কে দিল্লির অধীশ্বর? যা বলল সুপ্রিম কোর্ট তাতে লোকসভার আগে ধাক্কা মোদী-শিবিরে
তিনটি ক্ষেত্র ছাড়া উপ রাজ্যপালের কোনও এক্তিয়ার থাকবে না দিল্লির প্রশাসনে। দিল্লি শাসনের প্রকৃত ক্ষমতা থাকবে নির্বাচিত সরকারের হাতেই।
দিল্লির নির্বাচিত সরকার, নাকি উপরাজ্যপাল, দিল্লির প্রশাসনে কে আসল ক্ষমতার অধিকারী, তা নিয়েই চলছিল দ্বন্দ্ব। শেষ পর্যন্ত দেশের শীর্ষ আদালতের রায় গেল কেজরিওয়াল সরকারের দিকেই। তিনটি ক্ষেত্র ছাড়া উপ রাজ্যপালের কোনও এক্তিয়ার থাকবে না দিল্লির প্রশাসনে। পুলিশ, আইন-শৃঙ্খলা ও জমি- এই তিনটিই উপ-রাজ্যপালের অধীন। দিল্লি শাসনের প্রকৃত ক্ষমতা থাকবে নির্বাচিত সরকারের হাতেই।
এদিন ঐতিহাসিক রায় দিয়ে সুপ্রিম কোর্ট জানায়, উপরাজ্যপালকে সরকারের সাহায্য নিয়ে পরামর্শ মেনে কাজ করতে হবে। যদি কোনও ক্ষেত্রে সহমত না হতে পারেন রাজ্যপাল তবে রাষ্ট্রপতির কাছে যাবে ফাইলটি। কিন্তু উপ রাজ্যপাল বাধা সৃষ্টি করতে পারবেন না সরকারের নীতি রূপায়ণে। প্রত্যাশিতভাবেই এই রায়ে উজ্জীবিত আপ সরকার। এবং এই রায়ে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে ধাক্কা বলেই বর্ণনা করেন আপ নেতারা।
দিল্লি হাইকোর্ট উপ রাজ্যপালের কর্তৃত্বকেই প্রতিষ্ঠা দিয়েছিল কিন্তু এদিন সুপ্রিম কোর্টের প্রদান বিচারপতি দীপক মিশ্রের নেতৃত্বাধীন তিন বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ সেই রায়কে কার্যত খারিজ করে দেয়। দিল্লির নির্বাচিত সরকারের হাতেই মূল ক্ষমতা থাকবে বলে জানিয়ে দেন বিচারপতি মিশ্র।
সুপ্রিম কোর্ট এদিন ফলাও করে জানিয়ে দিয়েছে- দিল্লিকে রাজ্যের স্বীকৃতি দেওয়া সম্ভব নয়। প্রতিটি সাংবিধানিক সংস্থাকে সংবিধানের মূল নীতি মেনে চলতে হবে। দিল্লির উপ রাজ্যপাল যেমন যান্ত্রিকভাবে কাজ করতে পারেন না, তেমনই ক্যাবিনেটের সাহায্য ও পরামর্শ মেনে কাজ করত হবে। কেননা সংবিধানেই তা বলা আছে। সংবিধানের ২৩৯এ ধারা অনুসারে উপরাজ্যপাল ক্যাবিনেটের সাহায্য মেনে চলবে।
তেমনই যে কোনও সিদ্ধান্ত সরকার অবশ্যই জানাবে উপ রাজ্যপালকে। তবে তিনটি ক্ষেত্র ছাড়া অন্যান্য বিষয়ে উপ-রাজ্যপালের অনুমতির প্রয়োজন নেই। পুলিশ-আইনশৃঙ্খলা-ভূমি ছাড়া সমস্ত বিষয়ে আইন প্রণয়ন করতে পারবে দিল্লির সরকার। উপ রাজ্যপাল কোনও বাধার সৃষ্টি করতে পারবে না।
[আরও পড়ুন:সুপ্রিম কোর্টের রায়! কিছুটা স্বস্তি পেল দিল্লির কেজরিওয়াল সরকার]
উপ রাজ্যপাল যেখানে সহমত হতে পারবেন না, সেই ফাইলে সই না করে রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠাতে পারে। উপ রাজ্যপালের একক সিদ্ধান্ত নেওয়া ক্ষমতা নেই। নির্বাচিত প্রতিনিধিদেরই নীতি নির্ধারণের ক্ষমতা দিয়েছে সংবিধান। এই রায়ের ফলে দিল্লির আপ সরকারের উপর মোদীর সরকার আর সমস্ত বিষয়ে কর্তত্ব ফলাতে পারবে না।