অমিত শাহের নিয়ন্ত্রণে ক্ষুব্ধ নীতীশ কুমার! কোন পথে বিহারের রাজনীতি
অমিত শাহের নিয়ন্ত্রণ ক্ষুব্ধ নীতীশ কুমার! কোন পথে বিহারের রাজনীতি
নীতীশ কুমারের সঙ্গে বিজেপির ফাটল চওড়া হচ্ছে। বার বার নীতীশ কুমারের সঙ্গে বিজেপির দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে এসেছে। তবে বিজেপির সঙ্গে জেডিইউ-এর বড় ধরনের কোনও সমস্যা হয়নি, যার জেরে এই ফাটলের সৃষ্টি হয়েছে। বরং বলা যেতে পারে দিনের পর দিন একাধিক ঘটনাই বিহারে বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতির নেপথ্যে রয়েছে।
বিজেপির সঙ্গে জোট নিয়ে প্রথম থেকেই নীতীশ কুমার দ্বিধায় ছিলেন। সেই সময় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা তাঁকে আশ্বাস দিয়েছিলেন। কিন্তু তারপরে জোটের সহাবস্থান বজায় রাখতে বিজেপির তরফে সেভাবে কোনও উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। বরং অমিত শাহের সব কিছুর নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা নীতীশ কুমারের বিরক্তির কারণ হয়ে উঠেছিল বলে মনে করা হচ্ছে।
বিজেপির ব্যবহারে বীতশ্রদ্ধ নীতীশ কুমার
বিজেপির একের পর এক ব্যবহারে নীতীশ কুমার অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিলেন। নির্বাচনের পর নীতীশ কুমারকে মুখ্যমন্ত্রী করা হলেও অমিত শাহ বিহারের মন্ত্রিসভা নিয়ন্ত্রণে রাখতে চেয়েছিলেন। বিজেপিতে অমিত শাহের ঘনিষ্টরা বিহারের মন্ত্রীত্ব পান। সেই সময় থেকেই নীতীশ কুমারে অস্বস্তি শুরু হয়। তারমধ্যে বিহারের স্পিকার বিজয় কুমার সিনহার সঙ্গে নীতীশ কুমারের বিরোধ। নীতীশ কুমারকে ক্রমাগত বিজয় কুমার সিনহা অপমান করেন বলে অভিযোগ। বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে বিজয় কুমার সিনহাকে সরিয়ে দেওয়ার আবেদন করেন নীতীশ কুমার। কিন্তু বিজেপির কেন্দ্র নেতৃত্ব তা কর্ণপাত করেননি। বিধানসভার একাধিক অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে নীতীশ কুমারের নাম থাকত না। বার বার বিজেপির মন্ত্রীদের থেকে অপমানিত হতে হয়েছিল নীতীশ কুমারকে যা বর্তমান পরিস্থিতি সৃষ্টির জন্য অনেকটাই দায়ী বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।
আরসিপি সিংয়ের সঙ্গে বিজেপির সম্পর্ক
নীতীশ ঘনিষ্ট হিসেবে পরিচিত ছিলেন রামচন্দ্র প্রসাদ সিং। তিনি রাজ্যসভার সাংসদ ছিলেন। বিজেপি নীতীশ কুমারের সঙ্গে পরামর্শ না করে আরসিপি সিং কে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী করেছিল। এই ঘটনায় নীতীশ কুমার যথেষ্ঠ অপমানিত হয়েছিলেন বলে জেডিইউ সূত্রের খবর। আরসিপি সিং শনিবার জেডিইউ দল ছাড়েন। বক্তব্যে তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হওয়ার জন্য তাঁকে হিংসা করছেন। নীতীশ কুমার সাত জন্মেও দেশের প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন না। বিজেপির সঙ্গে আরসিপি সিংয়ের সরাসরি যোগ আগেই নীতীশ কুমার পেয়েছিলেন। নীতীশ কুমারকে সরাসরি তিনি অপমান করেন। একাধিক ঘটনা প্রমাণিত হয়ে যায়, নীতীশ কুমারকে মুখ্যমন্ত্রী করে বিজেপি বিহার শাসন করতে চেয়েছিল। যা সম্পূর্ণ অমিত শাহ নিয়ন্ত্রণে রাখতে চেয়েছিলেন। সেই কারণেই বিজেপি জোট থেকে সরে আসতে চাইছেন নীতীশ কুমার বলে মনে করা হচ্ছে।
জেডিইউ বিধায়দের বৈঠক
মঙ্গলবার জেডিইউয়ের ৪৫ জন বিধায়ক মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের বাসভবনে বৈঠকে বসবেন বলে জানা গিয়েছে। আরজেডির তরফে আবার তাদের সমস্ত বিধায়ককে সোমবার রাতের মধ্যে পাটনায় ফেরার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যাতে মঙ্গলবার তেজস্বী যাদবের ডাকা বৈঠকে আরজেডি বিধায়কের সকলে উপস্থিত থাকতে পারেন। জেডিইউ ও আরজেডির বিধায়করা সম্প্রতি সৌহার্দ্যের একের পর এক উদাহরণ তৈরি করছিলেন। দুই পক্ষই একে অপরকে আক্রমণ থেকে বিরত ছিলেন। বরং জেডিইউ বা আরজেডি কেন্দ্রের একাধিক সিদ্ধান্তের বার বার বিরোধিতা করেছিলেন। দেশের মুদ্রাস্ফীতির বিরোধিতা করে বিরোধী দলনেতা তেজস্বী যাদব রবিবার একটি প্রচার অভিযান করেন। এই প্রসঙ্গে নীতীশ কুমার নরম মনোভাব পোশন করেন। তিনি বলেন, তেজস্বী যাদবের এই ধরনের প্রচারের অধিকার রয়েছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, বিজেপির থেকে দুরত্ব বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আরজেডির সঙ্গে নীতীশ কুমারে দুরত্ব কমতে শুরু করেছিল।
বিদায় বেলায় কাঁদলেন ভেঙ্কাইয়া নাইডু, বিশেষ সম্মান মোদীর