রোজ রাতে অপেক্ষায় থাকেন শতাধিক মানুষ, তাঁরও আসায় বিরাম নেই, আজকের সমাজে তিনি যেন দৈত্যকুলে প্রহ্লাদ
দলবল নিয়ে হায়দ্রাবাদের এক ব্যক্তি রোজ রাতে দরিদ্রদের খাওয়ার দেন।
প্রতি রাতে হায়দরাবাদের দাবীরপুর ব্রিজের উপর তাঁর ও তাঁর দলের সদস্যদের জন্য দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করেন প্রায় শতাধিক হতদরিদ্র মানুষ। তিনিও তাদের হতাশ করেন না। ঝড় জল বৃষ্টি যাই হয়ে যাক মোটর বাইক নিয়ে হায়দার মুসভি ও তাঁর দলের সদস্যরা আসবেনই। তাঁদের সঙ্গে থাকে খাওয়ারের প্যাকেট। ওই দুঃখী মানুষগুলোর মধ্যে সেসব প্যাকেট ভাগ করে দেন তাঁরা।
শুরুটা হয়েছিল ২০১৫ সালে। ওই অঞ্চল দিয়ে যাওয়ার সময় ফুটপাথে পড়ে থাকা মানুষগুলো নজরে এসেছিল হায়দার মুসভির। সারাদিনে একবেলাও পেট পুড়ে খাওয়ার জোটে না। তাঁর সীমিত সাধ্য দিয়েই তাদের সাহায্য় করবেন মনস্থ করেন। সেই থেকে মাসে ১০-১২ দিন দাবীরপুর ব্রিজে এসে খাওয়া দিয়ে যেতেন তিনি।
আস্তে আস্তে তা মুসভির রোজকার ব্রত হয়ে দাঁড়ায়। তাঁকে দেখে এগিয়ে আসেন তাঁর পরিচিত কিছু মানুষও। তারাই তাঁর দলবল। রোজ তাঁরা বাইকে করে ১০০-রও বেশি খাওয়ারের প্যাকেট এনে বিতরণ করেন দরিদ্রদের মধ্যে। মুসভি জানান, 'কেউ কেউ এখানেই খেয়ে নেন, কেউ আবার অন্যত্র নিয়ে যান। খাওয়ার পাওয়ার খবর পেয়ে হায়দরাবাদের বিভিন্ন এলাকা থেকে গরীব মানুষ আসেন এখানে।'
কাজটি যতই মহান হোক, মানুষকে বাস্তববাদী হতেই হয়। প্রতিদিন বেড়ে চলেছে মুসভিদের অপেক্ষায় থাকা অভাবী মানুষের সংখ্যা। এর খরচ খরচা কম নয়। প্রত্যেকটি প্যাকেট পিছু প্রায় ৪০ টাকা করে পড়ে। প্রত্যেক মাসে প্রায় ১.২ লক্ষ টাকা লাগে। মুসভি জানান, বাল কাজে টাকার অভাব হয় না। তাদের একটি যৌথ তহবিল আছে। যদি কখনও সেখানে টাকা কম পড়ে, তাহলে দলের সদস্যরাই কেউ এগিয়ে এসে সেই ফাঁক পূরণ করে দেন।
আজকের এই তীব্র ভেদাভেদ ও হানাহানির সময়ে মুসভির মতো মানুষরাই মানবতার মূর্ত প্রতীক। তিনি বলেন, 'সাধ্য থাকলে পৃথিবীর কাউকে খালিপেটা থাকতে দিতাম না'।