তেরো জন ধনী মহিলাকে বিয়ে করে এখন শ্রীঘরে অন্ধ্রপ্রদেশের যুবক
তেরো জন ধনী মহিলাকে বিয়ে করে এখন শ্রীঘরে অন্ধ্রপ্রদেশের যুবক
প্রত্যেকেই একবারই বিয়ে করে সেটা আমাদের জানা কিন্তু অনেক সময় আমাদের চোখে পড়েছে এক ব্যক্তি দুটো কিংবা তিনটে বিয়ে করেছেন। কিন্তু এবার এক নতুন ঘটনার সম্মুখীন হল দেশবাসী। যা জেনে অবাক অনেকেই। জানা গেল চার বছরে ১৩ জন মহিলাকে বিয়ে করেছেন এক ব্যক্তি, এবার পুলিশের জলে ধরা পড়ল সে। ঘটনাটি ঘটেছে হায়দারাবাদের সাইরাবাদ এলাকায়। অভিযুক্তের নাম শিবশঙ্কর।
কোথায় থাকেন তিনি
কিভাবে তিনি এতগুলো বিয়ে করলেন? অন্ধ্রপ্রদেশের গুন্টুর জেলার বাসিন্দা তিনি। তার বয়স ৩৫ বছর। তার লক্ষ্য ছিল বড়লোক নারীদের প্রতি। কিন্তু কীভাবে তাদের স্ত্রী হিসাবে পেতেন। তিনি বিবাহের সাইটগুলো জাল বিছিয়ে রাখতেন। তিনি টার্গেট করতেন বিবাহবিচ্ছেদ মহিলা বা যারা বিবাহের সাইটে বিয়ের জন্য পাত্র খুজছেন তেমন নারীদের। তিনি একটার পর একটা বিয়ে করতেন। তারপর তাদের সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদ করতেন জাল কাগজ তৈরি করতেন। তার কাজই ছিল মহিলাদের ঠকানো।
ধনী মহিলাদের বিয়ে করতেন তিনি
তার নামে যে অভিযোগ উঠে তা থেকে জানা যায় তিনি ধনী মহিলাদের বিয়ে করতেন তারপর কোনও না কোনও অছিলায় তাদের সঙ্গে অশান্তি করতেন। তারপর তাদের বাধ্য করছেন বিবাব বিচ্ছেদ করতে। এমন ভাবে তিনি যাদের সঙ্গে বিচ্ছেদ করতেন তাদের থেকে তিনি নানান দামীদামী জিনিস ও অনেক টাকা নিয়ে চম্পট দিতেন। তারপরই তিনি আবার অন্য মহিলার সঙ্গে ঘর বাঁধতে শুরু করতেন।
কী জানা গেল নির্যাতিতার থেকে
যাদের সঙ্গে অভিযুক্ত প্রতারণা করেছেন তাদের মধ্যে একজন রামচন্দ্রপুরম থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ সূত্রে জানা যায় শিবশঙ্কর বাবু ওই মহিলার থেকে ২৫ টাকা ও ৭ লক্ষ টাকার গহনা নিয়ে নেন। অনেক চাওয়ার ওর কিছুতেই তিনি সেই গহনা তাঁকে ফেরত দিচ্ছেন না। তার অভিযোগের ভিত্তিতেই পুলিশ শিবশঙ্করবাবুর নামে এক প্রতারণার মামলা দায়ের করেন। ভারতীয় দণ্ডবিধির আইপিসি ধারা ৪২০ এর অধীনে এই মামলা দায়ের করা হয়েছে।
তিনি জানান
এর পর নির্যাতিতা জানান, ২০২১ সালে এক বিবাহের সাইট থেকে পরিচয় হয় অভিযুক্তের সঙ্গে তার। অভিযুক্ত তাঁকে বলেন, তার বাবা মা অনেকদিন আগেই মারা গেছেন। তিনি নামী এক কোম্পানিতে চাকরি করেন। মাসে ২ লক্ষ টাকা বেতন পান। তিনি পেশায় একজন সফ্টওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার। যদিও তিনি তাঁকে জানিয়েছিলেন তার আগের স্ত্রীর সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদ হয়ে যায়। তাই তিনি একটি উপযুক্ত জীবনসঙ্গিনী খুঁজছেন। তারপর নির্যাতিতার পরিবার অভিযুক্তের কথায় বিশ্বাস করে তার সঙ্গে বিয়ে দেন। তারপর অভিযুক্ত তাঁকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নিয়ে যাবে বলে মহিলার পরিবার থাকে ২৫ লক্ষ টাকা নেয়। কিন্তু অনেক দিন হয়ে গেলেও তিনি তার স্ত্রীকে নিয়ে বিদেশে যান না। তখন সন্দেহ দানা বাধে সকলের মনে। তখনই তার কাছ থেকে মহিলার পরিবার টাকা চাইতে শুরু করেন।
কিন্তু নানা অছিলায় অভিযুক্ত তাদেরকে এড়িয়ে চলতে শুরু করেন। তখনই তাঁরা পুলিশের কাছে অভিযোগ জানান। পুলিশ যখন ঘটনার বিষয় জিজ্ঞাসার জন্য অভিযুক্তকে থানায় ডেকে পান তখন তিনি জানতে পারেন তিনি আবার অন্য জায়গায় বিয়ে করেছেন। পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করতে গেলে অন্য এক মহিলা এসে তার জামিন করাণ এবং প্রতিশ্রুতি দেন সব টাকা ফেরত দিয়ে দেবেন।
তারপর অন্য এক নির্যাতিতা শিবশঙ্কর বাবুর সম্বন্ধে আবার খোঁজ শুরু করেন। তখন তিনি জানতে পারেন তিনি আবার অন্য জায়গায় বিয়ে করেছেন। তারপর তিনিও পুলিশের কাছে অভিযোগ জানান। তারপর পুলিশ অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেন এবং তাঁকে জিজ্ঞাসা করতে শুরু করেন কিন্তু তার ওপর ওঠা সমস্ত অভিযোগ তিনি অস্বীকার করেন।
পুলিশ অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছে
শুধু তাই নয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী হায়দরাবাদের এক মহিলার থেকে ৩৫ লক্ষ টাকা নেন বলে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে। পুলিশ বর্তমানে শিবশঙ্করবাবুকে গ্রেপ্তার করেছেন।