অবারিত জলবায়ু পরিবর্তন, ভারতের অর্থনীতিতে এর কী প্রভাব পড়বে, জানেন কী বলছে বিশ্বব্যাঙ্ক
বিশ্বব্যাঙ্কের এক গবেষণা বলছে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে ৬0 কোটি ভারতীয়ের জীবনযাত্রার মান পড়ে যাবে।
অবারিত জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে ভারতবর্ষের জিডিপি ২.৮ শতাংশে নেমে আসবে এবং ২০৫০ সালের মধ্যে বিদর্ভের মতো মধ্যভারতের 'হটস্পট' জেলাগুলির প্রায় অর্ধেক বাসিন্দাদের জীবনযাত্রার মান পড়ে যাবে। তাদের খরচের ক্ষমতা ১০ শতাংশ অবধি কমতে পারে। বিশ্বব্যাঙ্কের এক গবেষণায় এই তথ্য উঠে এসেছে।
বিশ্বউষ্ণায়নের কারণে ভারতের বিভিন্ন অংশে ক্রমবর্ধমান তাপমাত্রা এবং অনিয়মিত বৃষ্টিপাতের অর্থনীতিতে কী প্রভাব পড়বে তা নিয়ে প্রথমবার গবেষণা করল বিশ্বব্যাঙ্ক। ফলাফল কিন্তু বেশ নিরাশাজনক। দেখা যাচ্ছে উপকূলবর্তী বা পার্বত্য এলাকাগুলির থেকে বেশি বিপদে আছে অভ্যন্তরীন এলাকাগুলি।
সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়বে মধ্য ও উত্তর ভারতে। ছত্তিশগড়, মধ্যপ্রদেশের মতো জেলাগুলি জলবায়ু পরিবর্তনে অর্থনৈতিক দিক থেকে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। বিদর্ভের নাম এতদিন খবরের শিরোণামে এসেছে কৃষক আত্মহত্যার জন্য। জানা গিয়েছে জলবায়ু রপিবর্তন সংক্রান্ত দুর্ভোগও এই জেলাকেই সবচেয়ে বেশি সইতে হবে।
অর্থনীতিতে জলবায়ুর পরিবর্তনের কুপ্রভাবের উপর ভিত্তি করে ভারতের ১০টি স্থানকে বিশ্বব্যাঙ্ক 'হটস্পট' হিসেবে চিহ্নিত করেছে। অর্থাৎ সবচেয়ে বেশি অর্থনৈতিক ক্ষতি হবে এই ১০ জায়গাতেই। দেখা যাচ্ছে ১০টির মধ্যে ৭টি স্থানই বিদর্ভের। বিশ্বব্যাঙ্কের অনুমান জলবায়ুর পরিবর্তনে লাগাম দিতে না পারলে ২০৫০ সালের মধ্যে এই ১০ এলাকার বাসিন্দাদের জীবনযাত্রার মানের পতন হবে ১১ শতাংশেরও বেশি।
তবে এখানেই আশঙ্কার শেষ নয়। গবেষণাটি বলছে যেভাবে বিনা প্রতিরোধে ভারতের জলবায়ুর পরিবর্তন হয়ে চলেছে তাতে ২০৫০ সালের মধ্যেই ভারতের আরও অনেক এলাকাই 'হটস্পট'-এ পরিণত হবে। ফলে দেশের প্রায় ৬০ কোটি মানুষ বিপদে পড়বেন।
গবেষণা দলটির প্রধান মুথুকুমার মনি বলেন, তাপমাত্রার বৃদ্ধি একটি ধীর গতির বিপর্যয়। এনিয়ে বিশেষ হইচই হয় না। আবহাওয়ার চরম অবস্থাগুলির উপরই সবার নজর থাকে। ৫০-৬০ বছর ধরে ধীরে ধীরে যে পরিবর্তন ঘটে চলেছে সেগুলিকে সবাই এড়িয়ে যায়।
তাঁর দাবি, তাঁদের গবেষণা ও বিশ্লেষণ নির্ভুল। এর ভিত্তিতে তারা ভারতের হটস্পট ও সম্ভাব্য হটস্পটগুলির একটি মানচিত্রও তৈরি করেছে। মনি বলেন, 'আমাদের গবেষণা নীতি নির্ধারণকারীদের পথ দেখাবে। তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলিতে তারা বেশি করে বিনিয়োগ করতে পারবেন। জলবায়ু পরিবর্তনের মোকাবিলায় তাদের সম্পদের সর্বোতকৃষ্ট ব্যবহার হবে।'