণের দামামা বেজে গিয়েছে। এই অবস্থায় গুজরাতে বিজেপির চ্যালেঞ্জার হয়ে ওটার লড়াইয়ের কোমর বেঁধে নেমে পড়েছে আপ। কিন্তু কংগ্রেস হাইকম্যান্ডের সেভাবে সাড়া নেই। তাতেই রাজনৈতিক মহলে জল্পনা বেড়েছে। তবে কি কংগ্রেস মোদী-রাজ্যে পিছু হটতে শুরু করেছে। কংগ্রেসের ভোটব্যাঙ্কে আপ থাবা বসাতে পারে, এমন সম্ভাবনার পরও কেন নিশ্চুপ কংগ্রেস?
ভারত পরিক্রমায় ব্যস্ত রাহুল গুজরাতে নেই
গুজরাতে গতবার স্বল্প ব্যবধানে জিতে ক্ষমতা ধরে রাখতে পেরেছিল বিজেপি। কংগ্রেস প্রায় হারিয়েই দিয়েছিল তাদের। সেবার রাহুল গান্ধী সামনে দাঁড়িয়ে দলকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। এবার তিনি ভারত জোড়ো যাত্রায় ব্যস্ত। তিনি ভারত পরিক্রমায় বেরিয়ে বিশাল মিছিল নিয়ে ভোটের মধ্যে গুজরাতে প্রবেশ করবেন না। এ মাসে তিনি মহারাষ্ট্র পরিক্রমা করবেন।
গুজরাতের প্রদেশ কংগ্রেসের উপর সম্পূর্ণ আস্থা
তাহলে গুজরাতের কী হবে? কংগ্রেস কি তবে লড়াইয়ের ময়দান ছেড়ে দেবে আম আদমি পার্টিকে। বিজেপির প্রধান প্রতিপক্ষ হয়ে উঠবে আম আদমি পার্টি। সে সম্ভাবনা অবশ্য খারিজ করে দিয়েছেন রাহুল গান্ধী। তিনি স্পষ্ট করেই জানিয়ে দিয়েছেন, গুজরাতের প্রদেশ কংগ্রেসের উপর তাঁদের সম্পূর্ণ আস্থা রয়েছে, তাঁরাই এবার বিজেপিকে হারিয় ক্ষমতা দখল করবে।
আপ কি কি ভাগ বসাবে কংগ্রেসের ভোটব্যাঙ্কে?
একটা প্রশ্ন উঠেই যাচ্ছে, আম আদমি পার্টি কি ভাগ বসাবে কংগ্রেসের ভোটব্যাঙ্কে? সেই প্রশ্নের উত্তরে কংগ্রেস সাংসদ বলেন, মানুষ জানে বিজেপিকে কে হারাতে পারবে। তাই আম আদমি পার্টি লম্ফঝম্ফ করলেও কিছু করতে পারবে না। কংগ্রেসের সঙ্গেই লড়াই হবে বিজেপির। এবং সেই ভোটে বিজেপিকে হারিয়ে কংগ্রেস এবার সরকরা গঠন করার ব্যাপারে আশাবাদী বলে জানান তিনি।
গুজরাতের সম্ভাবনা নিয়ে জোরদার আলোচনা
সম্র্েতি কংগ্রেস সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন মল্লিকার্জুন খাড়গে। তারপরই তিনি কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিটির সঙ্গে বৈঠক করেন। কংগ্রেসের নির্বাচন কমিটির সাধারণ সম্পাদক মুকুল ওয়াসনিক, কেসি বেণুগোপাল, মহসিনা কিদওয়াই, গিরিজা ব্যাস, অম্বিকা সোনিরা উপস্থিত ছিলেন। ভার্চুয়ালি উপস্থিত ছিলেন সোনিয়া গান্ধী। উপস্থিত ছিলেনি সর্বভারতীয় কংগ্রেস কমিটির গুজরাত বিভাগের প্রধান রঘু শর্মা, গুজরাত কংগ্রেসের পর্যবেক্ষক জগদীশ ঠাকুরও। তাঁদের বৈঠকে গুজরাতের সম্ভাবনা নিয়ে জোরদার আলোচনা হয়।
সাম্প্রতিক সমীক্ষা রিপোর্টের পর্যালোচনায়
রাজনৈতিক মহল মনে করছে, ২০১৭ সালে যে ফল করেছিল কংগ্রেস, তা এবার ধরে রাখতে পারবে না। আসন ও ভোটের হার উভয়ই কমবে। সমীক্ষা রিপোর্ট বলছে আসন সংখ্যা অর্ধেক হয়ে যেতে পারে আর ভোট কমতে পারে প্রায় ১২ শতাংশ। সেই ভোট আম আদমি পার্টির ঝুলিয়ে যাবে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ। এর ফলে প্রায় ২০ শতাংশ ভোট পেতে পারে তারা। আসন সংখ্যাও ১৫ থেকে ২০ হতে পারে। কিন্তু কংগ্রেস তা মানতে নারাজ।
কংগ্রেসের যাত্রাভঙ্গ আর বিজেপির যাত্রাপথ সুগম করছে আপ
আম আদমি পার্টি বিজেপি ও কংগ্রেসকে জোর টক্কর দিতে তৈরি। প্রথমবার ভোট ময়দানে নেমেই চমক দিতে পারে তারা। মূলত কংগ্রেসেরে ভোট ভেঙেই তাদের উত্থান হবে। এর ফলে বিজেপি সুবিধা পাবে বলেই মনে করছে। কংগ্রেসের একাংশের অভিযোগ, আম আদমি পার্টি বিভিন্ন রাজ্যে শাখা খুলে বিজেপিরই সুবিধা করে দিচ্ছে। কার্যত বিজেপির বি টিম হিসেবে কাজ করছে। তবে কংগ্রেসের বিশ্বাস, মানুষ বুঝবেন বিজেপিকে হারাতে গেলে আম আদমি পার্টি নয়, কংগ্রেসকেই ভোট দিতে হবে। কেননা আম আদমি পার্টি এসেছে কংগ্রেসের যাত্রাভঙ্গ করে বিজেপির যাত্রাপথ সুগম করতে।
ইন্দ্রনীল রাজগুরুর ফিরে আসায় কংগ্রেসের লাভ কতটা
এর মধ্যে আবার আম আদমি পার্টি ছেড়ে কংগ্রেসে ফিরে এসেছেন ইন্দ্রনীল রাজগুরু। তিনি কংগ্রেসে ছেড়ে মাস ছয়েক আগে আম আদমি পার্টিতে যোগ দেন। তাঁকে সামনে রেখেই দল সাজাচ্ছিলেন আপ সুপ্রিমো অরবিন্দ কেজরিওয়াল। কিন্তু তাঁকে মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী না করে প্রাক্তন টিভি সঞ্চালক ইসুদান গড়বিকে বেছে নেওয়ায় রাজগুরু ফিরে আসেন কংগ্রেসে। তাঁর ফিরে আসায় কংগ্রেসের লাভ হবে বলেই বিশ্বাস।
বুথস্তরে শক্তিবৃদ্ধিতে জোর কংগ্রেসের, জোর জনসংযোগে
কংগ্রেস নেতৃত্বের দাবি, তাঁরা এবার ভিত শক্ত করে নির্বাচনী লড়াইয়ে নামতে চলেছে। নেতাদের থেকে কর্মীদের বেশি গুরুত্ব দিয়ে ছোটো ছোটো সভা করে মানুষের কাছে পৌঁছতে চাইছে। জনসংযোগে বেশি জোর দিয়েছে। সেজন্য তাঁরা তৃণমূলস্তরে নেমে কাজ করছেন, বুথস্তরকে শক্তিশালী করার চেষ্টা চালাচ্ছেন। রাহুল গান্ধী থেকে শুরু করে নবনির্বাচিত কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে আস্থা রেখেছেন গুজরাত প্রদেশ কংগ্রেসের প্রতি।